
নোটবন্দি শব্দের সঙ্গে আমাদের সকলেরই প্রায় পরিচয় ঘটেছে ২০১৬ সালে। এ দেশে মোদী সরকার আচমকা সমস্ত পুরনো ৫০০ ও হাজার টাকার নোট বাতিল করে নতুন দু’হাজার ও পাঁচশো টাকার নোট ছাপানোর সিদ্ধান্ত নেয়। দাবি করা হয়, বাজারে বিপুল পরিমাণে ছড়িয়ে পড়া জালনোট রুখতেই এই সিদ্ধান্ত। সেই একই রকম সিদ্ধান্ত এবার নিল চিন। সরকারের তরফে জানানো হল, সমস্ত পুরনো চিনা নোট বাতিল করে ছাপানো হয়েছে ৪০০ কোটি ইউয়ান (চিনা মুদ্রা)। বাজারে হাত-ফেরতা পুরনো নোটের মাধ্যমে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে, এমনই আশঙ্কায় এই সিদ্ধান্ত।
জানা গেছে, নতুন করে ছাপানো নোট ও কয়েন বাজারে ছাড়ার আগে তা অতিবেগুনি রশ্মি দিয়ে বিশেষ ভাবে জীবাণুমুক্ত করা হবে। তার আগে যতটা সম্ভব পুরনো নোট সংগ্রহ করে নেবে চিনের সেন্ট্রাল ব্যাংক। তার বদলে মানুষের হাতে তুলে দেওয়া হবে নতুন নোটের বান্ডিল।
গত বছরের ডিসেম্বরে প্রথম আত্মপ্রকাশ করা নোভেল করোনাভাইরাস এক মাসের মধ্যেই এমন ভয়ঙ্কর রূপ নেওয়ার কারণ হল, এর দ্রুত ছড়িয়ে পড়া। কথা বলার মাধ্যমে, স্পর্শের মাধ্যমে– সব রকম ভাবে ভয়ানক হারে ছড়াচ্ছে এই ভাইরাস। তাই একজনের হাত থেকে অন্য জনের হাতে টাকা আদান-প্রদানের সময়েও ছড়িয়ে পড়ছে ভাইরাস।
চিনের সেন্ট্রাল ব্যাঙ্কের তরফে নিশ্চিত করা হয়েছে, এভাবে নোট বাতিলের জন্য সাধারণ মানুষের কোনও অসুবিধা হবে না। অত্যন্ত দ্রুততা এবং পেশাদারিত্বের সঙ্গে পুরনো নোটগুলি বাতিল করে নতুন নোট বাজারে আনার পদ্ধতিটি কার্যকর করা হয়েছে। বিশেষত হুবেই প্রদেশ, যেখান থেকে মূলত করোনাভাইরাস ছড়িয়েছে, সেখানের পুরনো নোট সংগ্রহ করে গুদামে রাখা হয়েছে।
২০১৬ সালে ভারতে নোটবন্দি পরিস্থিতির সুফল বা কুফল নিয়ে বিতর্কের অবকাশ রয়েছে। এই পদ্ধতি প্রয়োগ করতে গিয়ে সারা দেশের মানুষকে যে বিপুল হয়রানির মুখে পড়তে হয়েছিল, সে তথ্যও সকলের জানা। এখন চিনের এই নোটবন্দি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ একটুও রুখতে পারে কিনা, সেটাই এখন দেখার।