
দ্য ওয়াল ব্যুরো : ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চিনের উহান শহর থেকে বিশ্বে প্রথমবার ছড়িয়ে পড়ে করোনাভাইরাস। কয়েক মাসের মধ্যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছিল চিন। কিন্তু এখন কোভিডের ডেল্টা ভ্যারিয়ান্টের জন্য সেদেশে সংক্রমণ ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। উহানের পরে সবচেয়ে বড় করোনা ঢেউয়ের মুখে পড়েছে চিন। রাজধানী বেজিং ও তার আশপাশে আরও পাঁচটি প্রদেশে ডেল্টা ভ্যারিয়ান্টে সংক্রমিতদের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে।
গত ২০ জুলাই নানজিং শহরে কয়েকজনের শরীরে ডেল্টা ভ্যারিয়ান্টের উপস্থিতি টের পাওয়া যায়। তারপরেই ওই অঞ্চল থেকে সব বিমান বাতিল করে দেওয়া হয়েছিল। উহানের পরে নানজিং থেকে চিনে ফের বড় ধরনের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এখন সেখানে গণ হারে কোভিড টেস্টিং করা হচ্ছে। আংশিক লকডাউন জারি করা হয়েছে শহরে। শহরের প্রতিটি চেকপয়েন্টে বসেছে পাহারা। মানুষের ঢোকা-বেরোন নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। কয়েকটি ক্ষেত্রে বন্ধ রাখা হয়েছে গণ পরিবহণ।
নানজিং পুর প্রশাসনের এক স্বাস্থ্য অধিকর্তা জানিয়েছেন, ১০ জুলাই রাশিয়া থেকে একটি বিমান নানজিং বিমান বন্দরে অবতরণ করে। সেই বিমানটি পরিষ্কারের কাজে যাঁরা নিযুক্ত ছিলেন, তাঁদের মধ্যে প্রথমে ডেল্টা ভ্যারিয়ান্টের সংক্রমণ হয়। শিনহুয়া নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, ওই সাফাইকর্মীরা কোভিড প্রোটোকল মেনে চলেননি। চিনের কমিউনিস্ট পার্টি থেকে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে তিরস্কার করে বলা হয়েছে, তাদের কাজে পেশাদারিত্বের অভাব রয়েছে।
নতুন করে কোভিডের ঢেউ শুরু হওয়ার পরে প্রশ্ন উঠেছে চিনে তৈরি ভ্যাকসিন নিয়ে। অনেকের ধারণা চিনা ভ্যাকসিন ডেল্টা ভ্যারিয়ান্ট ঠেকানোর উপযুক্ত নয়। যদিও সম্প্রতি যাঁরা আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁদের কতজন ভ্যাকসিন নিয়েছিলেন এখনও জানা যায়নি।
কোভিড পরিস্থিতি ফের উদ্বেগজনক হয়ে উঠতে পারে ভারতেও। শনিবারই কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে, ভারতের ১০ টি রাজ্যে বাড়ছে কোভিড সংক্রমণ। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ওই ১০ টি রাজ্যের যে জেলাগুলিতে পজিটিভিটির হার ১০ শতাংশের বেশি, সেখানে কড়া বিধিনিষেধ জারি করা উচিত। সেইসঙ্গে সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলিকে বলা হয়েছে, তারা যেন ৪৫ থেকে ৬০ বছর বয়সী ও ষাটোর্ধ্বদের দ্রুত টিকাকরণের উদ্যোগ নেয়। কারণ এই বয়সের মানুষের মধ্যেই কোভিডে মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যে রাজ্যগুলিতে সম্প্রতি কোভিড সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে, তার মধ্যে আছে কেরল, কর্নাটক, মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু, অসম, মিজোরাম, মেঘালয়, অন্ধ্রপ্রদেশ এবং মণিপুর। ওই রাজ্যগুলির ৪৬ টি জেলায় পজিটিভিটির হার ১০ শতাংশের বেশি। আরও ৫৩ টি জেলায় পজিটিভিটির হার পাঁচ থেকে ১০ শতাংশ। কেন্দ্রীয় সরকার বলেছে, কোভিড বিধি পালনে সামান্য শিথিলতা দেখালেই ওই জেলাগুলির অবস্থা আরও খারাপ হবে।