
দ্য ওয়াল ব্যুরো: অন্ডালে কাজি নজরুল ইসলাম বিমানবন্দরের রাস্তা আটকে বিক্ষোভ দেখালেন জমিদাতারা। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন বর্গাচাষি ও এখানে কাজের জন্য প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বেকার যুবকরা। হাজার খানেক বিক্ষোভকারীর জমায়েতে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে বিমান বন্দর যাবার মূল রাস্তা।
দশ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও শর্ত পালন করা হয়নি বলে অভিযোগ বিক্ষোভকারীদের। তাঁরা বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ তাঁদের ডেকে সমস্ত সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিচ্ছেন, ততক্ষণ কোনও যাত্রীকে ঢুকতে ও বেরোতে দেওয়া হবে না। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে মোতায়েন করা হয় বিশাল পুলিশ বাহিনী।
২০০৮ সালে দুর্গাপুরের অন্ডাল ও দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকের মোট ১১টি মৌজার মোট প্রায় ২৫০০ একর জমি অধিগ্রহণ শুরু হয় দেশের প্রথম বেসরকারি বিমাননগরীর জন্য। তখন জমিদাতাদের বলা হয়েছিল প্রতি এক বিঘা জমির জন্য আর্থিক ক্ষতিপূরণ ছাড়াও জমির মালিকদের এই বিমাননগরীর ভিতরে উন্নত এক কাঠা জমি দেওয়া হবে। জমিদাতাদের পরিবারের একজন বেকার তরুণ-তরুণীকে আই তখন আইটিআই প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়, কথা ছিল তাঁদের চাকরি দেওয়া হবে বিমাননগরীতে। জমির যাঁরা বর্গাদার, তাঁদেরকেও আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা বলা হয়।
সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি ইন্টারন্যাশনাল ও দেশীয় বেঙ্গল এরোট্রোপোলিস প্রজেক্ট লিমিটেডের (বিইপিএল) উদ্যোগে দ্য সুজলম স্কাই সিটি তৈরির কাজ শুরু হয়। এই বিমাননগরীতে বিমান ওঠানামা ছাড়াও বেসরকারি হাসপাতাল, তথ্যপ্রযুক্তি পার্ক, হোটেল, বিদ্যালয়, কলেজ, রেঁস্তোরা, ক্লাব, ছোট ছোট ম্যানুফ্যাকচারিং ইউনিট, শপিং মল, মাল্টিপ্লেক্স প্রভৃতি নির্মাণ করার কথা ছিল, সে সব হলে এই জায়গাটিই বদলে যেত আর্থিক ভাবে। ঠিক হয়, একেবারে অত্যাধুনিক হবে এই নতুন শহর।
কাজী নজরুল ইসলাম বিমানবন্দর উদ্বোধন করেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। এই বিমানবন্দর থেকে এখন চেন্নাই, দিল্লি, ব্যাঙ্গালোর, হায়দরাবাদে বিমান যাতায়াত শুরু হয়েছে। বেসরকারি কয়েকটি স্কুল হয়েছে, আবাসন হয়েছে। কিন্তু বিরাট কোনও প্রকল্প এখনও এখানে আসেনি। আর পূরণ হয়নি জমিদাতাদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি। সেই কারণেই এই বিক্ষোভ।
আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, এই নগরীতে অনেকে কাজ পেলেও যাঁদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল তাঁরা কাজ পাননি। অধিগৃহীত জমির যে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে সোখানেও গরমিল রয়েছে বলে তাঁদের অভিযোগ। তাঁদের অভিযোগ, তাঁদের যে জমির পরিবর্তে যে জমি দেখানো হয়েছে সেখানে কোনও উন্নয়ন করা হয়নি। সেখানে পানীয় জল, বিদ্যুৎ প্রভৃতি পরিষেবা দেওয়া হয়নি বলেও তাঁদের অভিযোগ। বিডিও স্তর থেকে সচিবালয় পর্যন্ত বারবার দরবার করেও লাভ হয়নি বলে তাঁরা জানিয়েছেন।
ঘণ্টা খানেক বিক্ষোভ চলার পর অবশেষে অন্ডালের বিডিও ঋত্বিক হাজরার আশ্বাসে বিক্ষোভ ওঠে। বিডিও আশ্বাস দিয়েছেন তাঁদের দাবিদাওয়া নিয়ে প্রশাসন আলোচনা করবে। এ জন্য তিনি সাত দিন সময় চেয়েছেন।