
অমল সরকার
রাঁচির জেল থেকে জামিনে মুক্ত লালুপ্রসাদ (Lalu prasad Yadav) যাদব দিন কয়েক হল পাটনায় ফিরেছেন। যে পশুখাদ্য কেলেঙ্কারিতে যুক্ত থাকায় তাঁর জেল হয়েছে সেই অপরাধের কথা জানাজানি হয়েছিল বছর সাতাশ আগে। লালুপ্রসাদ তখন বিহারের (Bihar) মুখ্যমন্ত্রী এবং গরিবদের স্বঘোষিত ‘মসিহাঁ’ এবং স্বজাতি যাদবদের চোখে ভগবান। সিবিআই কর্তা উপেন বিশ্বাস তত দিনে জানিয়ে দিয়েছেন, হাজার কোটি টাকার ওই কেলেঙ্কারির নায়ক স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী।

সেই সময় এক যাদব মহল্লায় জানতে চেয়েছিলাম, গরিবের কোটি কোটি টাকা মেরে দেওয়া লোকটির নামে কী করে যাদবকুলপতি বলে জয়ধ্বনি দেন তাঁরা? সে কথায় উপস্থিত জনতার রোষের মুখে যিনি রক্ষা করেছিলেন, পরিস্থিতি ঠান্ডা হলে তিনি বলেছিলেন, ‘জব জগন্নাথ মিশ্রজি চারা (পশুখাদ্য) খাতে থে, তব আপ পত্রকার লোগ কুছ নহি বোলা। যব হামারা আদমি চারা খায়া তো আপ লোগ শোর মচা রহে হ্যায়!’
জগন্নাথ মিশ্র বিহারের (Bihar) আর এক প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি ব্রাহ্মণ। তাঁর বিরুদ্ধেও পশুখাদ্য কেলেঙ্কারিতে যুক্ত থাকার অভিযোগ ছিল। তাঁর কার্যকাল থেকেই সরকারি অডিট সংস্থা সিএজি এই অনিয়মের উল্লেখ করে আসছিল। কিন্তু বিহার বিজেপি এবং পাটনার সংবাদমাধ্যম তা নিয়ে তেড়েফুঁড়ে ওঠে লালুপ্রসাদের জনপ্রিয়তা দিন দিন লাউ-কুমড়োর ডগার মতো বাড়তে শুরু করায়।
*****************
সেদিন সেই দেহাতি বিহারির কথায় যে সত্যটি লুকিয়ে ছিল, তা কিন্তু অস্বীকার করার নয়। কে না জানে, দুর্নীতি করতে হলেও ক্ষমতার মধুভাণ্ডটির দখল পাওয়া জরুরি। আর তা নিয়েই যত বিবাদ, সংঘাত। ক্ষমতার মধু ভাণ্ডারের একটি হল সরকার।
ভারতীয় সমাজে ক্ষমতার আসল দণ্ডটি হল সনাতন বর্ণ ব্যবস্থা। বিহারে সেই ব্যবস্থায় আঘাত হানতে লালুপ্রসাদ তত দিনে ‘ভূরাবাল কো খতম করো’ ডাক দিয়েছেন। খতম মানে ক্ষমতাচ্যুত করা। ভূ-ভূমিহার, রা-রাজপুত, বা-ব্রাহ্মণ ল বা লালা-কায়স্থ—উচ্চবর্ণের এই চার জাতি বিহারের জনসংখ্যার মাত্র ১৫ শতাংশ হলেও জমি, চাকরি, শিক্ষা, পঞ্চায়েত, পুরসভা, সমবায়, বিধানসভা, লোকসভার সিংহভাগ তাদের দখলে। কোনও কোনও ক্ষেত্রে ৯০-৯৫ শতাংশ। বাকি জাতির তখন ছায়া পর্যন্ত মারায় না তারা।
*****************
লালুপ্রসাদের জনপ্রিয়তায় তখন শুধু বিজেপি নয়, প্রমাদ গোনেন ছাত্র আন্দোলন এবং জরুরি অবস্থার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সহযোদ্ধা তথা মন্ত্রী নীতীশ কুমারও (Nitish Kumar)। লালুর যাদব-মুসলিম ভোট ব্যাঙ্কের রাজনীতির তোড়ে তিনি হারিয়ে যাবেন মনে করে দল ও সরকার ছেড়ে বেরিয়ে গিয়ে নীতীশ গড়েন সমতা পার্টি। দলের নাম সমতা হলেও স্বজাতি কুর্মি ও অতি পশ্চাৎপদ জাতিগুলিকে নিয়ে নিজের ভোট ব্যাঙ্ক গড়ে তোলেন। ২০০৫-এ বিজেপির হাত ধরে লালু-রাবড়ি জমানার অবসান ঘটান।
