Latest News

গর্ভবতীর কানের খোল বলে দেবে তার বুকের দুধ বাচ্চার জন্য কতটা উপকারি, গবেষণা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের

দ্য ওয়াল ব্যুরো: এমনও সম্ভব!

গর্ভবতী মায়ের কানের খোল পরীক্ষা করলেই নাকি বোঝা যাবে তাঁর বুকের দুধ (Breast Milk) বাচ্চার জন্য কতটা উপকারি, অথবা প্রসবের পরে তাঁর বুকের দুধ কতটা তৈরি হবে। শুনতে আশ্চর্য লাগলেও এটা সত্যি। নতুন গবেষণায় হাতেকলমে সাফল্য পেয়েছেন কলকাতার বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই গবেষক অরূপরতন বন্দ্যোপাধ্যায় ও দীপ্তেন্দু চট্টোপাধ্যায়।

গবেষকরা বলছেন, বিয়ের আগে অথবা গর্ভবস্থায় কানের খোল (Earwax) পরীক্ষা করালে বোঝা যাবে সেই গর্ভবতী মায়ের বুকের দুধে কতটা পুষ্টিগুণ থাকবে, বাচ্চার জন্য তা কতটা উপকারি হবে।

আকাশের তারার সংখ্যা কমছে ঝাঁকেঝাঁকে! কোথায় যাচ্ছে সে সব, কেন এত উদ্বিগ্ন বিজ্ঞানীরা

Successful breastfeeding: tips from BabyCenter India mums - BabyCenter India

কানের ভিতরে যে হলদেটে-খয়েরি রঙের বস্তুটা থাকে তার নিজস্ব গুণাগুণ আছে। কানের ময়লা যার পোশাকি নাম ইয়ারওয়াক্স (Earwax) বা চলতি কথায় কানের খোল। বিশেষজ্ঞরা বলেন, এই কানের ময়লা কিন্তু আসলে কানকে সুরক্ষা দেয়। এটি আসলে কানের বাইরে থাকা সিবেসিয়াস গ্রন্থির (Sebaceous Gland) ক্ষরণ যাকে বলে সেরুমেন (Cerumen)। এর মধ্যে থাকে কেরাটিন (৬০%), স্যাচুরেটেড এবং আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড (১২-২০%) এবং কোলেস্টেরল (৬-৯%)। এই ক্ষরণ হলদেটে হয়, এরই সঙ্গে বাইরে ধুলো-ময়লা ইত্যাদি মিশে একটা বিদঘুটে রঙ ও আকার নেয়।

গবেষকরা বলছেন, সেরুমেন আর মাতৃদুগ্ধে (Breast Milk) থাকা ‘কোলোস্ট্রামে’র উৎস মানবদেহের অন্তঃক্ষরা গ্রন্থি। তাঁদের সমীক্ষা রিপোর্ট বলছে, যে সব গভর্বতী মায়ের কানের খোল ভিজে, তাঁদের বুকের দুধে ‘কোলোস্ট্রাম’ যথেষ্ট পরিমাণে থাকে। যাঁদের কানের খোল শুকনো, তাঁদের তুলনামূলক ভাবে কম। গভর্বতী হওয়ার আগে মহিলারা চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে কানের খোলের সেরুমেন পরীক্ষা করিয়ে নিতে পারেন। সেই অনুযায়ী প্রয়োজনীয় চিকিৎসা করলেই ভাবী সন্তান যথেষ্ট পরিমাণে কোলোস্ট্রামযুক্ত মায়ের দুধ পাবে।

মায়ের বুকের দুধে কতটা পুষ্টিগুণ থাকে?

শিশুর শারীরিক ও মানসিক গঠন তৈরি হয় মায়ের বুকের দুধেই। অথচ স্তন্যপান নিয়ে অনেক ভুল ধারণা আছে মায়েদের। অনেকেই মনে করেন শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ালে ফিগার নষ্ট হয়ে যায়। আবার অনেক মায়েরা ভাবেন, শুধু বুকের দুধেই শিশুর বৃদ্ধি হবে না। স্তন্যপান করানোর পাশাপাশি বাচারচলতি কৌটো দুধ বা কৃত্রিম দুধ খাওয়াতে শুরু করেন অনেকে। তবে এখন এইসব ভ্রান্ত ধারণার প্রাচীর মায়েরাই ভাঙছেন। সচেতনতা আগের থেকে বেড়েছে।

প্রসবের প্রথম তিন থেকে পাঁচদিন মায়ের স্তনবৃন্ত থেকে যে ঈষৎ হলদেটে ঘন দুধ নিঃসৃত হয় তাকে বলে ‘তরল সোনা’ বা ‘গোল্ড মিল্ক’। এর নাম কলোস্ট্রাম। এই কলোস্ট্রামের পরিমাণ কম তবে চিন্তার কারণ নেই। ডাক্তারবাবুরা বললেন, এই দুধেই থাকে সেইসব পুষ্টি উপাদান যা শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশে সাহায্য করে। প্রসবের পর ম্যামারি গ্ল্যান্ডে জমে থাকা ঘন কোলোস্ট্রাম, স্বাভাবিক মাতৃদুগ্ধের থেকে প্রায় ১০ গুণ ঘন। এই কলোস্ট্রামে থাকে অ্যান্টিবডি যা শিশুর গলা থেকে শুরু করে ফুসফুস ও অন্ত্র প্রতিটি অঙ্গের রক্ষাকারী আবরণ মিউকাস মেমব্রেনকে সুরক্ষিত রাখে। মিউকাস স্তর মজবুত হলে সংক্রমণ প্রতিরোধ করা সহজ। আছে। কোলোস্ট্রামে ভরপুর গ্রোথ ফ্যাক্টর থাকে। বাচ্চার ত্বক, পেশি, কার্টিলেজ, নার্ভ কোষ ও হাড় গঠনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা নেয় এই গ্রোথ ফ্যাক্টর। জন্মের পর প্রথম দু’-তিন দিন বাচ্চা এই দুধ খেলে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা অনেক মজবুত হয়। তাছাড়াও কলোস্ট্রামে গ্লাইকোপ্রোটিন, ইমিউনোগ্লোবিউলিন, ল্যাক্টোফেরিন থাকে যা শিশুর শরীর ও মনের বিকাশ ঘটায়।

You might also like