
পশ্চিম মেদিনীরপুরের চন্দ্রকোণাকে আলুর গড় বলেই ডাকা হয়। এই এলাকায় মূলত জ্যোতি আলুর চাষ হয়। একে চাষের খরচ বেড়ে যাওয়ায় আলুর দাম ক্রমেই বাড়ছে, তার উপরে প্রাকৃতিক কারণেও আলুর চাষে ক্ষতি হলে দাম বেঁধে রাখা আর সম্ভব হবে না।
কয়েক বছর আগে এরাজ্যে আলুর দাম সাময়িক ভাবে বেড়েছিল। আলুর দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে তখন রাজ্যের বাইরে আলু পাঠানো বন্ধ করে দেওয়া হয়। পাল্টা হিসাবে পঞ্জাবের ব্যবসায়ীরাও সরাসরি এরাজ্যের ব্যবসায়ীদের আলুর বীজ পাঠানো বন্ধ করে দেন। তাতে ঘুরপথে বীজ আনতে মোটা টাকা গুনতে হচ্ছে। গত কয়েক বছরে বস্তাপিছু বীজের দর ৭০০-৮০০ টাকা থেকে বেড়ে ২০০০-২৫০০ টাকা হয়ে গেছে। আনুষঙ্গিক খরচও বেড়ে যাওয়ায় এখন আলুর দর হয়েছে কুইন্টালপিছু ২৪ টাকা। অর্থাৎ জ্যোতি আলু এখন কিলোপ্রতি ২৪-২৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
এখন যে আলু মাঠে রয়েছে তা তোলার কথা জানুয়ারি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের পরে। সেই সময় নতুন আলুর দাম অনেকটাই কমে যায়। কিন্তু আবহাওয়ার জন্য আলুচাষে ক্ষতি হলে তখন দাম বাড়বে বই কমবে না বলেই মনে করছেন চাষিরা।
ক্ষতির আশঙ্কায় প্রহর গুনছেন আলুচাষীরা। খারাপ আবহাওয়ার কারণে রোগপোকার আক্রমণ বাড়ছে আলু গাছে। দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন চন্দ্রকোণার আলুচাষিরা। গত কয়েকদিন ধরে বেশ কুয়াশা রয়েছে। ঘন কুয়াশা হলে আলুতে রোগপোকার আক্রমণ হয়। আলুচাষিরা চাইছিলেন রোদ ঝলমলে আকাশ। রোদ দূরে থাক, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ঝিরঝির করে বৃষ্টি শুরু হয়েছিল। সন্ধ্যার পর থেকে ভারী বৃষ্টি হয়েছে। তাতে জল জমে যায় আলুর খেতে। শুক্রবার সকাল সকাল থেকেই কোদাল হাতে জমির আল কেটে জল বার করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন কৃষকরা।
এখনই বৃষ্টির আশঙ্কা নেই বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। তবে বছরের শেষ দিন ও নতুন বছরের প্রথম দিনে বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। তাতে দুশ্চিন্তা আরও বেড়েছে চন্দ্রকোণার চাষিদের। ফের বৃষ্টি হলে তাঁদের ক্ষতি তো হবেই, পেঁয়াজের মতো আলুও চলে যেতে পারে ধরাছোঁয়ার বাইরে।