*****************
বিজেপির (BJP) হাত ধরা নিয়ে তখন এক বিকেলে ঘরোয়া আড্ডায় নীতীশের মুখে শুনেছিলাম, ‘রাজনীতিতে আমাকে কেউ বোকা বানাতে পারবে না।’ এত বছর পর সেই তিনি বিহারে জাতি গণনার (Caste Census) সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর তাঁর সেই মন্তব্য সংবাদমাধ্যমে ফিরে এসেছে। অবশ্যই প্রেক্ষাপট ভিন্ন।
অনেকেই বলছেন, নীতীশ কি উল্টে বিজেপিকেই বোকা বানাতে চলেছেন? বিপাকে ফেলতে চাইছেন? তাৎপর্যপূর্ণ হল, জাতি গণনায় নীতীশের পাশে সর্বশক্তি নিয়ে দাঁড়িয়েছেন রাজনীতিতে তাঁর জাত শক্রু বলে পরিচিত লালুপ্রসাদ ও তাঁর পার্টি রাষ্ট্রীয় জনতা দল। লালুপুত্র, বিহারের বিরোধী দলনেতা তেজস্বী যাদবকে সঙ্গে নিয়ে নীতীশ নরেন্দ্র মোদীর (Narendra Modi) কাছে আর্জি জানিয়েছিলেন, জনগণনার সঙ্গে জাতি গণনাও হোক গোটা দেশে। প্রধানমন্ত্রী রাজি হননি। বিহারে জাতি গণনার আর্থিক খরচ কেন্দ্র বহন করুক, এই আর্জিও ফিরিয়ে দেন মোদী। উল্টে বিহারের বিজেপি নেতা স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাইকে দিয়ে সংসদে মোদী সরকার জানিয়ে দিয়েছে জাতি গণনায় কেন্দ্রের সায় নেই।
*****************
এই জাতি গণনা ঘিরেই বিহারের রাজনীতি এখন সরগরম। রাজনীতি নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করা চলে না বটে। কাল কী হবে কেউ জানে না। তবে লক্ষণীয় হল, গত ১৭ বছরে বিজেপি বিহারে সরকারে আছে, কিন্তু ক্ষমতায় রাজদণ্ডটি নীতীশেরই হাতে। এই দেড় দশকের বেশি সময়ে বিহার বিজেপির অন্তত হাফ ডজন নেতার মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার বাসনা অপূর্ণ থেকে গিয়েছে। এমনকি গত বিধানসভা ভোটে নীতীশের দল তৃতীয় স্থানে নেমে গেলেও মোদী-শাহরা জেডিইউ নেতাকে মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সি থেকে সরানোর কথা ভাবেননি। এমনকী প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হিসাবে তাঁকে মানতে পারবেন না বলেই নীতীশের এনডিএ ছেড়ে যাওয়ার অবমাননাও মোদী বেমালুম হজম করে নিয়েছেন। আর এখন অবিজেপি মুখ্যমন্ত্রীদের মধ্যে একমাত্র নীতীশের প্রশংসা করেন মোদী।
*****************
বিজেপি, মোদী, শাহদের সহিষ্ণুতার এমন দৃষ্টান্ত স্থাপনের পিছনে কোনও রকেট সায়েন্স নেই। বাহ্মণ্যবাদী আরএসএসের কোলেপিঠে গড়ে ওঠা বিজেপি বিহারকে দিয়ে গোটা দেশকে বোঝাতে চাইছে, উচ্চবর্ণের পার্টি বলে বৃথাই তাদের গালমন্দ করা হয়। নিম্নবর্গের সঙ্গে তাদের কোনও সংঘাত নেই।

