
দ্য ওয়াল ব্যুরো: অপ্রীতিকর ঘটনার সুবাদে গত দু-তিন সপ্তাহে বারে বারেই খবরে এসেছে জায়গাটির নাম। হিন্দুদের একটি উৎসবে ফতোয়া জারি হয়, মুসলিম ব্যবসায়ীরা এবার সেখানে চৈত্র সংক্রান্তির মেলায় দোকান দিতে পারবেন না। তা নিয়ে দেশব্যাপী বিতর্ক দেখা দেয়। চাপে পড়ে প্রশাসন (Communal Harmony)।
আরও পড়ুন: ‘ধর্ষণ হলে আগে প্রমাণ দিক, আমরাই থানায় বলব’ সিপিএমের মিছিলের পর বেঁফাস তৃণমূল নেতা
সেই মেলায় শেষ পর্যন্ত মুসলিম ব্যবসায়ীদের দোকান খোলার অনুমতি মিলেছে (Communal Harmony)। ১৫ জন শান্তিতে ব্যবসাও করছেন। তবে গত বুধবার থেকে শুরু হওয়া মেলা ঘিরে আছে সহিষ্ণুতার আরও এক নিদর্শন। ঐতিহাসিক চেন্নাকেশভা মন্দিরের রথৎসভা অর্থাৎ রথ উৎসবের এবারও সূচনা হয়েছে কোরান পাঠ করে। স্থানীয় মসজিদের মৌলবি সৈয়দ সাজ্জাদ বাসা রথের দড়িতে টান দেওয়ার মুহূর্তে প্রথা মেনে কোরান পাঠ করেন। তাঁর কথায়, এটাই তো আমাদের ঐতিহ্য। এটাই আমাদের মিলে মিশে থাকার পথ দেখায়।

ঘটনা হল, মুসলিম ব্যবসায়ীদের মেলায় স্টল দিতে আপত্তি তোলার পাশাপাশি মন্দির কমিটির কেউ কেউ রাজ্যটির চলতি ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা ঘিরে উত্তেজনার কারণে রথ টানার সময় কোরান পাঠ বন্ধ রাখার প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু জোরালো আপত্তি ওঠে। ঐতিহ্য রক্ষার পক্ষে সায় দেন বেশিরভাগ মানুষ। পাশে দাঁড়ায় প্রশাসনও।

রাজ্যটির নাম কর্ণাটক (karnataka)। গত এক-দেড় মাস যে রাজ্যটি খবরে এসেছে হিজাব বিতর্কে সাম্প্রদায়িক অশান্তির কারণে। সেই রাজ্যেই হাসান জেলার বেলুড়ে অবস্থিত ঐতিহাসিক চেন্নাকেশভা মন্দির। গত বুধবার থেকে সেখানে শুরু হয়েছে রথ উৎসব। গেরুয়া বাহিনী এবার দাবি তুলেছিল, মুসলিম ব্যবসায়ীদের মেলায় স্টল করতে দেওয়া যাবে না। সেই সঙ্গে রথ টানার সময় কোরান পাঠেও আপত্তি তোলে তারা।
গেরুয়া বাহিনীর চাপের মুখে বেলুড় শ্রী চেন্নাকেশভা স্বামী মন্দিরের এক্সিকিউটিভ অফিসার কর্ণাটক হিন্দু রিলিজিয়াস অ্যান্ড চ্যারিটেবল এনডাওমেন্ট আইন বলে মুসলিম ব্যবসায়ীদের স্টল দেওয়ার অনুমতি দিতে অস্বীকার করে নোটিস জারি করে দিয়েছিলেন। কিন্তু রাজ্য সরকারের হস্তক্ষেপের পর সেই বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহার করে নেয় মন্দির কর্তৃপক্ষ। শান্তিতেই পালিত হচ্ছে উৎসব।
চেন্নাকেশভা হল একটি বিষ্ণু মন্দির। দ্বাদশ শতাব্দিতে তৈরি মন্দিরটির নির্মাণ কাজ চলে ১০৩ বছর ধরে। ওই মন্দিরের লাগোয়া কিছু মন্দির এবং অন্য ধর্মের উপাসনাস্থলকে নিয়ে গড়ে উঠেছে ইউনেসকোর হেরিটেজ সাইট।