Latest News

ভারতের করোনা চিনের থেকেও মারাত্মক, মানচিত্র বিতর্কের মধ্যে নয়া আক্রমণ নেপালের

দ্য ওয়াল ব্যুরো: নেপালের নয়া মানচিত্র নিয়ে দুই দেশের তর্জা তুঙ্গে। ভারতের তিন এলাকাকে নিজেদের ভূখণ্ডের অন্তর্ভুক্ত দেখিয়ে নয়া মানচিত্র সামনে আনতে চলেছে নেপাল। নেপাল সরকারের মন্ত্রিসভার বৈঠকে সেই প্রস্তাব অনুমোদিতও হয়েছে। দুই দেশের সীমান্ত নিয়ে এই টানাপড়েনের মাঝেই করোনা সংক্রমণের প্রসঙ্গ তুলে ভারতের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি।

মঙ্গলবার সংসদে নিজের বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী ওলি বললেন, ভারতের করোনাভাইরাস চিন, ইতালির থেকেও বেশি মারাত্মক। তাঁর দাবি, নেপালে ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়ানোর জন্যও দায়ী ভারতই।

প্রধানমন্ত্রীর কথায়, “ভারত থেকে বেআইনি পথে নেপালে ঢুকছে লোকজন। তারাই সংক্রমণ বয়ে আনছে। দেশের কিছু স্থানীয় লোকজন ও পার্টি নেতারা ভারত থেকে ওইসব লোকজনকে কোনও রকম টেস্ট না করিয়েই ঢুকতে দিচ্ছে।” করোনা প্রসঙ্গে বক্তব্যের সীমান্তের বিষয়ও উঠে আসে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “কালাপানি, লিপুলেখ ও লিম্পিয়াধুরা এই তিন এলাকাকে ভারত নিজেদের বলে দাবি করছে। কিন্তু আমরা ফিরিয়ে আনবই।“

চিন-ভারত-নেপাল— এই তিন দেশের সীমান্তের কিছু এলাকা নিয়ে এমনিতেই কাঠমান্ডু যথেষ্ট স্পর্শকাতর।  লিপুলেখ ও ঝিংসাং চুলি— এই দু’টি এলাকায় নেপাল চিন এবং ভারতের সীমান্ত মিলেছে। এর মধ্যে পশ্চিম নেপালের লিপুলেখ নিয়ে নেপালের অস্বস্তি রয়েছে। সেখানকার কালাপানি এলাকাকে ভারত-নেপাল দু’দেশই নিজেদের বলে দাবি করে। নেপালের দাবি, এই এলাকা তাদের দেশের ধারচুলা জেলার মধ্যে পড়ে, অন্যদিকে ভারতের পাল্টা দাবি কালাপানি উত্তরাখণ্ডের পিথোরগড় জেলার অন্তর্গত।

গতকালই নেপাল সরকারের মন্ত্রিসভার বৈঠকে স্থির হয়েছে দেশের সাতটি প্রদেশ, ৭৭টি জেলা ও ৭৫৩টি স্থানীয় প্রশাসনিক অঞ্চল নিয়ে নেপালের নতুন মানচিত্র প্রকাশ করা হবে। তাৎপর্যপূর্ণভাবে এই নয়া মানচিত্রে রাখা হবে বিতর্কিত ওই তিন এলাকাকেও।

নেপালে চিনের প্রভাব বৃদ্ধি নিয়ে এমনিতেই উদ্বেগে সাউথ ব্লক। চিন স্বাভাবিক ভাবেই চেষ্টা করে গেছে ডোকলাম সঙ্কট নিয়ে দায় ভারতের কাঁধে চাপিয়ে সে দেশে ভারত-বিরোধী মনোভাবে উস্কানি দেওয়ার। অনেকেই মনে করছেন, কার্যত এর জেরেই দুই দেশের সীমান্ত সমস্যা আরও বড় আকার নিচ্ছে। কিছুদিন আগেই কৈলাস-মানস সরোবর সংযোগকারী রাস্তার উদ্বোধন নিয়ে দুই দেশের মধ্যে ঝামেলা শুরু হয়। নেপাল দাবি করে, তাওয়াঘাট থেকে চিন সীমান্তের লিপুলেখ পাস পর্যন্ত ৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়ক তাদের সীমান্তের মধ্যে পড়ে। ওই এলাকায় তীর্থযাত্রী ও ব্যবসায়ীদের জন্য নয়া রাস্তার উদ্বোধন করে ভারত দুই দেশের সীমান্ত-চুক্তি লঙ্ঘন করেছে। এর জবাবে ভারতও পাল্টা জানায়, ওই সড়ক ভারতের সীমান্তের মধ্যে দিয়েই গেছে।

ভারত থেকে তিব্বতের কৈলাস-মানস সরোবর যাওয়ার তিনটি রাস্তা আছে, যার মধ্যে একটি সিকিম হয়ে, অন্যটি উত্তরাখণ্ডের মধ্যে দিয়ে আর একটি কাঠমান্ডু হয়ে। এই তিনটি রুটের মধ্যে সহজগম্য রাস্তাই হল উত্তরাখণ্ডের পিথোরগড়ের মধ্যে দিয়ে যে রাস্তা তাওয়াঘাট হয়ে লিপুলেখ পর্যন্ত গেছে। এই রাস্তাই সংস্কার করে যান চলাচলের উপযুক্ত করে গড়ে তোলা হচ্ছে। এখানেই আপত্তি নেপালের।

You might also like