
৭০০ কিলোমিটার পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ হয় বালাসোরের লঞ্চপ্যাড থেকে। ডিআরডিও জানিয়েছে, পরমাণু অস্ত্র বহু করতে পারে এই ক্ষেপণাস্ত্র। শৌর্য সাবমেরিন-লঞ্চড ব্যালিস্টিক-০৫ মিসাইলের ল্যান্ড ভার্সন। অর্থাৎ ভূমি থেকে ভূমিতে ছোড়া যায় এই মিসাইল। ডিআরডিও জানিয়েছে, পাঁচ হাজার কিলোমিটার পাল্লার কে-৫ সাবমেরিন-লঞ্চড ব্যালিস্টিক মিসাইলও তৈরির পথে।
শব্দের চেয়েও দ্রুতগামী শৌর্য ক্ষেপণাস্ত্র
হাইপারসনিক সারফেস-টু-সারফেস ট্যাকটিকাল মিসাইল হল শৌর্য। তৈরি করেছে ডিআরডিও। এই মিসাইলের পাল্লা ৭০০ থেকে ১৯০০ কিলোমিটার। অর্থাৎ ১৯০০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতেও নিশানা করা যায় এই ক্ষেপণাস্ত্র। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই মিসাইল সিস্টেম পরমাণু অস্ত্রবাহী। ২০০ কিলোগ্রাম থেকে ১ টন ওজনের নিউক্লিয়ার ওয়ারহেড বইতে পারে এই ক্ষেপণাস্ত্র।
আরও পড়ুন: ৪০০ কিলোমিটার পাল্লার ব্রাহ্মস ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষামূলক উৎক্ষপণ সফল, লাদাখে মোতায়েনের আগের প্রস্তুতি
ডিআরডিও জানিয়েছে, এই ক্ষেপণাস্ত্র দীর্ঘসময় ধরে সংরক্ষণ করা যায়। বিশেষ কোনও পরিচর্চার দরকার পড়ে না। এই মিসাইলের গতিবেগ অত্যন্ত বেশি। নিক্ষেপের সময় তাপ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে নিজেই। হাই-পারফরম্যান্স নেভিগেশন সিস্টেম আছে। যে কোনও লক্ষবস্তুতে দিনে বা রাতের যে কোনও সময় নিশানা স্থির করা যায়। একবার নিক্ষেপ করলে এই ক্ষেপণাস্ত্রের গতিপথ রুখে দেওয়া প্রায় অসম্ভব। শত্রুপক্ষের যে কোনও আধুনিক সামরিক পরিকাঠামো গুঁড়িয়ে দিতে পারে এই মিসাইল।
সাবমেরিন থেকে ছোড়ার জন্যই তৈরি করা হয়েছিল এই মিসাইল। ডিআরডিও জানিয়েছে, এর আধুনিক ভার্সন ভূমি থেকেও ছোড়া যায়। ২০১১ সালে ওড়িশার চাঁদিপুরে প্রথম এই ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষামূলক উৎক্ষপণ হয়।
আরও পড়ুন: অর্জুন ট্যাঙ্ক থেকে ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা সফল, শত্রু সেনার যুদ্ধ-ট্যাঙ্ক গুঁড়িয়ে দিতে পারে এই মিসাইল
লাদাখ সীমান্ত সংঘাতের আবহেই একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্রের শক্তি প্রদর্শন করছে ভারত। কিছুদিন আগেই ৪০০ কিলোমিটার পাল্লার শব্দের চেয়ে দ্রুতগামী ব্রাহ্মস ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ সফল হয়েছে। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, লাদাখ সীমান্তে মোতায়েন করা হবে এই ব্রাহ্মস মিসাইল। তার জন্যও পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণের প্রয়োজন ছিল। এই ক্ষেপণাস্ত্র তার উৎক্ষেপণ স্থল থেকে ৪০০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করতে পারে। তবে এর চেয়েও বেশি ৫০০ কিলোমিটার পাল্লার ব্রাহ্মসও প্রস্তুত আছে ডিআরডিও-র কাছে।
ভারতের ‘মেন-ব্যাটল ট্যাঙ্ক’ অর্জুন থেকে সফল উৎক্ষেপণ করা হয়েছে অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক গাইডেড মিসাইলের। রুশ-ভারত যৌথ প্রযুক্তিতে তৈরি টি-৯০ ভীষ্ম ট্যাঙ্ক থেকেও এই মিসাইলের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করা হবে। দেশের দুই শক্তিশালী যুদ্ধ-ট্যাঙ্ক থেকেই যদি সফলভাবে এই ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া যায়, তাহলে ভারতীয় বাহিনীর শক্তি আরও বাড়বে। অর্জুন ট্যাঙ্কের ১২০ মিলিমিটার রাইফেল গান থেকে টেস্ট-ফায়ার করা হয়েছে এটিজিএমের, এবার ১২৫ মিলিমিটার স্মুথবোর গান থেকে এই মিসাইল ছোড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে ডিআরডিও।