
বাজি থেকে মানুষের যেমন ক্ষতি হয়, তেমনি সাময়িক বা পাকাপাকি ভাবে ক্ষতি হতে পারে অন্য প্রাণীরও। অন্ধ ও বধির হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা যেমন থাকে, তেমনি ভয়ের চোটে হার্ট অ্যাটাকও হতে পারে সারমেয়র।
বাজি ফাটিয়ে সাময়িক আনন্দ হয়তো কেউ পেতে পারেন, কিন্তু বাজি ফাটানোর আগে পরিবেশের সব প্রাণীর কথাই বিবেচনা করা দরকার। যদি কোনও পশু চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলেন, তা হলে জানতে পারবেন দীপাবলির পরে কত রকম সমস্যা হয় পশুদের। বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়াতেও তো দেখাই যায় বাজিতে কত ভাবে আহত হয়েছে কুকুর-বেড়াল-পাখি। শিশুরাও অনেক সময় বাজির শিকার হয়।
এমনও দেখা যায় যে বিকট শব্দ শুনে কোনও শব্দে আতঙ্ক তৈরি হয়ে গেল পাকাপাকি ভাবে। পরে দেখা গেল সামান্য শব্দ হলেই তারা সিঁটিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু যারা আইন-আদালতকেই তোয়াক্কা করে না, তাদের কিছু বলতে যাওয়াই বৃথা। তাহলে উপায়?
যে জীবজন্তু পোষা নয় কিন্তু বাড়ির আশপাশেই থাকে, তাদের জন্য কিছু করা বেশ মুশকিল। তবে প্রাণীটি আপনার পোষা হলে, বাজি ফাটার সময় তার কাছিকাছি থাকুন। তাতে আপনার পোষ্য কিছুটা ভরসা পাবে। দরজা-জানলাও বন্ধ করে দিন, তাতে শব্দ ও ধোঁয়া দুই-ই কম আসবে। পশুচিকিৎসকদের পরামর্শ, এ নিয়ে বাড়াবাড়ি করবেন না, তাতে আপনার পোষ্যটি একটু বেশি সিঁটিয়ে যেতে পারে, অনাবশ্যক তাকে ভিতু প্রকৃতির করে দেওয়া ঠিক নয়।
যদি বাড়িতে অন্য কেউ থাকেন পোষ্যকে দেখভাল করার জন্য, তাহলে আপনি বাড়ির আশপাশে নজর রাখতে পারেন যাতে কোনও প্রাণীকে লক্ষ্য করে কেউ বাজি না ছোড়ে। যদি আপনি নিয়ে নিরাপত্তীকর্মী হন, তা হলে আপনার কথা অনেকে মানতে পারে। তা না হলেও লোকজনকে বোঝান যে কোনও প্রাণীর ক্ষতি করলে আইনত তাঁর শাস্তি হতে পারে। শাস্তির কথা শুনলে অনেকে হয়তো লোকে কিছুটা সতর্ক হয়ে যাবে। কেউ ইচ্ছা করে পশুদের দিকে তাক করে বাজি ছুড়ছে দেখলে পুলিশে খবর দিন।
কোনও ভাবে কারও গায়ে বাজি লাগলে সেই প্রাণীটকে সাহায্য করুন। ক্ষতস্থানে জল দিন, পশুচিকিৎসেকর সঙ্গে পরামর্শ করুন। বহু এনজিও এবং পশুপ্রেমী সংস্থা আছে, তাদেরও খবর দিতে পারেন। আহত প্রাণীর শুশ্রূষা করার দায়িত্ব তারাও নিতে পারে।
শুধু কুকুর-বেড়াল নয়, গরুও একই রকম ভাবে আতঙ্কিত হতে পারে বাজির শব্দে। ভয় পেলে গরুর অক্সিটোসিন ক্ষরণ কমে যায়, তার প্রভাব পড়ে দুধে।