ভোট পর্যালোচক সংস্থা সিএসডিএস এবং লোকনীতির সমীক্ষা বলছে, যাদব, কুর্মির মতো কয়েকটি এগিয়ে থাকা সম্প্রদায় বাদে ওবিসি-দের মধ্যে বিজেপিরই গ্রহণযোগ্যতা দ্রুত বাড়ছে। ১৯৯৬ সালে যা ছিল ১৯ শতাংশ, ২০১৯-এ তা বেড়ে হয়েছে ৪৭ শতাংশ। গ্রহণযোগ্যতা কমেছে আঞ্চলিক দল (১৯৯৬-এ ৪৯ শতাংশ, ২০১৯-এ ২৭ শতাংশ) ও কংগ্রেসের (১৯৯৬-এ ২৫ শতাংশ, ২০১৯-এ ১৫ শতাংশ)।
*****************
ভোটের বাক্সের প্রতিদান বিজেপির দলীয় কাঠামো, লোকসভা, বিধানসভা এবং সরকারগুলিতেও এখন বেশ দৃশ্যমান। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী ওবিসি। তাঁর মন্ত্রীদের ২৭ জন ওবিসি এবং ২০ জন তফসিলি জাতি ও উপজাতি সম্প্রদায়ভুক্ত। যা রেকর্ড। বিজেপির ওবিসি নেতারা কেউ কেউ একান্তে এমন কথাও বলছেন, ‘ভারত সরকার ওবিসি সরকার।’
ওবিসি-দের মধ্যে যেমন যাদব, জাঠেরা আছে, তেমনই তফসিলিদের তালিকায় আছে চামার-রামদাসিয়া, খাটিক, পাসি, কোরি, মেঘাওয়াল, রাজবংশী, মতুয়া, নমশূদ্র, ঢাঙর, দুসাদ ইত্যাদি সম্প্রদায়ের মানুষ।
মন্ত্রিসভায় প্রতিনিধিত্বের এই পাটিগণিতের সবটাই আসলে ভোটের রসায়ন। দেশের জনসংখ্যার ৫২ শতাংশই ওবিসি। অতএব এই জনগোষ্ঠীকে বাদ রেখে দেশ এবং অধিকাংশ রাজ্যে ক্ষমতা দখল অসম্ভব। সেই লক্ষ্যপূরণেও হিন্দুত্বই যদিও বিজেপির প্রেরণা ও অস্ত্র। প্রান্তবাসী হিন্দুদের উপযোগী, মনজোগানো হিন্দুত্ব মডেল (সাবঅলটার্ন হিন্দুইজম) আর মুসলিম বিদ্বেষকে চাগিয়ে দিয়ে একেবারে নিচুতলায় চিরন্তন সহাবস্থানকে ভেঙে দিচ্ছে তারা। তাদের সেই রসায়নাগারটির নাম উত্তরপ্রদেশ। বিভাজনের কৌশলেই দলিত এবং ওবিসিদের একাংশের মন জয় করে উত্তরপ্রদেশে সদ্য অনুষ্ঠিত বিধানসভার ভোটে বিজেপি ক্ষমতা ধরে রাখতে পারল। গেরুয়া বাহিনীর এই কৌশলের কাছেই পিছিয়ে পড়েছে সমাজবাদী পার্টি, বহুজন সমাজবাদী পার্টি।
বিজেপি শাসিত সব রাজ্যেই ক্ষমতার রসায়নটা এখন একই। পশ্চিমবঙ্গে মতুয়া, রাজবংশী, আদিবাসীদের খুশি করার চেষ্টাও ক্ষমতা দখলের রাজনীতি ছাড়া আর কিছু নয়।
*****************
বিজেপির রাজনীতির এই নয়া রসায়নের সঙ্গে জাত সমীক্ষায় তাদের আপত্তিকে মেলানো কঠিন। বিহারের বাস্তবতা মেনে নীতীশের ডাকা সর্বদলীয় বৈঠকে রাজ্য বিজেপি জাত শুমারিতে সায় দিলেও সর্ব ভারতীয় পার্টি তা থেকে শতহস্ত দূরে থাকছে।
আসলে দেশের যে ৫২ শতাংশ মানুষের ভোটের জোরে রাজনৈতিক দলগুলি ক্ষমতার মধুভাণ্ডটির দখল নিয়ে থাকে, লালুপ্রসাদ, নীতীশরা বুঝতে চাইছেন স্বাধীনতার ৭৫তম বর্ষে আর্থ-সামাজিক ভাবে তারা কোথায় দাঁড়িয়ে। ভোটের বাক্সে পশ্চাদ্পদ শ্রেণির মানুষগুলির যে গুরুত্ব, তার প্রতিফলন কি তাদের জীবনযাত্রার মানে আছে?

