
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ক্যানসারের মতো ক্রনিক রোগ সুনামির (tsunami of cancer) মতো আছড়ে পড়তে চলেছে এ দেশে। এমনই সতর্কবার্তা দিলেন, আমেরিকার ওহায়ো শহরের ক্লেভল্যান্ড ক্লিনিকের হেমাটোলজি ও মেডিক্যাল অঙ্কোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান, ডক্টর জেম অ্যাব্রাহাম (US oncologist)। তিনি জানিয়েছেন, বিশ্বায়ন, অর্থনৈতিক বৃদ্ধি, লাইফস্টাইলের বদলই এর মূল কারণ হতে চলেছে। এই মুহূর্তে এ দেশের জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। জানিয়েছেন, প্রযুক্তি ও চিকিৎসাবিজ্ঞানের সাহায্যে এই বিপদ রুখতে হবে।
ডক্টর জেম অ্যাব্রাহাম জানিয়েছেন, ক্যানসারের ডায়াগনসিস, চিকিৎসা, এর পিছনে প্রয়োজনীয় নানা রকম প্রযুক্তি, আর্টিফিসিয়াল ইনটেলিজেন্স, বায়প্সি টেস্ট নিয়ে আরও বেশি গবেষণা– এসবই পারে এই শতাব্দীর ক্যানসার কেয়ারকে সঠিক দিশা দেখাতে। এছাড়াও আগামী কয়েক বছরে জরুরি হয়ে উঠবে জেনোমিক প্রোফাইলিং, এভল্যুশন অফ জিন এডিটিং টেকনোলজি, ইমিউনোথেরাপি ইত্যাদি।
ডক্টর আব্রাহাম বলেন, ‘রোগীর সঙ্গে চিকিৎসকদের দূরত্ব কমানোও জরুরি। এ জন্য আরও পোক্ত করতে হবে ডিজিটাল টেকনোলজি, ইনফরমেশন টেকনোলজি, টেলিহেল্থ। ভবিষ্যতে এসবের মাধ্যমেই দেশের নানা প্রান্তে, গ্রামে গ্রামে পৌঁছে দিতে হবে চিকিৎসা পরিষেবা। কারণ সেসব জায়গাতেই দেশের জনসংখ্যার বড় অংশের বাস। এখন ক্যানসার চিকিৎসা যতই উন্নত হোক না কেন, এই এত লক্ষ লক্ষ মানুষের কাছে সেই চিকিৎসা ব্যবস্থা কী করে আরও সহজ ও সুলভ হয়ে উঠতে পারে, সেটাই সরকারের বড় চ্যালেঞ্জ।’
‘গ্লোবোক্যান’-এর সমীক্ষা বলছে, ২০৪০ সালে এ দেশে ক্যানসার আক্রান্তের সংখ্যা হবে ২ কোটি ৮৪ লক্ষ, যা ২০২০-র তুলনায় ৪৭ শতাংশ বেশি। হুহু করে বাড়ছে মহিলাদের স্তন ক্যানসার। এতদিন ক্যানসারে মৃত্যুর কারণ হিসেবে যেটি সবচেয়ে বেশি দায়ী ছিল, সেই ফুসফুসের ক্যানসারকেও ছাপিয়ে গেছে এই স্তন ক্যানসার।
ক্যানসারের এই বাড়বাড়ন্তের সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে ক্যানসারের চিকিৎসা নিয়ে বহুমুখী গবেষণাও। ইতিমধ্যেই এমআরএনএ ভ্যাকসিনের ট্রায়াল চলছে। রেজাল্ট বেশ ভাল। তিনি বলেন, ‘জেনোম টেস্টিং নিয়েও বিপুল কাজ হতে চলেছে। ব্লাড প্রেশার, কোলেস্টেরল মনিটর করে কীভাবে ক্যানসারের ঝুঁকি আঁচ করা যায়, তাই নিয়েও চলছে গবেষণা। কারণ যত দ্রুত, আগাম চিহ্নিত করা যাবে ক্যানসারের সংক্রমণ, তার চিকিৎসা তত সহজ হয়। তা যদি না হয়, রোগ ধরতে যদি দেরি হয়, তাহলে চিকিৎসা খুবই আক্রমণাত্মক করতে হয়।’
এছাড়াও ইমিউনোথেরাপির কথা উল্লেখ করেছেন ডক্টর অ্যাব্রাহাম। কেমোথেরাপির সঙ্গে এই নতুন থেরাপি চালালে বহু ক্ষেত্রেই চোখে পড়ার মতো উল্লেখযোগ্য রেজাল্ট মিলছে ক্যানসারের চিকিৎসায়। পুরোপুরি নষ্ট হচ্ছে ক্যানসার কোষ। বিশ্বের বহু দেশেই সফল চিকিৎসা চলছে এই পদ্ধতিতে।
তবে চিকিৎসা ও গবেষণা যতই উন্নত হোক না কেন, জীবনযাপন নিয়ন্ত্রণের কোনও বিকল্প নেই বলেই মনে করেন ডক্টর অ্যাব্রাহাম। তিনি বলেন, ‘ক্যানসার চিকিৎসায় প্রযুক্তি যতই এগোক না কেন, আমাদের প্রিভেনশনের কথা মাথায় রাখতেই হবে। এখনও তামাক, মদ, খারাপ খাদ্যাভ্যাস ও নানাবিধ সংক্রমণের কারণে নানারকম ক্যানসার হয়। তামাক এবং মদ বন্ধ করা নিয়ে দেশের সরকারকে সচেতন হতে হবে।’
‘কুস্তিতে মেয়েরা সুরক্ষিত নয়, ভোগ করেন কোচেরাই’, বিস্ফোরক ভিনেশরা ধর্নায় বসলেন যন্তরমন্তরে