
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বক্সা টাইগার রিজার্ভের (Buxa Tiger Reserve) ভেতরে থাকা হোটেল, রিসর্ট, রেস্টুরেন্ট-সহ সমস্ত বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান বন্ধের নির্দেশে মাথায় হাত পড়ল রিসর্ট মালিকদের। উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার কথা ভাবছেন তাঁরা।
২০১৫ সালে পরিবেশপ্রেমী সুভাষ দত্তের দায়ের করা একটি মামলার জেরে ৩০ মে এই রায় দিয়েছে ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইবুনালের (National Green Tribunal) বিশেষ বেঞ্চ। বুধবার এই বিষয়ে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন সুভাষ দত্ত। দু-মাসের মধ্যে বক্সা টাইগার রিজার্ভের ভেতরে থাকা সব হোটেল, রিসর্ট, রেস্টুরেন্ট বন্ধ করে দিতে বলেছে গ্রিন ট্রাইবুনাল। না হলে সব নির্মাণ ভেঙে গুড়িয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সুভাষবাবু বলেন, “এটি একটি ঐতিহাসিক রায়। এই পৃথিবী শুধু মানুষের জন্য নয়। গাছপালা পশু পাখি সকলেরই এখানে বাঁচার অধিকার আছে। এই রায় যেন সকলে মেনে চলেন একজন পরিবেশ সৈনিক হিসেবে তা আমি দেখব। রায়ের কপি আলিপুরদুয়ারের জেলাশাসক, বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের পিএফডি সহ সংশ্লিষ্ট সকলকেই পাঠিয়েছে আদালত।”
জানা গিয়েছে ৩০ মে ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইবুনালের রায়ে বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের জঙ্গলে হোটেল, রিসর্ট, ক্যাম্পিং স্টেশন সহ সমস্ত প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বনাঞ্চলের এক কিলোমিটারের মধ্যে কোনও রকম ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান থাকবে না বলে নির্দেশ দিয়েছে গ্রিন ট্রাইবুনাল। আগামী দু-মাসের মধ্যে এই বনাঞ্চলে থাকা হোটেল, রিসোর্ট, ক্যাম্পিং স্টেশন সব বন্ধ করে দিতে বলা হয়েছে।
২০১৭ সালের ২৭ জুলাই মাসে গ্রিন ট্রাইবুনালে রাজ্য পর্যটন বিভাগ জঙ্গলের ভেতর থাকা কিছু ক্যাম্পিং স্টেশন চালু করার আবেদন জানিয়েছিল। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত জানিয়েছে এগুলোকে রাজ্য বন দফতরকে হস্তান্তর করে নেচার ইন্টারপ্রিটেশন কাম ট্রেনিং সেন্টার হিসেবে চালু রাখতে হবে। তা না করা হলে দু-মাস পর সেগুলোকেও ভেঙে গুড়িয়ে দিতে বলেছে আদালত। এই রায়ে ওদলাবাড়ি নদীর ১০০ ফুটের মধ্যে পাথর ভাঙার মিল বন্ধ করারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই রায় নিয়ে প্রশ্ন করা হলে বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের ফিল্ড ডিরেক্টর অপূর্ব সেন জানান, এমন একটি রায়ের কথা তিনি শুনেছেন। তবে রায়ের কপি এখনও হাতে পাননি। তাই বিষয়টা নিয়ে এখনই কোনও মন্তব্য করতে চান না তিনি।
রাজ্যের বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, “বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের (Buxa Tiger Reserve) হোটেল রিসর্ট নিয়ে গ্রিন ট্রাইবুনাল একটি রায় দিয়েছে। বৃহস্পতিবার রায়টা দেখবেন। তারপরেই এই বিষয়ে যা মন্তব্য করার করবেন।”
গ্রিন বেঞ্চের রায়ে মাথায় হাত পড়েছে পর্যটন ব্যবসায়ীদের। ডুয়ার্স ট্যুরিজম ডেভলপমেন্ট ওয়েলফেয়ার সোসাইটির সভাপতি পার্থসারথী রায় বলেন, এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাবেন তাঁরা।