ঘটনা হল, এই প্রশ্নের উত্তর দু-তরফেরই জানা। লালুপ্রসাদ, নীতীশ কুমারদের জাতি গণনার উদ্যোগের উদ্দেশ্য তাতে সরকারি সিলমোহর দেওয়া। আর প্রধানমন্ত্রী নিজে ওবিসি হয়েও চান না ওই সম্প্রদায়ভুক্ত কোটি কোটি দেশবাসীর আর্থ-সামাজিক অবস্থার প্রকৃত চিত্রটি সামনে আসুক। কেন চান না?
এই প্রশ্নের জবাব খুঁজতে খানিক ফিরে দেখা জরুরি। ব্রিটিশ ভারতে ১৯৩১ সালের জনশুমারিতে শেষবারের মতো জাত ভিত্তিক গণনা হয়েছিল এবং তিন হাজারের বেশি কাস্ট, সাব কাস্টের অস্তিত্ব মিলেছিল যারা ছিল জনসংখ্যার ৫২ শতাংশ এবং আর্থ সামাজিক ভাবে অত্যন্ত পিছিয়ে থাকা অংশ। স্বাধীনতা পরবর্তী গণনায় তারাই হয়ে গেলেন জেনারেল কাস্টের অংশ। ফলে সংরক্ষণের সুবিধা থেকে ছিঁটকে গেলেন। যাবতীয় সুবিধার সিংহভাহ পেতে থাকল বর্ণ ব্যবস্থার সূত্রে বহু বছর ধরে আর্থ-সামাজিকভাবে এগিয়ে থাকা উচ্চবর্ণের লোকেরা।
আটের দশকের গোড়ায়, মণ্ডল কমিশনের রিপোর্ট চোখ খুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছিল। কিন্তু রাজনীতির স্বার্থেই রাজনৈতিক নেতৃত্ব সেই রিপোর্টে চোখ বোলাতে আগ্রহী ছিল না। বাংলায় বামফ্রন্ট সরকার তো বেমালুম অস্বীকার করেছিল, বলেছিল, এ রাজ্যে ওবিসি বলে কিছু নেই।
১৯৩১-এর জনগণনার পরিসংখ্যানকে প্রামাণ্য ধরে মণ্ডল কমিশনও বলেছিল, জনসংখ্যার ৫২ শতাংশই ওবিসি। সদ্য প্রকাশিত জাতীয় পরিবার স্বাস্থ্য সমীক্ষা রিপোর্টও সেই পরিসংখ্যানই উঠে এসেছে।
*****************
নিজের সরকারের আয়ু ফুরিয়ে এলে বিজেপির মন্দির রাজনীতির মোকাবিলায় সংসদে মণ্ডল কমিশনের রিপোর্ট কার্যকরের কথা ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী বিশ্বনাথ প্রতাপ সিং। সেই সূত্রে রাজনীতির নয়া ময়দানে প্রবেশ করে ভারত। ১৯৯৩-এ চালু হয় ওবিসি সংরক্ষণ। বিগত তিন দশকে তাদের পশ্চাৎপদতা কতটা দূর হল? শিক্ষা, চাকরি, ব্যবসা-বাণিজ্য এবং রাজনীতি ও প্রশাসনে তাদের প্রতিনিধিত্ব কতটা? সেই ছবি বিজেপি ও নরেন্দ্র মোদীর সরকার প্রকাশ্যে আনতে নারাজ। বছর বারো আগে হওয়া আর্থ-সামাজিক সমীক্ষা রিপোর্টটিও ভারত সরকার চেপে রেখেছে। কারণ, দুর্দশা, অসাম্যের খণ্ডচিত্র তাতেই জানা হয়ে গিয়েছে দিল্লির কর্তাদের। আর তারা এগোতে চায় না।
কারণ, ওবিসি-দের পশ্চাদপদতা সার্বিক চিত্র সামনে আসার পর জনসংখ্যার অনুপাতে সংরক্ষণের দাবি (বর্তমানে কেন্দ্রীয় সরকারের চাকরি ও শিক্ষায় ২৭ শতাংশ, কিন্তু বাস্তবে যার সুবিধা সাত শতাংশ মানুষেরও জোটেনি) ওঠা অসম্ভব নয়। আর সেই দাবি মেটাতে হলে সুপ্রিম কোর্টের বেঁধে দেওয়া সংরক্ষণের সর্বোচ্চ সীমা (পঞ্চাশ শতাংশ) তুলে দিতে হবে। তাতে সংরক্ষণ ঘিরে রাজনীতিতে উথালপাতাল শুরু হলে বিজেপির বিপদ, ক্ষতি কোথায়?
