
দ্য ওয়াল ব্যুরো: উহান– চিনের এই শহরের (Wuhan China) নাম শুনলেই এখনও আঁতকে ওঠেন বিশ্বের বহু মানুষ। গত প্রায় তিন বছর ধরে চলা কোভিড মহামারীর আঁতুড়ঘর এই উহানই। এখান থেকেই প্রথম ছড়িয়েছিল নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। সেই উহানেই সরকার-বিরোধী বিক্ষোভে (Protest On Streets) নেমেছেন লাখে লাখে মানুষ। দাবি, নতুন করে করোনার বিধিনিষেধ চালু করা যাবে না আর।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যাচ্ছে, সরকার বিরোধী এই আন্দোলনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে ইতিমধ্যেই নিহত হয়েছেন ১০ জন বিক্ষোভকারী! কিন্তু ঠিক কেন ঘনিয়েছে এমন তীব্র প্রতিবাদ?
)
তথ্য বলছে, গত এক সপ্তাহ ধরে চিনে ফের হু হু করে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। একটানা পাঁচদিন ধরে প্রতিদিন রেকর্ড সংখ্যক রোগী করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছেন বলে খবর মিলেছে। এই পরিস্থিতিতে একাধিক শহরে নতুন করে কোভিড বিধিনিষেধ এবং আংশিক লকডাউনের পথে হাঁটতে চলেছে সরকার। উহানেও তেমনটাই হচ্ছে। এতেই খেপেছেন সাধারণ মানুষ। লকডাউনের বিভীষিকায় ফিরতে চান না কেউ। উহান-সহ একাধিক শহরে পথে নেমে, স্লোগান তুলে সে কথাই জানাচ্ছেন তাঁরা। এমনকি নজিরবিহীন ভাবে চাইছেন প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংয়ের পদত্যাগ!
বিক্ষোভের আঁচ উস্কে গেছে, চিনের প্রান্তিক শহর উরুমকিতে একটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায়। ১০ জন মানুষ একটি বাড়ির ভিতর পুড়ে মারা গেছেন। স্থানীয়দের দাবি, করোনার বিধিনিষেধকে সামনে রেখে আগুন লাগার পরেও ওই বাড়ি থেকে বেরোতে দেওয়া হয়নি বাসিন্দাদের! প্রতিবাদে সাদা কাগজ নিয়ে বিক্ষোভ দেখান অনেকে, মোমবাতি জ্বালিয়ে মৃতদের শ্রদ্ধাও জানানো হয়।

তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে সরকার।
অনেকেই বলছেন, চিনে সচরাচর এ ধরনের বিক্ষোভ দেখা যায় না। কারণ, সে দেশে সরকারের সমালোচনা করা মানেই কড়া শাস্তির মুখে পড়া। তবে সাম্প্রতিক কালে চিনের ‘জিরো কোভিড নীতি’ এতটাই সমস্যার কারণ হয়েছে, মানুষের অসন্তোষ আর বাঁধ মানছে না। তার জেরেই এই বিক্ষোভ।
জিরো কোভিড নীতি, অর্থাৎ করোনা রোগীর সংখ্যা দেশে একেবারে শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার যে পরিকল্পনা নিয়েছেন প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং, তার অন্যতম হাতিয়ার হল নানাবিধ বিধিনিষেধ এবং লকডাউন। লকডাউনের বিরুদ্ধে বহুদিনই গলা তুলেছে দেশবাসী। কিন্তু সম্প্রতি কোভিড রোগীর সংখ্যা ফের বাড়তে শুরু করায় জিনপিং ফের জোর দিয়ে বলেন, চিন কোনওভাবেই এই নীতি থেকে সরে দাঁড়াবে না। এর ফলে পথে নেমে প্রতিবাদে সামিল হয়েছে মানুষ।
)
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চিনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরেই বিশ্বের প্রথম করোনা আক্রান্ত রোগীর খোঁজ মেলে। করোনায় প্রথম মৃত্যুর ঘটনাটিও ঘটেছিল চিনে। এর পর খুব দ্রুত বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে এই মারণভাইরাস। বহু মানুষের মৃত্যু হতে থাকে। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে দীর্ঘমেয়াদী লকডাউন, কোয়ারেন্টাইন, ভ্রমণ বিধিনিষেধ শুরু হয় সারা বিশ্বে।
অভিযোগ, এখন পৃথিবীর প্রায় সব দেশ কঠোর করোনা বিধি থেকে সরে এলেও, চিন ‘জিরো কোভিড নীতি’র নাম করে এখনও সেসব জারি রাখছে। ফলে মানুষ স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারছে না, কাজ হারাচ্ছে বহু মানুষ। এসবের মধ্যেই আবারও ফিরে এসেছে করোনা।

সব মিলিয়ে যেন বিক্ষোভের পথেই হাঁটছেন দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া সাধারণ মানুষ।
এক বছর ধরে ধর্ষণ করেছে ‘দাদা’, স্কুলের শৌচালয়ে মা হল নাবালিকা! একরত্তিকে ফেলে এল দূরে