
দ্য ওয়াল ব্যুরো: রবিবার তৃণমূলে (TMC) ফিরে গিয়েছেন ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জন সিং। তবে সাংসদ পদ এখনই ছাড়ছেন না, জানিয়ে দিয়েছেন দলত্যাগী অর্জুন (Arjun Singh)।
সেই প্রসঙ্গ টেনে বিজেপির (BJP) সর্ব ভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh) সোমবার বললেন, তৃণমূলের ডাস্টবিনে বিজেপির আরও ময়লা জমা হতে পারে। তাঁর কথায়, ‘কেউ যেতে চাইলে আটকে রাখা যায় না।’
গত লোকসভা ও বিধানসভা ভোটের আগে তৃণমূলের বেশ কিছু নেতা-মন্ত্রী বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। ভাটপাড়ার অর্জুন সিংয়ের তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান ছিল রীতিমত রাজনীতির মেগা ইভেন্ট। দিলীপই (Dilip Ghosh) তখন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। অর্জুনকে দলে টেনে ব্যারাকপুর লোকসভা দখল করে বিজেপি। অর্জুন জোড়াফুলের ঝাণ্ডা হাতে নিলেও পদ্মফুলের সাংসদ হিসাবেই আপাতত সংসদে থাকবেন। দিলীপের বক্তব্য, কেউ সাংসদ পদ ছাড়তে না চাইলে জোর করে ছাড়ানো যায় না। দেশে এমন কোনও আইন নেই।
অর্জুন, মুকুল রায়, শুভেন্দু অধিকারীদের মতো নেতাদের বিজেপিতে যোগদান নিয়ে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একটা সময় বারে বারেই প্রশ্ন তুলেছেন, বিজেপি কি ওয়াশিং মেশিন, যে ওই দলে যোগ দিলেই কালি-ময়লা দূর হয়ে যাবে।
নারদ কাণ্ডে মুকুল ও শুভেন্দু অধিকারীর নাম জড়ায়। দু’জনকেই সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। তাঁরা তৃণমূলে থাকাকালে বিজেপি-র দলীয় ওয়েবসাইটে তাঁদের ‘নারদ কীর্তি’-র নমুনা জ্বলজ্বল করত। গেরুয়া শিবিরে নাম লেখানো মাত্র তা ওয়েবসাইট থেকে মুছে ফেলা হয়। তা নিয়ে সমাজমাধ্যমে নেট-নাগরিকেরাও কটাক্ষ ছুঁড়ে দিয়ে প্রশ্ন তোলেন, বিজেপি কি উচ্চমানের ডিটারজেন্ট পাউডার, যে ওই দলে গেলেই সাত খুন মাফ।
অর্জুন সিং তৃণমূলে থাকার সময়ই তাঁর বিরুদ্ধে রাজ্য পুলিশের গুচ্ছ মামলা ছিল। বিজেপিতে যাওয়ার পর ওই সব মামলায় পুলিশি তদন্ত গতি পায়। রবিবার তিনি তৃণমূলে ফিরে গিয়েছেন। গত বছর বিধানসভা ভোটের ফল ঘোষণার দিন কয়েকের মধ্যে তৃণমূলে ফিরে যান মুকুল। ফিরেছেন প্রাক্তন মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রাক্তন বিধায়ক প্রবীর ঘোষাল প্রমুখ। মুকুল, শুভেন্দু, অর্জুনদের বিজেপিতে যোগদান নিয়ে তৃণমূলের ‘ওয়াশিং মেশিন’, ‘ডিটারজেন্ট পাউডার’ কটাক্ষের জবাবে দিলীপ এদিন রাজ্যের শাসক দলকে ‘রাজনীতির ডাস্টবিন’ বলেন।
তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, বিধানসভা ভোটের পর বিজেপিতে শুধু ভাঙন আর ভাঙন। দু’জন সাংসদ দল ছাড়লেন। জনা দশ বিধায়ক দলের সঙ্গে নেই। ভাঙন কি চলবেই? ভাঙন রোধের কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না দল?
বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপের জবাব, ‘কেউ যেতে চাইলে জোর করে আটকে রাখা যায় না। ক্ষমতালোভীরা শাসদ দলের দিকে ছুটবে, এতে আশ্চর্যের কী আছে!’ তাঁর বক্তব্য, ‘অর্জুন সিংহের সঙ্গে দলের সর্বভারতীয় সভাপতি কথা বলেছেন। দল আর কী করতে পারে?’
দিলীপের আরও বক্তব্য, বিজেপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ৪২ হাজার মামলা দিয়েছে রাজ্য সরকার। এরমধ্যে ১২ হাজার মামলা হয়েছে গত বিধানসভা ভোটের পর। মামলার ভয় দেখিয়ে দল ভাঙানোর খেলা চলছে। অন্যদিকে, দল যথাসম্ভব চেষ্টা করছে মামলায় আইনি সহায়তা দিতে। অর্জুন সিংও সেই সহায়তা পেয়েছেন। উনি এখন মনে করছেন, নিজেরটা নিজে বুঝে নেবেন।
সংসদে সরব ৪৫৫ বার, ১২৯০ চিঠি, ১১০৪ ফেসবুক পোস্ট, ‘রিপোর্ট কার্ড’ ব্যতিক্রমী সাংসদের