Latest News

দিল জিতেছে ‘দিল বেচারা’, আইএমডিবি-র ‘ভারতীয় ছবি’-র তালিকায় শীর্ষে সুশান্তের শেষ ছবি

দ্য ওয়াল ব্যুরো: ট্রেলর রিলিজের পর একের পর এক রেকর্ড ভাঙছিল ‘দিল বেচারা’। এ বার সিনেমা রিলিজের পর বোঝা গেল সত্যিই দর্শকদের ‘দিল’ জিতে নিয়েছেন সুশান্ত। অভিনেতার শেষ ছবি হল রিলিজ না পাওয়ায় বিস্তর হইচই হয়েছিল। তবে শত্তুরের মুখে ছাই দিয়ে টিম দিল বেচারা দেখিয়ে দিয়েছে বিগ স্ক্রিন হোক বা ওটিটি প্ল্যাটফর্ম—–কারও সাধ্য নেই তাদের হিট হওয়া আটকায়।

আইএমডিবি-তে দিল বেচারার রেটিং ১০-এ ১০। পরে কমে অবশ্য ৯.৮ হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ের সব রেকর্ড ভেঙে ভারতীয় সিনেমার টপ রেটের তালিকায় রয়েছে মুকেশ ছাবরার ডেবিউ ফিল্ম। তবে এত সাফল্যের মাঝেও উঠছে অনেক প্রশ্ন।

সোশ্যাল মিডিয়ায় নেটিজেনদের অনেকেই বলছেন, সুশান্ত বেঁচে থাকলে কি এই ছবি নিয়ে এত মাতামাতি হতো? বরং অভিনেতার শেষ ছবি না হলে হলিউডের ছবির তুলনা টেনে সুশান্তের খামতি, সিনেমার ভুল-ত্রুটি মাপতে বসতেন এক শ্রেণির দর্শক। অনেকেই বলছেন সিনেমার নামের মতোই বোধহয় কেউ কেউ সুশান্তকে ‘বেচারা’ ভেবে করুণার চোখেও দেখছেন। তবে তেমনটা হলে নির্দিষ্ট সেই লোকগুলোকে ছেড়ে দেবার পাত্র নন অভিনেতার অগুনতি ভক্ত ওরফে ইন্ডাস্ট্রিতে সুশান্তের আসল ‘গডফাদাররা’।

যে ছবি সুশান্তের কেরিয়ারের মাইলফলক হতে পারত সেটা তাঁর শেষ ছবি হয়ে রইল। হাজার মানুষের আবেগ জড়িয়ে গিয়েছে এই সিনেমার সঙ্গে। আর তাতেই কোথাও ঢাকা পড়ে যাচ্ছে না তো কিজি বসু? এ কথা ঠিক যে কিজি না থাকলে সিনেমার পর্দায় ম্যানির গুরুত্ব বড় ফিকে হয়ে যেত। তবে বাস্তবে বোধহয় আমরা অনেকেই নিজেদের জীবনে একজন ম্যানিকে চাই। কিন্তু দর্শকদের আবেগে কোথাও চাপা পড়ে যাচ্ছেন না তো সঞ্জনা সাংহি কিংবা পরিচালক নিজে, এ প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে অনেকেরই মনে।

প্রথম ছবিতে পরিচালক হিসেবে মুকেশ ছাবরা যথেষ্ট পরিণত মানসিকতার ছাপ রেখেছেন। গদগদ আবেগ নয় বরং পরিমিত ইমোশনকে ঠিকঠাক ভাবে পর্দায় দেখানোই ছিল তাঁর মাস্টার স্ট্রোক। সেই সঙ্গে ছবির প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ দৃশ্য যেখানে একই সঙ্গে দর্শকের চোখে জল আর ঠোঁটে হাসি আসতে বাধ্য, সেই সব সিনে সুশান্তকে যথাযোগ্য ভাবে সঙ্গত দিয়েছেন সঞ্জনা। বছর তেইশের এই তরুণীও মুকেশরই আবিষ্কার। স্কুলে পড়ার সময় মাত্র ১৪ বছর বয়সে সঞ্জনা এসেছিলেন পরিচালকের নজরে। এর আগে সিনেমায় খুব অল্প দৃশ্যে দেখা গেলেও দর্শকমহলের মনে ধরেছিল সঞ্জনাকে। তবে সেটা হয়তো তাঁর ঝকঝকে লুকের জন্য। কারণ অভিনয়ের তেমন জায়গা ছিল না।

আর যখন তিনি সুযোগ পেলেন তখন ব্যাট উঁচিয়ে ছক্কা হাঁকালেন একের পর এক। কোথাও কোথাও পর্দার ধোনিকেও ছাপিয়ে গিয়েছেন বঙ্গ তনয়া কিজি বসু। নায়িকা হিসেবে ডেবিউ ফিল্মে তাঁর সাবলীল অভিনয় কুর্নিশ করার মতো। স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়, শাশ্বত চট্টোপাধ্যায় এবং ম্যানির প্রিয় বন্ধু জগদীশ পাণ্ডের চরিত্রে সাহিল বৈদ্য, এঁরা প্রত্যেকেই নিজ নিজ ভূমিকায় অনবদ্য। সুশান্তকে পুরো সিনেমায় যোগ্য সঙ্গত দিয়েছেন তাঁরা সকলেই।

তবে এত কিছুর পরেও নিঃসন্দেহে এই ছবি বাকি সকলের থেকে অনেকটা বেশি সুশান্তের। কারণ ইম্যানুয়েল রাজকুমার জুনিয়রের মতো নিজের শেষকৃত্যে প্রেমিকা এবং প্রিয় বন্ধুর বক্তব্য শোনার মত ধক সকলের থাকে না। তামিল শব্দ ‘সেরি’-কে হঠাৎ করেই অনেক মানুষের প্রিয় শব্দ বানিয়ে তোলার দম সকলের থাকে না। আর এখানেই ম্যানি ওরফে সুশান্ত অনন্য। বরাবর বাজিমাত করে এসেছেন তিনি। তবে আক্ষেপ একটাই যে এতদিন সিনেমার গল্পে মরে গিয়েও সুশান্ত বুঝিয়েছিলেন পরের ছবিতে ফিরবেন নতুন চমক নিয়ে। তবে এ বার জানিয়ে দিয়েছেন যে আর কোনওদিন ফিরবেন না তিনি।

You might also like