Latest News

মেয়েদের নামেই বাড়ির নাম গ্রামজুড়ে, কন্যাভ্রূণ হত্যার রাজধানী হরিয়ানায় আশার আলো

দ্য ওয়াল ব্যুরো: কন্যাভ্রূণ হত্যা এখনও আমাদের দেশে অভিশাপের মতো। মেয়ে জন্মালে মা’কে যে গঞ্জনা শুনতে হতো আজ থেকে ২০০ বছর আগে, এখনও গ্রামগঞ্জে সেই ছবি খুব একটা বিরল নয়। হরিয়ানাতেও (Haryana) আকছার এমন ঘটনা শোনা যায়। তবে পুরুষতান্ত্রিক সমাজের মাঝে থেকেই দৃষ্টান্ত স্থাপন করল হরিয়ানারই একটি গ্রাম। সেখানে বাড়িঘরের নামেও ঘরের লক্ষ্মীর জয়জয়কার।

হরিয়ানার হিসর জেলায় ছবির মতো সাজানো গ্রাম মায়ার। মেরেকেটে দেড় হাজার পরিবারের বাস সেই গ্রামে। জনসংখ্যা খুব বেশি হলে সাত হাজার। কিন্তু সেই গ্রামের প্রতিটি বাড়ির আলাদা পরিচয় আছে। রয়েছে আলাদা নাম। গ্রামের মেয়ে-বউদের নামেই সেখানে বাড়ির নাম  দেওয়া হয়। মেয়েদের নামেই চেনা যায় এক-একটি ঘরকে।

মায়ার গ্রামের লোকজনকে মেয়েদের নামে বাড়ির নাম রাখতে কেউ বলে দেয়নি। নিজেরাই তাঁরা এ ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছেন। প্রতিটি বাড়িতে মেয়ে-বউদের নামের নেমপ্লেট লাগানো হয়েছে। জানা গেছে, ‘লাডো স্বভিমান উৎসব’ নামের এক অনুষ্ঠান চালু হয়েছে মায়ারে। ‘লাডো’ কথার অর্থ মেয়ে। মেয়েরাই যে সমাজের গর্ব, তাই এই উৎসবের মূল বার্তা। নিকটবর্তী বিবিপুর গ্রামের প্রাক্তন সরপঞ্চ সুনীল জগলান এই উৎসবের সূচনা করেছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী স্বামিত্ব যোজনা নামের এক প্রকল্প চালু করেছিলেন, যার মাধ্যমে গ্রামবাযীরা নিজেদের সম্পত্তির কার্ড পেয়ে থাকেন। এই প্রকল্পের ভাবনা থেকেই সুনীল জগলান এমন এক উৎসব চালু করার প্রেরণা পেয়েছিলেন বলে শোনা যায়। সুনীল জানিয়েছেন, জিন্দল স্টেনলেস ফাউন্ডেশন এবং সেলফি উইথ ডটার ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে গ্রামে গ্রামে মেয়েদের উন্নয়নের কাজ চলছে। কাছেপিঠের দশ বারোটি গ্রামে এটা চালু করা হয়েছে।

মায়ার গ্রামের মেয়ে অক্ষরা। গ্রামের লোকেদের এই কাজে তিনি খুবই খুশি। জানিয়েছেন, এযাবৎকাল ছেলেদের নাম বা গোত্রই পরিবারের নাম ঠিক করে দিত। কিন্তু এখন মানুষের মনে ইতিবাচক পরিবর্তন আসছে। এতে মেয়েরাও অনেকখানি ভরসা পাবে।

২০১৫ সাল থেকেই এই কর্মকাণ্ড শুরু করেছেন সুনীল জগলান। এখনও পর্যন্ত মোট ১৭ হাজার বাড়িতে নেমপ্লেট মেয়েদের নামে খোদাই করতে সক্ষম হয়েছেন তিনি। আগামীদিনে আরও গ্রামে এই কাজ ছড়িয়ে দেওয়ার আশা রাখেন।

You might also like