Latest News

রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সমীক্ষা: মানুষের আত্মবিশ্বাস ঐতিহাসিকভাবে তলানিতে ঠেকেছে, এত নিরাশাবাদী আগে কখনও হয়নি দেশবাসী

দ্য ওয়াল ব্যুরো: রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কনজিউমার কনফি়ডেন্স সার্ভে প্রকাশিত হয়েছে বৃহস্পতিবার। যা স্পষ্ট জানাচ্ছে, কোভিডের ধাক্কা শুধু অর্থনীতিতে লাগেনি, মানুষের মনোবলই ভেঙে গিয়েছে। কাজ হারানো, বেতন কমে যাওয়া, মন্দা—সবমিলিয়ে এত নিরাশাবাদী অতীতে কখনওই ছিল না দেশবাসী।

সার্ভে জানাচ্ছে বর্তমান পরিস্থিতির সূচক (কারেন্ট সিচুয়েশন ইনডেক্স তথা সিএসআই) ঐতিহাসিক ভাবেই কম। মে মাসে তা ছিল ৬৩.৭ শতাংশ। অথচ মার্চে অর্থাৎ যখন কোভিডের সংক্রমণ পুরোমাত্রায় ছড়িয়ে পড়েনি সেই সময়ে সূচক ছিল ৮৫.৬।

শুধু এ বছর নয়, আগামী বছরের সম্ভাবনা নিয়েও মানুষের হতাশা তৈরি হয়েছে। ভবিষ্যতের থেকে প্রত্যাশার সূচক (ফিউচার এক্সপেক্টেশনস ইনডেক্স তথা এফইআই) মার্চ মাসে ছিল ১১৫.২। তা মে মাসে এসে দাঁড়িয়ে ৯৭.৯। কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদী জমানায় এই সূচক এই প্রথমবার ১০০-র নিচে নেমে গেল।

দেশের অর্থনীতি, কর্মসংস্থানের সার্বিক চিত্র, নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর দামদস্তর, আয়, খরচ ইত্যাদি সম্পর্কে সাধারণ মানুষ তথা উপভোক্তাদের মানসিকতা আন্দাজ করতে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এই সমীক্ষা নির্দিষ্ট সময়ান্তরে চালায়।

পর্যবেক্ষকদের মতে, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের এই সমীক্ষার মধ্যেই আরও অশনিসংকেত রয়েছে। তা হল, বেতন কমে যাওয়া বা চাকরি হারানোর ব্যাপারে বহু মানুষের মনে আতঙ্ক রয়েছে। তাই তাঁরা খরচ কমাবেন। অর্থাৎ বাজারে চাহিদা আরও কমে যেতে পারে।

সার্ভের একটি অংশে সেই বিষয়টি কার্যত বলাও হয়েছে। তাতে লেখা হয়েছে যে, মানুষ ইতিমধ্যে বেহিসাবি খরচ কমিয়ে দিয়েছে। কারণ, তাঁরা মনে করছেন এই পরিস্থিতি আপাতত চলবে। সামগ্রিক ভাবে মানুষ যে খরচ করছেন, তার মধ্যে শুধু রয়েছে নিত্য প্রয়োজনের সংসার চালানোর সামগ্রী। আর কোনও খাতেই কেউ বিশেষ খরচ করছেন না।

টেলিফোনের মাধ্যমে গোটা দেশের ১৩ টি শহরের ৫৩০০ পরিবারের সঙ্গে কথা বলে এই সমীক্ষা করা হয়েছে। যে শহরগুলিতে মহামারীতে বেশি আক্রান্ত সেখানে সমীক্ষার জন্য বেশি করে নমুনা নেওয়া হয়েছে।

গত মাসের শেষ দিকে সাংবাদিক বৈঠকে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর শক্তিকান্ত দাস পরিষ্কার করেই জানিয়েছিলেন, চলতি অর্থবর্ষে তীব্র মন্দার দিকে এগোচ্ছে ভারত। অর্থনীতিকরাও বলছেন, বৃদ্ধির পরিবর্তে এবার দেশের অর্থনীতি সংকুচিত হতে পারে। কেন না মহামারী রুখতে দু’মাসের বেশি সময় ধরে যে লকডাউন চলেছে, তাতে অর্থনৈতিক কার্যকলাপ প্রায় স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে। উৎপাদন একেবারেই হয়নি। কৃষি উৎপাদনেও সমস্যা হয়েছে। তার ফলে মানুষের উপার্জন কমেছে, কাজ হারিয়েছেন প্রচুর মানুষ।

রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সমীক্ষায় বলা হয়েছে, মানুষের মনে আশঙ্কা রয়েছে যে আগামী দিনে খাদ্যদ্রব্যের দাম আরও বাড়তে পারে। ফলে সেই কারণেও এখন খরচ খরচার বিষয়ে খুবই সতর্ক রয়েছে অধিকাংশ পরিবার।

You might also like