
দ্য ওয়াল ব্যুরো: কথায় বলে মনের জোরটাই আসল। সেটি যদি থাকে সবই সম্ভব। জীবনের বাইশগজের লড়াই অন্যরকম। সেই লড়াইয়ে রীতিমতো সফল বাংলার ক্রিকেট অধিনায়ক শুভ্রজ্যোতি সুর (Subhrojyoti Sur)। তিনি মূক ও বধিরদের (Deaf and Dumb IPL) যে ভারতীয় দল হয়, সেই দলেরও নেতৃত্বে রয়েছেন তিনি।
আগামী এপ্রিল মাসেই হবে মূক ও বধিরদের আইপিএল, যার নাম দিয়েছে ডিএলএফ লিগ। ওই দলের কলকাতা ওয়ারিয়র্স ফ্রাঞ্চাইজি দলের অধিনায়ক নির্বাচিত হয়েছেন শুভ্রজ্যোতি। ৩৪ বছরের এই অলরাউন্ডার থাকেন বেহালা অঞ্চলে। বর্তমানে যদিও স্ত্রী অলকাকে নিয়ে বাস করছেন গোলপার্ক অঞ্চলে।

শুভ্রজ্যোতির ব্যাটিং অনেকটা বীরেন্দ্র সেওয়াগের স্টাইলে, তিনি বীরুর মতোই মারকুটে। সর্বভারতীয় স্তরে বহু সাফল্য পেয়েছেন। কলকাতায় আসন্ন তিন দলের টুর্নামেন্টে ভাল পারফরম্যান্স করলেই তিনি পেয়ে যাবেন বিশ্বকাপের টিকিট। তিনি জাত ক্রিকেটার, তাই শুভ্রর মতোই চোখে একরাশ স্বপ্ন স্ত্রী অলকারও।
কলকাতায় পড়তে এসেছিলেন সাইন ল্যাঙ্গোয়েজ নিয়ে পড়াশুনো করতে। সেইসময়ই আলাপ হয় শুভ্রজ্যোতির সঙ্গে। তারপর প্রেম ও ২০১৮ সালে বিবাহ বন্ধনে জড়িয়ে যান। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নামী ক্রিকেটারের সহধর্মিনী বলছিলেন, ‘‘আমার বাবা-মা-ও কথা বলতে পারে না, শুনতেও পারে না। তাই ওদের ভাল একটা ট্রেনারকে দায়িত্ব দেওয়ার জন্য আমাকে সাইন ল্যাঙ্গোয়েজের ওপর একটা সার্টিফিকেট নিতেই হতো। সেই কারণেই আমি ওড়িশা নিজের শহর ছেড়ে কলকাতায় চলে এসেছিলাম।’’
শুভ্রজ্যোতির যাবতীয় সাফল্যের পিছনে স্ত্রী রয়েছেন। তিনি প্রেরণা হিসেবে কাজ করে চলেছেন। দেশের হয়ে দাপটে খেলছেন। এমনকী কলকাতা ক্লাব ক্রিকেটেও সাধারণদের সঙ্গেই খেলছেন তিনি। মূক বধিরদের ক্রিকেট খেলেও যে তারকা হওয়া যায়, তার প্রমাণ এই বঙ্গসন্তান। কাজ করেন পোস্টাল অফিসার হিসেবে। নিজের কর্মজগতের পাশাপাশি দাপিয়ে ময়দানেও খেলছেন বাংলার গর্ব। ঠিক মতো এগোলে একদিন বিশ্বকাপের দলেও স্থান পাবেন, সেই আশায় দিন গুনছেন এই ক্রিকেটার, এমনকী তাঁর স্ত্রী অলকাও।
তিতাস ক্রিকেটের জন্য ছেলে সেজেছিলেন, চুঁচুড়ার সেই মেয়েই ‘বিশ্বকাপের রানি’