
দ্য ওয়াল ব্যুরো : ভারত ও ফ্রান্সের মধ্যে রাফায়েল চুক্তির সময় শুধু দাসো কোম্পানির অফসেট পার্টনার হওয়াই নয়, আরও সুবিধা পেয়েছেন শিল্পপতি অনিল অম্বানি। ফ্রান্স থেকে বিপুল করছাড় দেওয়া হয়েছে অনিলের এক টেলিকম কোম্পানিকে। সেই কোম্পানির রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছে ফ্রান্সে। ফ্রান্সের বিখ্যাত লা মন্ডে সংবাদপত্রে ছাপা হয়েছে এই তথ্য।
ফ্রান্সের সংবাদপত্রে প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, অনিলের কোম্পানিকে ফ্রান্সের সরকার ছাড় দিয়েছে মোট ১৪৩ কোটি ৭০ লক্ষ ইউরো। ২০১৫ সালে ভারত যখন রাফায়েল জেট বিমান কেনার কথা ঘোষণা করে, তার কয়েক মাসের মধ্যেই ওই করছাড় দেওয়া হয়।
রিলায়েন্স কমিউনিকেশনসের দাবি, তারা কোনও বেআইনি কাজ করেনি। ফ্রান্সে যে আইনি প্রক্রিয়া মেনে সব কোম্পানি কাজ করে, সেই আইনের আওতায় তাদের মকুব করা হয়েছে।
ফ্রান্সের সংবাদপত্রে বলা হয়েছে, রিলায়েন্সের সাবসিডিয়ারি সংস্থা আটলান্টিক ফ্রান্সের কর দেওয়ার কথা ছিল ১৫ কোটি ১০ লক্ষ ইউরো। তার বদলে মাত্র ৭৩ লক্ষ ইউরো কর হিসাবে নিয়েছে ফ্রান্সের সরকার। ওই খবর প্রকাশিত হওয়ার পরেই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। তারা বলেছে, রাফায়েল চুক্তির সঙ্গে অনিল অম্বানিকে করছাড় দেওয়ার বিষয়টি জড়ানো ঠিক নয়। এভাবে মানুষকে ভুল বোঝানো হচ্ছে।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রক বিবৃতি দিয়ে বলেছে, আমরা লক্ষ করেছি, একটি বেসরকারি সংস্থাকে কর ছাড় দেওয়ার সঙ্গে ভারত সরকারের রাফায়েল বিমান কেনার বিষয়টি যুক্ত করা হচ্ছে। বর্তমান সরকারের আমলে রাফায়েল চুক্তি হয়েছে। তার সঙ্গে করছাড় দেওয়ার বিষয়টির সামান্যতম সম্পর্কও নেই।
২০১৫ সালের ১০ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ফ্রান্সের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্কো ওল্যাদেঁর সঙ্গে বৈঠকের পর রাফায়েল চুক্তির কথা ঘোষণা করেন। চুক্তি চূড়ান্ত ২০১৬ সালের ২৩ ডিসেম্বর। কংগ্রেসের দাবি, ওই চুক্তিতে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে। কংগ্রেসের নেতৃত্বে ইউপিএ সরকার যেখানে প্রতিটি রাফায়েল জেট বিমানের দাম ৫২৬ কোটি টাকা হিসাবে ধার্য করেছিল, সেখানে মোদী সরকার ওই বিমান কিনছে প্রতিটি ১৬৭০ কোটি টাকা দরে।
অনিল অম্বানিকে রিলায়েন্স ডিফেন্সকে দাসো কোম্পানির অফসেট পার্টনার করার পিছনেও দুর্নীতি আছে বলে দাবি কংগ্রেসের। কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী গত কয়েক মাসে বহুবার অভিযোগ করেছেন, প্রধানমন্ত্রীর বন্ধু হওয়ার জন্যই অনিল অম্বানি বিশেষ সুবিধা পেয়েছেন। তাঁকে বেআইনিভাবে ৩০ হাজার কোটি টাকা পাইয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। যদিও তাঁর কোম্পানির বিমান বানানোর কোনও অভিজ্ঞতাই ছিল না। অন্যদিকে বঞ্চিত করা হয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা হ্যালকে।