
দ্য ওয়াল ব্যুরো: সকাল থেকে আকাশের মুখ ভার। যেন এখনই ঝেঁপে বৃষ্টি নামবে শহরজুড়ে। একটু বেলা গড়াতেই শুরু হয়ে গেল টুপটাপ। মাঝজ্যৈষ্ঠের গনগনে রোদের জায়গায় আজকাল আকাশে বর্ষার মেঘ উঁকি দিচ্ছে হামেশাই। এমন বর্ষাঘেঁষা দিনে বাঙালির পাতে কি ইলিশ না হলে চলে! বাজারে বাজারে তাই ইলিশের খোঁজ চলছেই।
এই ইলিশের (Chandpur Hilsa) জন্য মন কেমন করা দিনগুলোতেই হঠাৎ একদিন পদ্মাপাড়ে পাড়ি জমালেন বিশিষ্ট সাহিত্যিক হিমাদ্রি কিশোর দাশগুপ্ত। ওপার বাংলায় গিয়ে একবার ঢুঁ মেরে এলেন ইলিশের বাড়ি চাঁদপুরে।
হ্যাঁ। ঢাকা থেকে কুমিল্লা হয়ে তিন ঘণ্টার দূরত্বে এই চাঁদপুরেই লুকিয়ে আছে বাঙালির প্রিয় ইলিশ মাছের বারো মাসের আস্তানা। পদ্মা, মেঘনা আর ডাকাতিয়া নদী একসঙ্গে এসে হাত ধরাধরি করেছে চাঁদপুরে। সারাবছর এখানে ইলিশের আনাগোনা লেগেই থাকে। জোয়ারের ঠেলায় ঢেউয়ের সঙ্গে আসে রাশি রাশি ইলিশ। স্বাদও একেবারে অতুলনীয়। যে চাঁদপুরের ইলিশ একবার খেয়েছে সেই নাকি বলে উঠেছে ‘সাধু সাধু’।
চাঁদপুরের এই মাছের বাজার ইলিশের (Chandpur Hilsa) সেরা ঠিকানা। এখানে এখন এই প্রাক-বর্ষায় এক কেজির ইলিশ মিলছে ১৮০০ টাকায়। ওজন দেড় কেজি ছুঁলেই একটা ইলিশের জন্য ২২০০ টাকা পর্যন্ত দাম হাঁকাচ্ছেন বিক্রেতারা। চাঁদপুরে ইলিশ কখনও ফুরোয় না।
তবে কানকো টিপে, মাথা নেড়েচেড়ে ভাল স্বাদের ইলিশ চিনে নিতে হবে। সেখানে কোনও ফাঁকি চলে না। চাঁদপুরের বাজারের মাছ বিক্রেতারা বলছেন, সহজেই চাঁদপুরের খাঁটি ইলিশ চিনে নেওয়া যায় তাদের চোখ দেখে। এই ইলিশের চোখের রঙ হয় কুচকুচে কালো। মাথাটা দেহের তুলনায় ছোট, পেট মোটা। সবমিলিয়ে চ্যাপ্টা আকারের ইলিশ দেখলেই বুঝতে হবে সে এসেছে চাঁদপুরের পদ্মা থেকে। সব বাজারে এমন খাঁটি মাছ তো মেলে না, তাই এই ইলিশের জন্য গাঁটের কড়িও একটু বেশিই খসাতে হয়। অবশ্য বেশি দাম দিয়ে ভাল মাছ খাওয়ার মতো রসিক বাঙালির অভাব নেই। এপার হোক বা ওপার, চাঁদপুরের ইলিশের চাহিদা তাই তুঙ্গে।
বাংলাদেশের পদ্মাপাড়ে ইলিশের বাড়ি চাঁদপুর খাদ্যরসিক বাঙালির স্বর্গরাজ্য। ভরাবর্ষায় একবার অন্তত গরম খিচুড়ির সঙ্গে এই ইলিশের স্বাদ চেখে না দেখলেই নয়। কী বলেন?