
রাজনীতির পর্যবেক্ষকরা বলছেন, বিজেপি এবং প্রশাসন– দু’তরফেরই আজ যেন বড় পরীক্ষা। কারণ এই অভিযানের উপর নির্ভর করছে দু’পক্ষই শক্তিপ্রদর্শনের কতটা সুযোগ কাজে লাগাতে পারল।
আজকের এই অভিযানের নেতৃত্বে রয়েছেন দিলীপ ঘোষ। এখন তাঁর নেতৃত্বে কত মানুষের জমায়েত হয়, প্রতিবাদের ঝাঁঝ কতটা চড়া হয়, কতটা বিব্রত করা যেতে পারে পুলিশ-প্রশাসনকে, সেটাই যেন বিজেপির পাখির চোখ। অন্যদিকে পুলিশ ও প্রশাসনের কাছে চ্যালেঞ্জ হল, তারা বলপ্রয়োগ না করে কতটা রুখতে পারে ঝামেলা। কারণ বিরোধীদলের তরফে প্রায় সবসময়ই অভিযোগ থাকে, পুলিশ মারদাঙ্গা করে ভেস্তে দিয়েছে প্রতিবাদী কর্মসূচি। এক্ষেত্রে তেমনটা না করেই কী করে আটকানো যায় বিজেপিকে, সেটাই উদ্দেশ্য প্রশাসনের।
বিজেপি যে কর্মসূচির কথা জানিয়েছে, তা হল তাদের মূল জমায়েত হবে ওয়েলিংটন স্কোয়ারের সামনে। সেখান থেকে মিছিল এসএন ব্যানার্জি রোড হয়ে যাবে কর্পোরেশনের দিকে। ওয়েলিংটনের জমায়েতের জন্য কলকাতা ও হাওড়া থেকে বেশ কিছু মিছিল আসবে বলে খবর। ঠিক হয়েছে, ডজন খানেক স্করপিও ও বেশ কিছু মোটর সাইকেল নিয়ে সোমবারের জমায়েতে যাবেন বিজেপি কর্মীরা। সেই নেতা আবার নির্দেশ দিয়েছেন, যাঁরা কর্পোরেশন ঘেরাওয়ে যাবেন তাঁদের বয়স যেন ৩০-৩৫ এর মধ্যে হয়।
এসব আগাম আন্দাজ করেই প্রস্তুতি সেরে রেখেছে লালবাজার। বিজেপির অভিযান ঠেকাতে একজন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার, তিন জন যুগ্ম পুলিশ কমিশনার এবং আট জন ডিসিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে মোতায়েন থাকবে প্রায় এক হাজার পুলিশ। জল কামান ও কাঁদানে গ্যাসও রাখছে পুলিশ। কোভিড পরিস্থিতিতে এমনিতেই জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। মনে করা হচ্ছে মিছিল কর্পোরেশনের অনেক আগেই আটকে দেবে পুলিশ।
তাত্পর্যপূর্ণ হল, বিজেপির তরফে যে সূচি দেওয়া হয়েছে তাতে রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকেই এই অভিযানের নেতৃত্ব হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। সেইসঙ্গে সায়ন্তন বসু, অগ্নিমিত্রা পলের নামও রয়েছে। কিন্তু বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নাম নেই।
স্বাভাবিক ভাবেই দলের মধ্যে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে, তাহলে কি ভোটের পরের প্রথম বড় কর্মসূচিতেই শুভেন্দু থাকবেন না? দিলীপ-শুভেন্দু দূরত্ব নিয়ে যখন জোর চর্চা চলছে তখন আজকের কর্মসূচির প্রাক বিজ্ঞপ্তি নতুন জল্পনা সংযোজিত করেছে। রাজনৈতিক মহলের মতে, সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধী দলের ঝাঁঝ দেখানো এবং বিজেপির অভ্যন্তরীণ সমীকরণ– সব দিক থেকেই আজকের কর্মসূচি তাত্পর্যপূর্ণ।