
দ্য ওয়াল ব্যুরো: সমকামী বিয়ে নিয়ে একাধিক আবেদন জমা পড়েছে দিল্লি হাইকোর্টে (Delhi HC)। বিদেশী বিবাহ আইন এবং বিশেষ বিবাহ আইনের অধীনে সমকামী বিবাহের আইনি স্বীকৃতি চেয়েছেন বহু দম্পতি। সেগুলির একসঙ্গে চূড়ান্ত শুনানি হবে ৩০ নভেম্বর।
মামলার আবেদনকারীদের মধ্যে রয়েছেন এক বিবাহিত সমলিঙ্গের দম্পতি, যাঁদের মধ্যে একজন ভারতীয় বংশোদ্ভূত এবং এবং তার পরিবারও এই দেশেই থাকে। তিনি তাঁর পার্টনারের সঙ্গে প্রায় ২০ বছর ধরে সম্পর্কের মধ্যে রয়েছেন এবং ২০১২ সালে নিউইয়র্কে বিয়ে করেছেন তাঁরা।
তাঁরা বর্তমানে প্যারিসের বাসিন্দা এবং তাঁদের বিয়ে আমেরিকা, কানাডা এবং ফ্রান্সে আইনত স্বীকৃত। মূলত এই তিন দেশেই গত ২০ বছর তাঁরা থেকেছেন, কাজ করেছেন।
এই আবেদনকারীরা এবার তাঁদের প্রথম সন্তানের পরিকল্পনা করছেন। তাই তাঁদের মধ্যে যিনি ভারতীয় বংশোদ্ভূত, তিনি ‘ওভারসিজ সিটিজেন অফ ইন্ডিয়া’ অর্থাৎ ওসিআই স্টেটাস পাওয়ার জন্য সরকারের কাছে আবেদন করেছেন, যাতে তিনি দেশে এসে তাঁর পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে পারেন।
অন্য আবেদনকারীদের সকলেই এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায়ের সদস্য। তাঁরা জানিয়েছেন, তাঁদের ইচ্ছায় পছন্দের ব্যক্তিকে বিয়ে করার জন্য এখনও প্রকাশ্যে দাবি করতে পারেন না তাঁরা। নিজেদের অনুভূতি গোপন করতে বাধ্য করা হয়। তাঁরা আরও উল্লেখ করেছেন, এলজিবিটি সম্প্রদায়কে যেন দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক তৈরি করা হয়েছে।
রজনীকান্ত নিলেন ‘দাদা সাহেব ফলকে’ পুরস্কার, স্মরণ করলেন বন্ধু বাস কন্ডাক্টরকে
আদালত সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেটা এই মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে আদালতে জানিয়েছেন, জৈবিক পুরুষ এবং জৈবিক মহিলার মধ্যে বিবাহ ভারতে অনুমোদিত। আবেদনকারীদের একজনের তরফে উপস্থিত আইনজীবী করুণা নান্দে বলেন, যে আইনের অধীনে থাকুক বা না থাকুক, এটি আলোচনার বিষয়।
তবে এই আইনের লালবাতি দেখিয়ে এর আগেও বিশেষ বিবাহ আইন, বিদেশি বিবাহ আইন এবং এমনকি হিন্দু বিবাহ আইনের অধীনেও সমলিঙ্গের বিবাহের স্বীকৃতি চাওয়ার অন্যান্য অনেক আবেদন কেন্দ্র বাতিল করে বলেছে, এই আবেদনগুলি ভুল এবং সাময়িক।
ভারতীয় সংবিধানের ইতিহাসে এই বিষয়ে একটি ঐতিহাসিক রায় দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৭ ধারাকে অপরাধের আওতা থেকে বার করা হয়। এর আগে এই ধারায় সমকামী দুই ব্যক্তির মধ্যে যৌন সম্পর্ককে ‘অস্বাভাবিক অপরাধ’ বলে চিহ্নিত করা হয়েছিল। বলা হয়েছিল, সমকামী যৌন সম্পর্ক সম্মতিহীন যৌনতা, অপ্রাপ্তবয়স্কদের সঙ্গে যৌনতা এবং পশুর সঙ্গে যৌনতার সমান অপরাধের।
তবে ২০১৮ সালের রায়ে অপরাধের আওতা থেকে সমপ্রেম বেরিয়ে এলেও, সমকামী বিবাহ এখনও এ দেশে আইনবহির্ভূত। এখন আগামী ৩০ নভেম্বর দিল্লি হাইকোর্ট এ বিষয়ে কী রায় দেয়, সেদিকেই চোখ দেশের এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায়ের।