
বিচারক বলেছেন, দাবি না থাকলেও বিয়ের সময় কনেকে যেসব উপহার দেওয়া হয় এবং যা পণপ্রথা বিরোধী আইনের নিয়মাবলী অনুসারে তালিকাভুক্ত থাকে, সেসব পণ দেওয়া বা নেওয়া নিষিদ্ধকারী ৩ (১) ধারার আওতায় পড়ে না।
স্বামী আদালতে জানান, ২০২০ তে তিনি দীপ্তি নামে একটি মেয়েকে হিন্দু রীতি-নীতি, আচার মেনে বিয়ে করেন। কিন্তু দিনদিন তাঁদের সম্পর্কের অবনতি হতে থাকে। স্ত্রী তাঁর বিরুদ্ধে পণ সংক্রান্ত নোডাল অফিসারের কাছে পিটিশন পেশ করে আইনি প্রক্রিয়ার সূচনা করেন। তিনি জানান, বিয়ের পর স্ত্রীর পরিবার তাঁর যাবতীয় অলঙ্কার, সোনাদানা দম্পতির নামে ব্যাঙ্কের লকারে গচ্ছিত রাখে এবং লকারের চাবি থাকে স্ত্রীর কাছেই। ওদিকে পণ বিরোধী নোডাল অফিসারের কাছে দীপ্তি অভিযোগ করেছিলেন, তাঁর সুখ, মঙ্গলের জন্য দেওয়া সব অলঙ্কার ব্যাঙ্ক লকারে রাখা আছে, কিন্তু ফেরত পাঠানো হয়নি।
হাইকোর্টে স্বামী সওয়াল করেন, জেলা পণ বিরোধী অফিসারের এমন মামলা বিবেচনার জন্য গ্রহণের এক্তিয়ার নেই কেননা অভিযোগটা হল, অলঙ্কারগুলি ব্যাঙ্ক লকারে রাখা আছে, ফেরত পাঠানো হয়নি।
হাইকোর্ট রায়ে জানায়, পণের মামলায় পণ বিরোধী নোডাল অফিসারের এক্তিয়ার তখনই থাকে যখন সোনাদানা, অলঙ্কারসামগ্রী সংশ্লিষ্ট কনে বাদে অন্য কাউকে দেওয়া হয়। আদালত উল্লেখ করেছে, স্বামী যাবতীয় সোনার গহনা, অলঙ্কার স্ত্রীর হাতে তুলে দিতে সম্মত হয়েছেন এবং স্ত্রীও তা গ্রহণে ইচ্ছুক বলে জানিয়েছেন। বলেছে, লকারে রাখা অলঙ্কার বিয়ের সময় স্ত্রীকে দেওয়া হয়েছিল তাঁর কল্যাণের জন্য। পাত্রপক্ষ ওই অলঙ্কার দিতে হবে বলে কোনও দাবি পেশ করেনি। সুতরাং এটা যৌতুক বা পণ বলা যায় না।
ইদানীং কেরলে পণের দাবিতে শ্বশুরবাড়িতে বউয়ের ওপর অত্যাচার, এমনকী আত্মহত্যা, মৃত্যুর মতো দুঃখজনক কিছু ঘটনার পর কেরল সরকার পণ নিষিদ্ধকরণ আইন (সংশোধন) ২০২১ কার্যকর করে। তাতে সব জেলায় পণ নিষিদ্ধকরণ অফিসার নিয়োগ করা হবে। তাঁদের মাথায় থাকবেন একজন ডিরেক্টর।