
দ্য ওয়াল ব্যুরো, বীরভূম: অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mondal) চিকিৎসা করে প্রথমে বেড রেস্টের পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু পরদিন সকালেই ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে তিনি জানান, ‘চাপের মুখে পড়েই সাদা কাগজে বেডরেস্ট লিখতে বাধ্য হয়েছিলাম’। সাংবাদিকদের সামনে বলেন, ‘আমি ফ্যামিলি ম্যান, শিরদাঁড়া বেঁকাতে পারব না।’ এরপরই অস্থায়ী ছুটিতে চলে গেছেন বোলপুর হাসপাতালের চিকিৎসক ডাক্তার চন্দ্রনাথ অধিকারী (Chandranath Adhikari)। আর শুক্রবার সন্ধেবেলা তিনি নিজের বাড়িতে সাংবাদিক বৈঠক করে রীতিমত বোমা ফাটালেন। বলেছেন, ‘আমি প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে মুখ খুলেছি, তাই কিছুটা সাবধানতা অবলম্বন করছি।’
শুক্রবার সকালে আচমকাই তাঁর বাড়িতে গিয়েছিলেন সিবিআই আধিকারিকরা। চন্দ্রনাথবাবুকে দীর্ঘক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ করেন তাঁরা। সিবিআই অফিসাররা তাঁর কাছে জানতে চান, ঠিক কী হয়েছিল ওই দিন অনুব্রত মণ্ডলের বাড়িতে। এমনকি, হাসপাতাল সুপার বুদ্ধদেব মুর্মুর সঙ্গে তাঁর ফোনে কথোপকথনের রেকর্ডও সংগ্রহ করেন তদন্তকারী অফিসাররা৷ এরপরই সন্ধেবেলা নিজের বাড়িতেই সাংবাদিক বৈঠক ডাকেন ডাক্তারবাবু। তিনি বলেন, ‘অনুব্রত মণ্ডল প্রভাবশালী লোক। তাঁর বিরুদ্ধে কথা বলেছি, তাই কিছুটা সাবধানতা অবলম্বন করতে হচ্ছে আমায়। আসলে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে সংসার করি তো। তাই প্রিয়জনদের জন্য চিন্তা থেকেই যায়।’
তবে তিনি যে শাসকদল বা প্রভাবশালী ব্যক্তিদের থেকে কোনওরকম হুমকি পাননি, সেকথাও জানিয়ে দেন। বলেন, ‘আমি কারও থেকে কোনওরকম হুমকি পাইনি। নিরাপত্তাহীনতাও বোধ করছি না। শুধু সাবধান থাকছি। একইসঙ্গে চন্দ্রনাথবাবু জানান, ‘অনেকে আমায় বিজেপির লোক বলে দাগিয়ে দিচ্ছেন। তাঁদের কথা গায়ে মাখব না। আমি একজন ডাক্তার। তাই যতদিন ডাক্তার থাকব, দলমত নির্বিশেষে নিজের শিরদাঁড়া সোজা রাখব।’
‘আমি ফ্যামিলি ম্যান, নিজের মেরুদণ্ড বেঁকাতে পারব না’! বললেন অনুব্রতকে দেখা সেই ডাক্তার
উল্লেখ্য, সোমবার অনুব্রত মণ্ডল এসএসকেএম থেকে বোলপুরে ফেরার পর মঙ্গলবার সকালেই তাঁর বাড়িতে গিয়ে চেকআপ করেন বোলপুর হাসপাতালের চিকিৎসক চন্দ্রনাথ অধিকারী। অন্তত এক সপ্তাহ ‘বেডরেস্ট’র পরামর্শ দিয়েছিলেন বীরভূমের বেতাজ বাদশা অনুব্রত ওরফে কেষ্ট মণ্ডলকে। পরে সাধারণ জনগণ তাঁকে নিয়ে ছি ছি শুরু করতেই বোধোদয় হয় ডাক্তারবাবুর। বুধবার সকালেই সাংবাদিকদের বলেন, প্রভাবশালীদের চাপে বেডরেস্টের কথা লিখতে হয়েছিল তাঁকে।