
সিঁথির সনাতন চৌধুরী তাজমহল বেচেননি। কলকাতার ভিক্টোরিয়া বা শহিদ মিনারও নয়। তবে সোশ্যাল মাধ্যমে ছবি পোস্ট করে সনাতন দাবি করেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে নাকি ব্রিকস সম্মেলনে গিয়েছিলেন তিনি। ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চিন ও দক্ষিণ আফ্রিকাকে নিয়ে গঠিত রাষ্ট্রগোষ্ঠীর নাম ব্রিকস (BRICS)।
সনাতনের এমন দাবি শুনে পুলিশও এখন হতবাক যে কে বড় নটবরলাল, দেবাঞ্জন নাকি সনাতন?
কয়েকদিন আগেই সিঁথি থেকে সনাতন রায়চৌধুরীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ভুয়ো পরিচয় দিয়ে সেও প্রতারণা করছিল বলে অভিযোগ। বাংলায় শাসক বিরোধী দুই শিবিরের নেতার সঙ্গেই তাঁর ছবি পাওয়া গেছে। তার পর তাকে জেরা করে পুলিশ যা জানতে পারছে, তাতে চোখ কপালে ওঠার মতোই ব্যাপার।
আরও পড়ুন: ভারতবর্ষের সর্বকালের সেরা প্রতারক নটবরলাল, তিন তিনবার বেচে দিয়েছিল তাজমহল
দেবাঞ্জন তবু রাজ্যের চৌহদ্দিতে নিজের জালিয়াতির জাল বিস্তার করেছিল। সনাতন পৌঁছে গিয়েছিল দিল্লিতে। ব্রিকস সম্মেলনে পোডিয়ামে দাঁড়ানো ছবি মিলেছে তাঁর।জেরায় নাকি সনাতন দাবি করেছেন যে তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিনিধি হয়ে ব্রিকসে যোগ দিয়েছিলেন। সেই সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও।
শুধু কি তাই! পুলিশকে সনাতন জানিয়েছে, ২০০৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের প্রার্থী হয়েছিল সে। রামবিলাস পাসোয়ানের লোকজনশক্তি পার্টির হয়ে দমদম আসনে লড়েছিল, ভোট পেয়েছিল।
কয়েকদিন আগে তালতলা থানায় ফোন করে নিজেকে মুখ্যমন্ত্রীর দফতরের উপদেষ্টা বলে পরিচয় দেন সনাতন। এরপরই মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। জানা যায়, হাইকোর্টের আইনজীবী সনাতন বহু মামলার জাল নির্দেশনামা বের করে তাতে বিচারপতিদের সই জাল করে টাকা তুলতেন। কলকাতার বহু লোকের সম্পত্তি এভাবে আত্মসাত্ করেছেন সনাতন।
হাত পাকাতে পাকাতে পৌঁছে গিয়েছিলেন দিল্লিতেও। ফলে বোঝাই যাচ্ছে সনাতন-কাণ্ড অনেক দূর গড়াতে চলেছে। কারণ প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়ের নাম জুড়ে গিয়েছে। কী ভাবে তিনি ভারতের প্রতিনিধি হয়ে ব্রিকসের বৈঠকে গেলেন তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।
প্রধানমন্ত্রী বা রাষ্ট্রপতির এই ধরনের সফরে যে টিম যায় তাঁরা শীর্ষ স্তরের আমলা। প্রশ্ন হচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকারের ছাঁকনিতেও তা ধরা পড়েনি? নাহলে সনাতন গেলেন কী করে। সনাতনের এই দাবি ঝুটো কিনা তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।