
অমল সরকার
রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে (CV Anand Bose) নিয়ে রাজ্য বিজেপিতে যে মতান্তর রয়েছে মঙ্গলবার তা দিনের আলোর মতই স্পষ্ট হয়ে গেল। এও পরিষ্কার হয়ে গেল সব বিষয়ে এখনও একই পংক্তিতে নেই শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) ও দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। মত ও পথের স্পষ্ট ফারাক রয়েছে বিরোধী দলনেতা ও প্রাক্তন বিজেপি রাজ্য সভাপতির।
মঙ্গলবার এক সাক্ষাৎকারে বিজেপি সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত রাজ্যপালের তীব্র সমালোচনা করেছেন। তাঁর অভিযোগ, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে অপমান করেছে রাজভবন। এই রাজ্যপাল নবান্নের জেরক্স মেশিন হয়ে গেছেন। রাজভবন কার্যত তৃণমূলের পার্টি অফিসে পরিণত হয়েছে।
কিন্তু স্বপন এই বিস্ফোরক অভিযোগের পুরোপুরি বিপরীত অবস্থান নিয়েছেন দিলীপ ঘোষ। দ্য ওয়ালকে তিনি বলেছেন “রাজভবন কীভাবে চলছে, রাজ্যপালের ভূমিকা কেমন এসব দেখা আমার কাজ নয়। আমি কোনওদিনই রাজভবনের দিকে চেয়ে রাজনীতি করি না। বাকিদেরও বলব, রাজভবন নির্ভরতা কমাতে”। রাজ্যপালের বিরুদ্ধে স্বপনের সরাসরি অভিযোগ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে দিলীপ বলেন, “আমার তেমন কিছু মনে হয়নি। তবে আমি এটা বলব যে রাজভবন সকলের জন্য উন্মুক্ত থাকা বাঞ্ছনীয়।”
গোটা বিতর্কের সূত্রপাত ঘটেছে রাজভবনের হাতেখড়ি অনুষ্ঠানকে ঘিরে। ২৬ জানুয়ারি প্রজাতন্ত্র দিবসের বিকালে রাজভবনের সরকারি অনুষ্ঠানের ফাঁকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে রাজ্যপালের হাতেখড়ি হবে। ওই দিনই সরস্বতী পুজো। কেরলের মানুষ প্রাক্তন আমলা আনন্দ বোস বাংলার রাজ্যপাল হিসাবে শপথ নেওয়ার আগেই ঘোষণা করেছিলেন, তিনি শিক্ষক রেখে বাংলা শিখতে চান।
রাজভবনের ওই অনুষ্ঠান নিয়ে বিরক্ত শুভেন্দু-স্বপনরা। অনেকের মতে, মঙ্গলবার স্বপন দাশগুপ্ত যে সব অভিযোগ করেছেন তা আসলে শুভেন্দুরই কথা।
এর আগে জগদীপ ধনকড় রাজ্যপাল থাকাকালীন শুভেন্দু প্রায়ই রাজভবনে ছুটতেন। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার সহ বিধায়কদের অনেকেই শুভেন্দুর সঙ্গী হতেন। কিন্তু রাজভবনকে ঘিরে গণেশ প্রদক্ষিণের মতো এই রাজনীতি বরাবরই না পসন্দ দিলীপের। তিনি রাজ্য সভাপতি থাকার সময়ও রাজভবন এড়িয়ে চলতেন। দ্য ওয়াল-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তখন দিলীপবাবু বলেছিলেন, রাজভবনের মুখ চেয়ে আমি রাজনীতি করি না। কোনও রাজ্যপাল আমাদের ক্ষমতায় পৌঁছে দেবেন না। আরও বলেছিলেন, আমি রাজপথে লড়াইয়ে বিশ্বাস করি। রাজভবনের মুখ চেয়ে রাজনীতি করার পক্ষপাতি নই। সেই অবস্থানে এখনও দিলীপ অনড়। মঙ্গলবার তিনি বলেছেন, “রাজভবন কীভাবে চলছে সেটা আমি জেনে কী করব। আমার কাজ রাস্তায় লড়াই করা”।
তবে রাজ্যপালের হাতেখড়ি নিয়ে দিলীপ ঘোষ বলেন, শুনেছি উনি পণ্ডিত মানুষ। এমন শিক্ষিত মানুষের আবার হাতেখড়ি কী!
বিজেপি বাংলার শত্রু, রাজ্যপাল বাংলা শিখলে ওদের গা জ্বালা করে: কুণাল