
দ্য ওয়াল ব্যুরো : রিজার্ভ ব্যাঙ্কের মনিটরি কমিটির তিন সদস্যের মেয়াদ শেষ হয়েছে গত সেপ্টেম্বর মাসে। দ্রুত তিনটি পদ পূরণ না করায় মনিটরি কমিটির দ্বিমাসিক বৈঠক হতে পারেনি। সাধারণত ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে ১ অক্টোবরের মধ্যে মনিটরি কমিটির বৈঠক হয়। নিয়ম হল, তাতে চার সদস্যকে উপস্থিত থাকতেই হবে। কিন্তু কমিটির ছ’জন সদস্যের মধ্যে তিনজন অবসর নেওয়ায় কোরাম হওয়া সম্ভব ছিল না। তাই মনিটরি কমিটির বৈঠক পিছিয়ে দেওয়া হয়।
সোমবার রাতে মনিটরি কমিটির নতুন তিন সদস্যের নাম ঘোষণা করে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। তাঁরা হলেন শশাঙ্ক ভিদে, অসীমা গয়াল এবং জয়ন্ত বর্মা। মনিটরি কমিটিতে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের তিনজন সদস্য থাকেন। বাকি তিনজনকে নিয়োগ করে সরকার। সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, মনিটরি কমিটির নতুন সদস্যদের কার্যকালের মেয়াদ চার বছর।
অসীমা গয়াল একসময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ছিলেন। তিনি মুম্বইতে ইন্দিরা গান্ধী ইনস্টিটিউট অব ডেভলপমেন্ট রিসার্চে অধ্যাপনা করেন। একসময় তিনি ছিলেন ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেলো।
শশাঙ্ক ভিদে দিল্লির ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর অ্যাপ্লায়েড ইকনমিক রিসার্চের সিনিয়র অ্যাডভাইসার। তাঁর গবেষণার বিষয় হল কৃষি, পভার্টি অ্যানালিসিস ও ম্যাক্রোইকনমিক্স। জয়ন্ত বর্মা আইআইএম আমেদাবাদের ফিন্যান্স অ্যান্ড অ্যাকাউন্টিং প্রফেসর।
প্রতি বছর ১ অক্টোবর মনিটারি পলিসি কমিটি সুদের নতুন হার ঘোষণা করে। এবছর কমিটির বৈঠক না হওয়ায় তা ঘোষণা করা যায়নি। পর্যবেক্ষকদের মতে, এর ফলে দেশের অর্থনীতিতে অনিশ্চয়তা বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ দেশগুলির মধ্যে ভারত অতিমহামারীতে রীতিমতো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এপ্রিল থেকে জুনের ত্রৈমাসিকে অর্থনীতির সংকোচন ঘটেছে ২৩.৯ শতাংশ।
২০১৬ সালে মনিটারি পলিসি কমিটি গড়ে তোলা হয়। চলতি বছরে ওই কমিটি সুদের হার ১১৫ বেসিস পয়েন্ট কমিয়েছে। ব্লুমবার্গের সমীক্ষায় দেখা যায়, বেশিরভাগ অর্থনীতিবিদ মনে করছিলেন, এবারের বৈঠকেও মনিটারি পলিসি কমিটি সুদের হার একই রাখার সিদ্ধান্ত নেবে।
ভারতের অর্থনীতি নিয়ে কিছুদিন আগেই আশঙ্কার কথা শুনিয়েছেন মার্কিন অর্থনীতিবিদ জেফ্রি ডি সাচস। তাঁর মতে, করোনা নিয়ন্ত্রণ করতে ভারত এখনও পর্যন্ত যে উদ্যোগ নিয়েছে, আগামী দিনে তার ডবল উদ্যোগ নিতে হবে। নইলে অর্থনীতির পুনরুজ্জীবনের সব চেষ্টাই হবে হবে ব্যর্থ।
সাচসের বক্তব্য, করোনার মোকাবিলায় শুধু ওষুধ দিয়ে কাজ হবে না। সরকারকে নিশ্চিত করতে হবে যাতে সকলেই মাস্ক পরে। সামাজিক দূরত্ব মেনে চলে। যে কোনও জমায়েত নিষিদ্ধ করতে হবে। আরও বেশি বেশি টেস্ট করতে হবে। কীভাবে রোগী সংক্রমিত হয়েছেন তাও খুঁজে বার করতে হবে। সেই সঙ্গে স্বাস্থ্য পরিকাঠামোয় বাড়াতে হবে ব্যয়বরাদ্দ। নাহলে ভয়াবহ পরিস্থিতির সম্মুখীন হবে ভারত। কোভিড রোগীর সংখ্যা হু হু করে বেড়ে যাবে।