
গোয়ার বাসিন্দা পল ফার্নান্ডেজ বলেন, “সোনা বন্ধক দিয়ে ঋণ নিলে আমাকে সুদ হিসাবে বিপুল অঙ্কের টাকা দিতে হবে। সেই তুলনায় সোনা বিক্রি করা ভাল। সেক্ষেত্রে ভবিষ্যতে টাকা শোধ করতে হয় না।”
অতিমহামারীর ফলে লক্ষ লক্ষ ভারতীয় দরিদ্র হয়ে পড়েছেন। অনেকে দেউলিয়া হয়ে গিয়েছেন। তাঁরা বাধ্য হয়ে বেচে দিচ্ছেন সোনা। আমাদের দেশে গ্রামাঞ্চলের মানুষই সোনা বেশি কেনেন। করোনার দ্বিতীয় ওয়েভ গ্রামীণ অর্থনীতির ব্যাপক ক্ষতি করেছে। গ্রামে ব্যাঙ্কও বেশি নেই। ফলে অনেকে বাধ্য হয়ে সোনা বেচছেন।
লন্ডনের মেটালস ফোকাস লিমিটেডের কনসালট্যান্ট চিরাগ শেঠ বলেন, করোনার দ্বিতীয় ওয়েভে ভারতে অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে বেশি। ২০২০ সালে অনেকে সোনা বন্ধক দিয়ে ঋণ নিয়েছেন। কিন্তু এবছর তাঁরা সোনা বেচে দিচ্ছেন।
দক্ষিণ ভারতের মানুষ দেশের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় সোনা কেনেন বেশি পরিমাণে। কোচির সিজিআর মেটালয়েস প্রাইভেট লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর জেমস জোস জানিয়েছেন, এবছর স্বর্ণকারদের কাছে ২৫ শতাংশ বেশি সোনা বিক্রি করেছেন সাধারণ মানুষ। তাঁর কথায়, “লকডাউনের পরে সোনার দোকানে ভালই ভিড় দেখা গিয়েছে। একদল সোনা কিনেছেন। আর একদল সোনা বিক্রি করতে এসেছেন।”
ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিল জানিয়েছে, গত কয়েক বছর ধরেই ভারতীয়রা সোনা কম কিনছেন। তা থেকে বোঝা যায়, দেশের অর্থনীতি দুর্বল হয়ে পড়ছে। তার ওপরে করোনা অতিমহামারী শুরু হওয়ায় সোনার বিক্রি আরও কমেছে। ২০২০ সালে সোনা বিক্রি হয়েছে দু’দশকের মধ্যে সবচেয়ে কম।
চিরাগ শেঠ অবশ্য মনে করেন, চলতি বছরে ২০২০ সালের তুলনায় সোনার চাহিদা বাড়তে পারে ৪০ শতাংশ। কারণ সোনার দাম কমেছে। তাছাড়া বিয়ের জন্যও অনেকে সোনা কিনবেন।
পরে অবশ্য চিরাগ শেঠ সতর্ক করে বলেছেন, এর পরে যদি করোনার তৃতীয় ওয়েভ আসে, তাহলে কী হবে কিছুই বলা যায় না।