
দ্য ওয়াল ব্যুরো: অনুব্রত মণ্ডলকে (Anubrata Mondal) দেখতে তাঁর বাড়িতে গিয়েছিলেন সরকারি চিকিৎসক চন্দ্রনাথ অধিকারী (Chandranath Adhikari)। তারপরেই বিস্ফোরক দাবি করেছিলেন তিনি। বলেছিলেন হাসপাতালের সুপারের নির্দেশেই অনুব্রতর বাড়ি যেতে হয়েছিল তাঁকে, নেতার ‘অনুরোধে’ লিখে দিয়েছেন ‘বেডরেস্ট’। এবার মুখ খুললেন বোলপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপার (Hospital Super) বুদ্ধদেব মুর্মুও (Buddhadeb Murmu)।
বুদ্ধদেব জানিয়েছেন, অনুব্রত মণ্ডলের বাড়িতে ডাক্তার পাঠানো নিয়ে তাঁর উপরেও ‘চাপ’ ছিল। তৃণমূল বিধায়ক তথা জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরীর দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন বুদ্ধদেব মুর্মু। বিকাশবাবু অনুব্রত মণ্ডলের ঘনিষ্ঠ বলেই এলাকায় পরিচিত। তিনিই হাসপাতালের সুপারকে কেষ্টর বাড়িতে ডাক্তার পাঠাতে বলেছিলেন বলে দাবি বুদ্ধদেবের।
এদিকে একার ঘাড়ে দায় নিতে নারাজ বিকাশ রায়চৌধুরীও। তিনি জানিয়েছেন, তিনি কাউকে কোনও চাপ দেননি। কেবল তথ্য জানিয়েছিলেন মাত্র।
অনুব্রত মণ্ডলকে দেখতে তাঁর বাড়িতে গিয়েছিলেন সরকারি ডাক্তার চন্দ্রনাথ অধিকারী। সেখানে গিয়ে সাদা কাগজে ‘বেডরেস্ট’ও লিখে দিয়েছিলেন তিনি। পরে জানান, ‘বিবেকদংশন’ সইতে না পেরে সবটা তিনি ফাঁস করছেন। আসলে অনুব্রত মণ্ডলের বাড়িতে সুপারের নির্দেশেই যেতে হয়েছে তাঁকে, নিজের একেবারেই ইচ্ছে ছিল না।
ওই চিকিৎসক আরও জানান, বোলপুরেই থাকেন তিনি। আর তাই সেখানে দাঁড়িয়ে অনুব্রত মণ্ডলের ‘অনুরোধ’ ফেলার সাহস তাঁর ছিল না। সেই কারণেই কেষ্টর কথা মতো ‘বেডরেস্ট’ লিখে দিতে হয়েছে তাঁকে।
সরকারি চিকিৎসকের এমন বয়ান সামনে আসতেই তোলপাড় পড়ে যায় চারদিকে। ডাক্তারদের উপর প্রভাব খাটিয়ে সিবিআই হাজিরা এড়ানোর ছক কষেছিলেন অনুব্রত, জানাজানি হয়ে যায় সেটা। তারপরের দিনই অবশ্য সিবিআই গ্রেফতার করে অনুব্রতকে।
বোলপুর হাসপাতালের সুপার বুদ্ধদেব মুর্মু দাবি করেছেন বিকাশ রায়চৌধুরী তাঁকে ফোন করে বারবার ‘চাপ’ দিচ্ছিলেন। তাই চন্দ্রনাথকে অনুব্রত মণ্ডলের বাড়িতে পাঠান তিনি। তবে নেতার বাড়ি যাওয়ার জন্য ডাক্তারকে তিনি জোর করেননি বলে দাবি। জানিয়েছেন, তিনি কেবলমাত্র ‘আবেদন’ করেছিলেন। ইচ্ছে করলে ওই চিকিৎসক কেষ্টর বাড়িতে নাও যেতে পারতেন।
এদিকে অনুব্রত ঘনিষ্ঠ বিকাশ জানিয়েছেন, নেতার বাড়ি থেকে তাঁকে ফোন করা হয়েছিল। সেই ফোন পেয়ে তিনি হাসপাতালের সুপারের কাছে জানিয়েছিলেন। ডাক্তার পাঠানোর জন্য কাউকেই চাপ দেননি।
তবে চাপের তত্ত্ব এড়ালেও সিবিআইয়ের নজরে বুদ্ধদেব মুর্মু, বিকাশ রায়চৌধুরীরা রয়েছেন। এখন দেখার তদন্তের জল কোনদিকে গড়ায়।
আরও পড়ুন: পার্থ জেল হাসপাতালে ভর্তি, এসএসকেএম থেকে ৮ জন ডাক্তার গেলেন দেখতে