
দ্য ওয়াল ব্যুরো : অভিযোগ, সমাজে বিভেদ বাড়িয়ে তুলছে ফেসবুক (Facebook)। তা শিশুদের পক্ষে ক্ষতিকারক হয়ে উঠছে। ফেসবুক কর্তৃপক্ষ মানুষের স্বার্থের ওপরে কোম্পানির মুনাফাকে স্থান দেয়। এই বিতর্কের মধ্যে টাইম ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদে স্থান পেলেন ফেসবুকের কর্ণধার মার্ক জুকেরবার্গ। বিশ্ববিখ্যাত ওই পত্রিকার কভার স্টোরির শিরোনাম হল ‘ডিলিট ফেসবুক?’ ফেসবুককে কি কম্পিউটার থেকে মুছে দেবেন? প্রচ্ছদে দু’টি অপশন দেখানো হয়েছে। ক্যানসেল অথবা ডিলিট।
ফেসবুকের প্রাক্তন প্রোডাক্ট ম্যানেজার ফ্রান্সেস হোগেন চলতি সপ্তাহে মার্কিন কংগ্রেসের সদস্যদের সামনে বলেন, ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তার চেয়ে কোম্পানির মুনাফাকে গুরুত্ব দেয় ফেসবুক। অনেকে ফেসবুককে ব্যবহার করে হিংসা ছড়াতে চায়। কিন্তু ফেসবুক কর্তৃপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে সামান্যই ব্যবস্থা নিয়েছে।
টাইম ম্যাগাজিনের কভার স্টোরিতে বলা হয়েছে, ফেসবুকের যে টিম মুনাফার ওপরে মানুষের স্বার্থকে স্থান দিত, তাদের নিষ্ক্রিয় করে ফেলা হয়েছে। একসময় ফেসবুক ‘সিভিক ইন্টিগ্রিটি টিম’ নিয়োগ করেছিল। কিন্তু কোম্পানির বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্তে ওই টিমের কর্মীরা খুশি হতে পারেননি। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে ওই টিম ভেঙে দেওয়া হয়।
চলতি সপ্তাহে জুকেরবার্গ এই বিতর্কে মুখ খুলেছেন। তিনি বলেন, কোম্পানি মানুষের স্বার্থের ওপরে মুনাফাকে স্থান দেয় বলে যে অভিযোগ উঠেছে, তা সত্য নয়।
ফেসবুকের কর্মীদের উদ্দেশে এক নোটে জুকেরবার্গ বলেন, “কেউ কেউ বলছেন, ফেসবুকে এমন জিনিস পোস্ট করা হয় যাতে মানুষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা।” পরে তিনি লেখেন, আমার মনে হয় না কোনও সংস্থা এমন কিছু প্রচার করবে যাতে মানুষ ক্রুদ্ধ বা হতাশ হয়ে ওঠে।
গত বছরেই মার্ক জুকারবার্গ তথা ফেসবুক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ঘৃণাসূচক লেখা ও ছবি প্রচার করার অভিযোগ তুলে চাকরি ছাড়েন ২৮ বছর বয়সী এক সফটওয়ার ইঞ্জিনিয়ার। অশোক চান্দেওয়ানে নামে ওই ইঞ্জিনিয়ার ১৩০০ শব্দের ইস্তফাপত্র জমা দেন ফেসবুক কর্তৃপক্ষকে। তারপর ওয়াশিংটন পোস্টকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি যা বলেছিলেন তা শুধু বিস্ফোরক নয়, এর যদি চার আনাও সত্যতা থাকে তাহলে ফেসবুকের নিরপেক্ষতা, মূল্যবোধ নিয়ে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক বলেই মনে করছেন অনেকে।
তাঁর কথায়, “ফেসবুক এখন ঘৃণার স্বর্গরাজ্য। সংস্থার এখন উদ্দেশ্যই হয়ে দাঁড়িয়েছে ঘৃণা থেকে মুনাফা করা।” আমেরিকা থেকে সারা বিশ্বে কী ভাবে ঘৃণা ছড়ানো হচ্ছে তাও ওই চিঠিতে লিখেছেন অশোক। তাঁর কথায়, এক এক জায়গায় এক এক কায়দায় ঘৃণা ছড়ানো হচ্ছে। কোথাও বর্ণবিদ্বেষ, কোথাও লিঙ্গ বিদ্বেষ আবার কোথাও জাতি বা ধর্মীয় বিদ্বেষ। ভাষা বিদ্বেষের ঘৃণার কথাও উল্লেখ করেছেন তরুণ এই ইঞ্জিনিয়ার।
ফেসবুকের অন্যতম মুখপাত্র লিজ বর্জওইস বলেছেন, “আমরা ঘৃণা ছড়িয়ে মুনাফা করি না। বরং প্রতি বছর কোটি কোটি ডলার খরচ করা হয় কী ভাবে সমাজকে ঘৃণা, বিদ্বেষ থেকে দূরে রাখা যায়।”