
কাঁচড়াপাড়ার বাসিন্দা সুজয় কর্মকারের হার্ট, লিভার, দু’টি কিডনিতে জীবনের আলো দেখতে চলেছেন চারজন। গত ৭ জানুয়ারি মোহনপুরের কাছে বাইক দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম হন সুজয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে ভর্তি করা হয় এসএসকেএম হাসপাতালের ট্রমা কেয়ারে। গতকাল, রবিবার সুজয়ের ‘ব্রেন ডেথ’ ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। এর পরেই ছেলেকে ‘বাঁচিয়ে’ রাখতে অঙ্গদানের সিদ্ধান্ত নেয় পরিবার। কলকাতা মেডিক্যালে হৃৎপিণ্ড, অ্যাপোলোতে লিভার ও এসএসকেএমে দু’টি কিডনি দানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এসএসকেএমের স্কিন ব্যাঙ্কে সুজয়ের ত্বক রাখা হয়েছে। তাঁর চোখ ও ত্বকও দান করা হবে বলে জানিয়েছেন ডাক্তাররা।
আজ, সোমবার সকালে রিজিওনাল অর্গ্যান অ্যান্ড টিসু ট্রান্সপ্লান্ট অথরিটি (রোটো) এবং কলকাতা পুলিশের সহযোগিতায় গ্রিন করিডর করে সুজয়ের লিভার, হার্ট পৌঁছে যাবে অ্যাপোলো ও কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে।
এই নিয়ে চতুর্থবার সফল ভাবে হৃৎপিণ্ড প্রতিস্থাপিত হতে চলেছে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে। এর আগে তিনবার সফলভাবে হৃৎপিণ্ড প্রতিস্থাপনের নজির গড়েছে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ। জানা গিয়েছে, বাগুইহাটির কৃষ্ণনগরের বাসিন্দা অমল হালদারের শরীরে বসানো হবে সুজয়ের হৃৎপিণ্ড। ৪৭ বছরের অমলবাবু পেশায় রাজমিস্ত্রী। ডাক্তাররা জানিয়েছেন, হার্টের পাম্পিং ক্ষমতা একেবারেই কমে গিয়েছিল তাঁর। অবস্থা ছিল শঙ্কাজনক। হাঁটাচলার ক্ষমতাও হারিয়েছিল অমলবাবু। প্রায় সাত মাস ধরে কলকাতা মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। হৃৎপিণ্ড প্রতিস্থাপনের প্রয়োজনীয়তার কথা অমলবাবুর পরিবারকে জানিয়েছিলেন ডাক্তাররা। এসএসকেমে ব্রেন ডেথে মৃত সুজয় কর্মকারের রক্তের গ্রুপ ও আনুষঙ্গিক বিষয় মিলে যাওয়ায় ডাক্তাররা আর দেরি করেননি। গ্রিন করিডর করে এসএসকেএম থেকে সুজয় কর্মকারের হার্ট কলকাতা মেডিক্যালে নিয়ে আসার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে।
চতুর্থবারের জন্য হৃৎপিণ্ড প্রতিস্থাপনের রেকর্ড গড়তে চলেছে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ। সকাল থেকেই তাই মেডিক্যাল কলেজের কার্ডিওথোরাসিক ভাসকুলার সায়েন্স বিভাগে ব্যস্ততা তুঙ্গে। ভোরবেলাতেই অমলবাবুকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে অপারেশন থিয়েটারে। অঙ্গ প্রতিস্থাপনের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে জোরকদমে। ডাক্তাররা জানিয়েছেন, কিছু জটিলতা তৈরি হওয়ায় এর আগে একবার শেষ মুহূর্তের জন্য হৃৎপিণ্ড প্রতিস্থাপন সম্ভব হয়নি। তবে এবার সেই সমস্যা হবে না।