প্রথমত, মস্ত বড় চ্যালেঞ্জ, বস্তুত অস্তিত্ব সঙ্কটের মুখে পড়বে রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘ নির্দেশিত বিজেপির রাজনীতির প্রকৃত লক্ষ্যপূরণ—বর্ণ হিন্দুর রাষ্ট্রবাদ, অঙ্কের হিসাবে যারা এদেশে আসল সংখ্যালঘু (জনসংখ্যার বড়জোর ১৫ শতাংশ) এবং বিপুল সুবিধাভোগী। শাসন, শোষণ এবং তোষণ- এই তিনের সুবিধায় বলিয়ান সংখ্যালঘু বর্ণ হিন্দুর স্বার্থ ক্ষুণ্ন হয় এমন কোনও পদক্ষেপেই গেরুয়া বাহিনীর সায় দেওয়া কঠিন। দ্বিতীয়ত, মুসলিম-সহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুরাও ওবিসির আওতায় আছে। হিন্দুত্ববাদীরা তা মেনে নিতে পারছে না?
আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবতকে ধন্যবাদ দিতে হয়। সুবিধা বঞ্চিতদের জন্য সংরক্ষণের চালু ব্যবস্থায় তাঁদের ঘোর আপত্তি এবং সুযোগ পেলেই তা তুলে দেবেন, এই গোপন বাসনাটি বছর কয়েক আগে ফাঁস করে দিয়েছেন তিনি। ৫৬ ইঞ্চি বুকের ছাতির নরেন্দ্র মোদীকেও যে উচ্চবর্গীয় বলে চিহ্নিত সংখ্যালঘু হিন্দুর আধিপত্য মেনে আপস করে চলতে হয়, তা বোঝা যায় নিজেকে তিনি শুধু চাওয়ালা পরিচয়ে বেঁধে রাখায়। ঘুণাক্ষরেও নিজের ওবিসি পরিচয় নিয়ে গৌরব, উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন না। বিজেপির গুরুঠাকুর সঙ্ঘ পরিবার যে তা ভালো ভাবে নেবে না—একদা আরএসএসের প্রচারক মোদী তা ভালই জানেন।
*****************
জাতি সমীক্ষা ঘিরে বিহারের রাজনীতি এখন মস্ত ঘূর্ণির মুখে। প্রধান দুই প্রতিপক্ষ লালুপ্রসাদ এবং নীতীশ কুমার রাজনীতির বার্ধক্যে পৌঁছে জাতি সমীক্ষা ঘিরে ফের কাছাকাছি এসেছেন। ২০২৪-এর আগে তাঁরা ফের জোট বাঁধলে লোকসভা ভোটে বিজেপি বিহারে জোরধাক্কা খাবে সন্দেহ নেই। তার আগে জাতি সমীক্ষার রিপোর্ট সামনে আসলে আরও কঠিন হয়ে পড়বে তাদের রাজনীতি। রাজনীতির পথ বদলাতে হবে বাকিদলগুলিকেও। যেমনটা হয়েছিল মণ্ডল কমিশনের রিপোর্টকে ঘিরে। ঘটনাচক্রে কমিশনের চেয়ারম্যান বিন্দ্যেশ্বরী প্রসাদ মণ্ডল ছিলেন বিহারেরই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী।
বাংলাদেশের অগ্নিকাণ্ডে মৃত বেড়ে ৪০! আহত ৪৫০-র বেশি, চট্টগ্রামজুড়ে হাহাকার