
ফ্রান্সের সাইবার নিরাপত্তা সংস্থা এএনএসএসআই জানায়, ‘মিডিয়াপার্ট’ সংবাদ মাধ্যমের দুই সাংবাদিকের ফোনে পেগাসাসের মাধ্যমে আড়ি পাতা হয়েছিল। মিডিয়াপার্ট বৃহস্পতিবার জানায়, এএনএসএসআই সমীক্ষা করে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মতোই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে যে, পেগাসাসের মাধ্যমে ফোনে আড়ি পাতা হত।
সংসদের বাদল অধিবেশন শুরুর ঠি আগের দিন একটি নিউজ পোর্টালে পেগাসাস কেলেংকারির কথা ফাঁস হয়। এসম্পর্কে তদন্তের দাবিতে উত্তাল হয়ে ওঠে সংসদের দুই কক্ষ। পেগাসাস বিতর্কে এখনও পর্যন্ত একদিনও বাদল অধিবেশন সুষ্ঠুভাবে চলতে পারেনি। অন্যদিকে সরকারও বিরোধীদের দাবি মেনে পেগাসাস নিয়ে তদন্তে রাজি হয়নি। কিন্তু তদন্তের বিষয়ে আর্জি শুনতে রাজি হয়েছে শীর্ষ আদালত।
গত মঙ্গলবার পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করে দাবি করেন, পেগাসাস নিয়ে আদালতের নজরদারিতে তদন্ত করতে হবে। এর আগে জানা যায়, ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর উচ্চপদস্থ অফিসার, একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা, নীতি আয়োগ, ইডি অফিসারদের ফোনেও আড়ি পেতেছিল পেগাসাস স্পাইওয়্যার! অনুমান করা হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী দফতরের আধিকারিকদের ফোনেও ফাঁদ পাতা হয়েছিল।
প্রশ্ন উঠেছে, কে আড়ি পাতার নির্দেশ দিয়েছিল? অভিযোগের তির মোদী সরকারের দিকে। কারণ ইজরায়েলি সংস্থা এনএসও আগেই জানিয়েছে, তারা শুধুমাত্র বিভিন্ন দেশের সরকারকেই তাদের পেগাসাস স্পাইওয়্যার বিক্রি করে। বিভিন্ন দেশের নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা সংস্থাই এই স্পাইওয়্যার কাজে লাগিয়ে ফোনে আড়ি পেতে থাকে। কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলির ক্ষেত্রে স্বরাষ্ট্রসচিবের অনুমতি ছাড়া আড়ি পাতা যায় না। কারণ এই স্পাইওয়্যার কেনার ও ইনস্টল করার খরচ যেমন বিশাল, তেমনি একে ব্যবহার করতে হলে আইটি আইন মাফিক সরকারি অনুমতি নেওয়ারও প্রয়োজন হয়। তাই স্বভাবতই প্রশ্ন ওঠে, মোদী সরকার কি নিজেই এই স্পাইওয়্যার কিনে ফোনে আড়ি পাতার দিয়েছিল?
ফোনে আড়ি পাতার বিষয়টা প্রথম সামনে আসে যখন একটি ডেটাবেস লিক হয়ে যায়। তাতেই সরকার ও বিরোধী পক্ষের একাধিক নেতামন্ত্রী, সাংবাদিক, আমলা, মানবাধিকার কর্মী, আইনজীবী, শিল্পপতি সহ প্রায় ৩০০ জনের ফোন নম্বর লেখা ছিল।