
দ্য ওয়াল ব্যুরো: চিন-ভারত প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় উত্তাপ বেড়েই চলেছে। আর দেরি করতে চায় না ভারত। রাফাল ফাইটার জেটের জন্য ইতিমধ্যেই একপ্রস্থ আলোচনা হয়েছে ফ্রান্সের দাসো অ্যাভিয়েশনের সঙ্গে। সূত্রের খবর, ২৭ জুলাইয়ের মধ্যে প্রথম দফায় চারটি রাফাল জেট ভারতে পাঠিয়ে দেবে ফ্রান্স। সেগুলি ল্যান্ড করবে অম্বালা এয়ারবেসে। পরের দফায় আসবে আরও দুটি। সব ঠিক থাকলে এ বছরের মধ্যেই ছ’টি রাফাল ফাইটার জেট হাতে পেয়ে যাবে ভারতীয় বায়ুসেনা।
সীমান্ত সংঘাতের পরিস্থিতি ক্রমেই তীব্র হয়ে উঠছে। গালওয়ান উপত্যকার ১৪ নম্বর পেট্রলিং পয়েন্টে তাঁবু খাটিয়ে বসে গেছে চিনা সেনা, সাম্প্রতিক উপগ্রহ চিত্রে ধরা পড়েছে এমনই ছবি। অন্যদিকে, তিব্বতের কাছে এয়ারবেসে চিনের বায়ুসেনার তৎপরতাও বাড়ছে বলে খবর। ভারতের আকাশসীমাকে সবরকমভাবে সুরক্ষিত রাখতে কমব্যাট ফাইটার জেট নামিয়েছে ভারতীয় বায়ুসেনা। চিনা গতিবিধি নজরে রাখতে টহল দিচ্ছে ভারতের সুখোই-৩০, মিগ-২৯ ফাইটার জেটের নয়া ভার্সন। অন্যদিকে শক্তিশালী অ্যাটাক হেলিকপ্টার অ্যাপাচে এএইচ-৬৪ই, সিএইচ-৪৭ এফ চিনুক মাল্টি-মিশন হেলিকপ্টারও নামিয়েছে বায়ুসেনা। রাফাল হাতে এলে কমব্যাট ফাইটার জেটের মোকাবিলায় চিনকে আরও জোরদার টক্কর দিতে পারবে ভারতীয় বিমানবাহিনী।
আরও পড়ুন: পূর্ব লাদাখে প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন শুরু করে দিল ভারত, কৌশলগত পদক্ষেপ সেনা ও বায়ুসেনার
৩৬টি রাফাল ফাইটার জেটের জন্য ফ্রান্সের দাসো অ্যাভিয়েশনের সঙ্গে ৫৯ হাজার কোটি টাকার চুক্তি হয়েছিল ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরেই। বায়ুসেনা সূত্রে খবর, ভারতের জন্য ১০টি রাফাল জেট তৈরি রেখেছে ফরাসি সংস্থা। তার মধ্যে ছ’টি চলে আসবে এ বছরেই। আবু ধাবির আল ধাফরা এয়ারবেস থেকে সেগুলিকে উড়িয়ে আনবে ভারতীয় পাইলটরা। মে মাসেই প্রথম চারটি রাফাল ভারতের হাতে আসার কথা ছিল। কিন্তু করোনা মহামারীর কারণে এই সময় পিছিয়ে যায়।
আরও পড়ুন: চিনের মোকাবিলায় কতটা শক্তিশালী ভারতীয় বায়ুসেনা, পাল্টা জবাব দিতে কী কী আধুনিক যুদ্ধবিমান রয়েছে দেশের হাতে
সেই ২০০৭ সাল থেকেই মাঝারি ওজনের যুদ্ধবিমান কেনার প্রক্রিয়া শুরু হয়। আমেরিকা, রাশিয়া, সুইডেনের মোট ছ’টি বিমান সংস্থা প্রতিযোগিতায় নেমেছিল। লকহিড মার্টিনের এফ-১৬ ফ্যালকন, বোয়িংয়ের এফ-১৮ হর্নেট, সাব গ্রিপেন, মিগ-৩৫-কে বাদ দিয়ে শেষে প্রতিযোগিতা এসে দাঁড়ায় ইউরোফাইটার সংস্থার টাইফুন এবং রাফালের মধ্যে। কিন্তু ইউরোফাইটার-এর তুলনায় কম দর হেঁকে বাজি ছিনিয়ে নেয় দাসো। ডবল ইঞ্জিন মল্টিরোল কমব্যাট ফাইটার এয়ারক্রাফ্ট রাফাল আকাশ থেকে ভূমিতে ও সমুদ্রেও আক্রমণ শানাতে পারে। ৯ টনের বেশি যুদ্ধাস্ত্র বইতে পারে রাফাল। অনেক উঁচু থেকে হামলা চালানো, যুদ্ধজাহাজ ধ্বংস করা, মিসাইল নিক্ষেপ এমনকি পরমাণু হামলা চালানোর ক্ষমতাও রয়েছে রাফালের। রাফালকে আরও শক্তিশালী করার জন্য ‘মেটিওর’ এবং ‘স্কাল্প’ নামে দুটি মিসাইলও যোগ করা হতে পারে বলে জানিয়েছে বায়ুসেনা। লক্ষ্যসীমার বাইরে নিপুণ আঘাত হানতে সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্র ‘মেটিওর’। এটি হল বিয়ন্ড ভিসুয়াল রেঞ্জ (বিভিআর) এয়ার-টু-এয়ার মিসাইল। ১২০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতেও নিখুঁত টার্গেট করতে পারে। আর ‘স্কাল্প’ হল লো-অবজার্ভর ক্রুজ মিসাইল। ৬০০ কিলোমিটার পাল্লা অবধি লক্ষ্যে টার্গেট করতে পারে এই মিসাইল। এটি ব্যবহার করে ব্রিটিশ ও ফরাসি বায়ুসেনা।