Latest News

পূর্ব লাদাখে অতিরিক্ত ৩০ হাজার সেনা পাঠাচ্ছে ভারত, শীতের আগে বড় পদক্ষেপ

দ্য ওয়াল ব্যুরো: সামরিক ও কূটনৈতিক স্তরে আলোচনার শর্ত মেনে পূর্ব লাদাখের তিন এলাকা থেকে কিছুটা পিছু হটেছে চিনের ফৌজ। কিন্তু প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা তথা এলএসির আরও কিছু অংশ নিয়ে এখনও টানাপড়েন চলছে। সেনা সূত্রেই খবর মিলেছে, প্যাঙ্গং লেকের উত্তরে ফিঙ্গার এলাকাগুলিতে এখনও ঘাঁটি গেড়ে রয়েছে লাল ফৌজ। শীতের সময় লাদাখের পাহাড়ি এলাকা আরও দুর্গম হয়ে ওঠে। যে কোনও পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে তাই পুরোপুরি প্রস্তুত থাকছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। সূত্রের খবর, শীতের আগেই অতিরিক্ত ৩০ হাজার বাহিনী মোতায়েন করা হবে লাদাখে।

অক্টোবর থেকেই অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েনের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাবে। অক্টোবর থেকে টানা ৬ মাস পূর্ব লাদাখের গালওয়ান উপত্যকা, দেপসাং সমতলভূমি, গোগরা হটস্প্রিং ও প্যাঙ্গং রেঞ্জে অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন থাকবে। সেনা সূত্রে জানা গিয়েছে, এই অতিরিক্ত বাহিনীর জন্য রেশন, বিশেষ পোশাক ও অস্ত্রসস্ত্রের প্রস্তুতি হয়ে গেছে। খাবার ও অস্ত্র বয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রায় ৬ হাজার ট্রাক পাঠানো হবে। ১৮০ দিন অর্থাৎ ছ’মাসের জন্য ২০ হাজার টনেরও বেশি রেশন পাঠানো হবে লাদাখে, কেরোসিন তেল পাঠানো হবে প্রায় ১৫ হাজার কিলোলিটার।

সেনার এক শীর্ষ আধিকারিক জানিয়েছেন, শীতের সময় বরফে ঢেকে যায় লাদাখের ফিঙ্গার এলাকাগুলো। তুষারপাত শুরু হয়, তাপমাত্রার পারদ নেমে যায় হিমাঙ্কের ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস নীচে। ওই সময়ের জন্য তাই সেনাদের বিশেষ পোশাক পাঠানো হচ্ছে। অতিরিক্ত ছাউনি পাঠানোরও ব্যবস্থা হয়েছে।

৩০ জুন লাদাখের চুসুল সীমান্তে কোর কমান্ড্যার স্তরে বৈঠকের পরে মুখোমুখি অবস্থান থেকে সেনা পিছনো (ডিসএনগেজমেন্ট) শুরু করে দুই দেশই। পূর্ব লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর তিন এলাকা থেকে সেনাবাহিনী সরানোর কথা ছিল চিনের। তার মধ্যে গালওয়ান উপত্যকা, গোগরা হট স্প্রিং ও প্যাঙ্গক সো থেকে সেনাবাহিনী কয়েক কদম পিছিয়েছে এমনটা ধরা পড়েছিল সাম্প্রতিক উপগ্রহ চিত্রে।  এর পরে ৫ জুলাই জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল ও চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই-র মধ্যে বৈঠকের পরে স্থির হয় দুই দেশই বাহিনী পিছোবে এবং মাঝে নিরপেক্ষ অঞ্চল বা বাফার জ়োন তৈরি হবে। এরপরে দেখা যায় ১৫ জুন যেখানে চিন ও ভারতীয় বাহিনীর সংঘর্ষ হয়েছিল সেই পেট্রোলিং পয়েন্ট ১৪ থেকে অন্তত দেড় কিলোমিটার পিছিয়েছে চিনের সেনা। অন্যদিকে, গোগরা হট স্প্রিংয়ের ১৫ নম্বর পেট্রোলিং পয়েন্ট, দেপসাং থেকেও সেনা সরানোর খবর মেলে। তবে ভারতীয় সেনা জানায়, কয়েকটা তাঁবু এবং বাহিনী কিছুটা পিছিয়েছে মাত্র। চিনের সেনার সামরিক নির্মাণ ও বেশ কিছু ছাউনি এলএসি-র ভারতীয় নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকাতেই রয়ে গেছে। ভারতীয় বাহিনীর সঙ্গে সংঘাতের পরেই গালওয়ান নদীর উপরে কালভার্ট বানিয়েছিল চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মি। ট্রাক, বুলডোজার, সাঁজোয়া গাড়ি যাতায়াতের জন্যই ওই অস্থায়ী নির্মাণ করে চিনের বাহিনী। সেই নির্মাণ এখনও রয়েছে।

প্যাঙ্গং লেকের ফিঙ্গার পয়েন্টগুলোও দখলে রেখেছে চিনের বাহিনী।  প্যাঙ্গং সো রেঞ্জের উত্তরে ফিঙ্গার পয়েন্ট ৪ ও ফিঙ্গার পয়েন্ট ৫ এর মাঝামাঝি এলাকা থেকে চিনের সেনা কিছুটা পিছিয়েছে ঠিক, তবে এলাকা পুরোপুরি ফাঁকা হয়নি।  ফিঙ্গার পয়েন্ট ৪ থেকে ফিঙ্গার পয়েন্ট ৮ অবধি এলাকা এখনও চিনের সেনার দখলে রয়েছে। ফলে ওই এলাকায় টহল দিতে পারছে না ভারতীয় বাহিনী। চিনের সেনা যে ফের ফিরে আসতে পারে এমন সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছে না ভারতীয় সেনাবাহিনী। তাই সবদিক দিকেই নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে মজবুত রাখা হচ্ছে।

You might also like