
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ২৯ জুলাই ভারতের মাটি ছুঁয়েছে। হরিয়ানার আম্বালা বায়ুসেনা ঘাঁটির ১৭ নম্বর গোল্ডেন অ্যারো স্কোয়াড্রনে এতদিন ঠাঁই ছিল পাঁচ রাফাল ফাইটার জেটের। এবার সময় আসছে লাদাখ পাড়ি দেওয়ার। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় চিনের লাল ফৌজের সঙ্গে সীমান্ত সংঘাত থামেনি। বরং নতুন করে আকসাই চিন ও তিব্বতে চিনা সেনার তৎপরতা লক্ষ্য করা গেছে। দৌলত বেগ ওল্ডিতে তাই সেনা ও অস্ত্রশস্ত্র বাড়াচ্ছে ভারতীয় বাহিনী। এই সময় উঁচু পাহাড়ি এলাকায় দিনে-রাতে কড়া নজরদারির জন্য প্রয়োজন রাফালের মতো মাল্টিরোল কমব্যাট এয়ারক্রাফ্টের। নজরদারিও হবে আবার আকাশযুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হলে চিনের যুদ্ধবিমানকে মুখোমুখি টক্কর দিতে পারবে রাফাল।
হিমাচল প্রদেশের পাহাড়ি এলাকায় প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে পাঁচ রাফাল যুদ্ধবিমান, জানিয়েছে ভারতীয় বায়ুসেনা। রাতের বেলা পাহাড়ি এলাকায় নজরদারি চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন পাইলটরা। প্রয়োজন হলে কীভাবে মিসাইল ছুড়তে হবে শত্রু ঘাঁটিতে তার প্রশিক্ষণও চলছে। বায়ুসেনা সূত্র জানাচ্ছে, রাফালের বিয়ন্ড ভিসুয়াল রেঞ্জ এয়ার-টু-এয়ার মেটিওর মিসাইল ও এয়ার-টু-গ্রাউন্ড স্কাল্প মিসাইলের পরীক্ষা করা হচ্ছে। ১৫৯৭ কিলোমিটার প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা জুড়ে রাতের বেলা কড়া পাহাড়া দেবে রাফাল। মিসাইল-যুক্ত হয়েই টহলদারি চালাবে যুদ্ধবিমান।
প্যাঙ্গং লেকের উত্তরে ফিঙ্গার পয়েন্ট থেকে সেনা সরাতে নারাজ চিন। দুই দেশের সেনা কম্যান্ডার পর্যায়ের বৈঠকের পরেও সমাধানসূত্র মেলেনি। এদিকে উপগ্রহ চিত্রে ধরা পড়েছে আকসাই চিনে সামরিক পরিকাঠামো, হেলিপ্যাড বানাচ্ছে চিনের সেনা। অন্যদিকে, তিব্বতের কাছে এয়ারবেসে চিনের যুদ্ধবিমানের ওঠানামা লক্ষ্য করা গেছে। ভারতীয় বায়ুসেনা জানাচ্ছে, চিনের তৈরি পঞ্চম প্রজন্মের স্টিলথ এয়ারক্রাফ্ট চেংড়ু জে-২০-র মুখোমুখি মোকাবিলা করার মতো শক্তি আছে রাফালের। কোনও কারণে চিনের ফাইটার জেট মুখোমুখি চলে এলে মিসাইল ছুড়ে কাবু করতে পারবে রাফাল। তাই পূর্ব লাদাখে মিরাজ, সুখোইয়ের মতো রাফাল ফাইটার জেটের প্রয়োজন পড়েছে বায়ুসেনার।
আরও পড়ুন: রাতে চিনা সেনার গতিবিধি নজরে রাখছে, দৌলত বেগ ওল্ডিতে চিনুক কপ্টার নামিয়েছে ভারতীয় বায়ুসেনা
ডবল ইঞ্জিন মল্টিরোল কমব্যাট ফাইটার এয়ারক্রাফ্ট রাফাল আকাশ থেকে ভূমিতে ও সমুদ্রেও নির্ভুল নিশানা লাগাতে পারে। অনেক উঁচু থেকে হামলা চালানো, যুদ্ধজাহাজ ধ্বংস করা, মিসাইল নিক্ষেপ এমনকি পরমাণু হামলা চালানোর ক্ষমতাও রয়েছে রাফালের। এই যুদ্ধবিমানের শক্তি বাড়িয়েছে মেটিওর ও স্কাল্প ক্ষেপণাস্ত্র। বায়ুসেনা জানাচ্ছে, মেটিওর হল বিয়ন্ড ভিসুয়াল রেঞ্জ (বিভিআর) এয়ার-টু-এয়ার মিসাইল। ওজন ১৯০ কিলোগ্রাম। প্রায় ১৫০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতেও নিখুঁত টার্গেট করতে পারে।
‘স্কাল্প’ হল লো-অবজার্ভর ক্রুজ মিসাইল। দৈর্ঘ্যে ৫.১ মিটার এবং ওজন প্রায় ১৩০০ কিলোগ্রাম। ৬০০ কিলোমিটার পাল্লা অবধি লক্ষ্যে টার্গেট করতে পারে এই মিসাইল। আকাশ থেকে ভূমিতে ছোড়া যায় এই মিসাইল। রাফালে রয়েছে আরবিই২ অ্যাকটিভ ইলেকট্রনিক্যালি স্ক্যানড রাডার। যে কোনও পরিস্থিতিতে ও আবহাওয়ার অবস্থায় শত্রুপক্ষের এয়ারক্রাফ্টের খোঁজ দিতে পারে। একসঙ্গে অনেকগুলো টার্গেটে নজর রাখতে পারে এই রাডার। তাছাড়াও রাফালে রয়েছে ‘ফ্রন্ট সেক্টর অপট্রনিক্স’ (FSO) সিস্টেম। স্পেকট্রা-ইনটিগ্রেটেড ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ার স্যুট যা বহু দূর অবধি লক্ষ্য টার্গেট করতে পারে। যে কোনও ইনফ্রারেড, ইলেকট্রোম্যাগনেটিক বা লেসার গাইডেড মিসাইলের অবস্থানও বুঝতে পারে।