Latest News

বিবিসির তথ্যচিত্র প্রদর্শন ঘিরে ধুন্ধুমার দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে! আটক ২৪ পড়ুয়া

দ্য ওয়াল ব্যুরো: গুজরাত দাঙ্গা নিয়ে তৈরি বিবিসির বিতর্কিত তথ্যচিত্রের (BBC Documentary on Gujarat Riot) স্ক্রিনিং ঘিরে ধুন্ধুমার রাজধানীর একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে। শুক্রবার দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় এবং আম্বেদকর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে তথ্যচিত্রটির পাবলিক স্ক্রিনিংয়ের বন্দোবস্ত করেছিলেন পড়ুয়ারা, যাতে মত ছিল না কর্তৃপক্ষের। আর তা নিয়েই রণক্ষেত্রের চেহারা নিল ক্যাম্পাস। একদিকে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ছবির স্ক্রিনিং উপলক্ষে ছাত্র-ছাত্রীদের জমায়েত রুখতে ১৪৪ ধারা জারি করা হল। অন্যদিকে আম্বেদকর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে স্ক্রিনিং রুখতে ইচ্ছাকৃতভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার অভিযোগ এনেছেন পড়ুয়ারা। ঘটনায় ইতিমধ্যেই দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৪ জন ছাত্রছাত্রীকে আটক করেছে পুলিশ (Students Detained At Delhi University)।

দুদিন আগে একই ঘটনা ঘটেছিল জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানে ক্যাম্পাসে ‘নিষিদ্ধ’ তথ্যচিত্রটির স্ক্রিনিংয়ের আয়োজন করেছিলেন পড়ুয়ারা। তা বন্ধ করতে মরিয়া কর্তৃপক্ষ আচমকাই ক্যাম্পাসের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছিল বলে অভিযোগ তুলেছিলেন ছাত্রছাত্রীরা। শুক্রবার ফের একই ঘটনা ঘটল আম্বেদকর বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে। গুজরাত দাঙ্গায় রাজ্যের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী তথা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ভূমিকা নিয়ে নির্মিত তথ্যচিত্রটি প্রদর্শন করতে না দেওয়ার জন্য বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার অভিযোগ তুলে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন পড়ুয়ারা।

অন্যদিকে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা বিভাগে এদিন তথ্যচিত্রটির স্ক্রিনিংয়ের আয়োজন করা হয়েছিল। কিন্তু ছাত্রছাত্রীদের জমায়েত রুখতে আগেভাগেই সেখানে ১৪৪ ধারা জারি করে পুলিশ। কিন্তু এসবের তোয়াক্কা না করেই বিকেলবেলা বিপুল সংখ্যক পড়ুয়া জড়ো হন সেখানে। পুলিশ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে রীতিমতো খণ্ডযুদ্ধ বেঁধে যায় তাঁদের। ‘গো ব্যাক দিল্লি পুলিশ’ স্লোগান তুলতে শোনা যায় ছাত্রছাত্রীদের। পুলিশের বিরুদ্ধে তাঁদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করার অভিযোগ এনেছেন তাঁরা।

সেই ঘটনায় ইতিমধ্যেই দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৪ জন পড়ুয়াকে আটক করেছে পুলিশ।

সূত্রের খবর, দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, ছাত্রছাত্রীরা ব্যক্তিগতভাবে নিজেদের ফোনে তথ্যচিত্রটি দেখতে চাইলে তা তাঁদের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। কিন্তু কোনওভাবেই সেটির গণপ্রদর্শন করা যাবে না, সাফ জানিয়েছিল কর্তৃপক্ষ। এ ব্যাপারে পুলিশের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, তথ্যচিত্রটির গণপ্রদর্শন বন্ধ করার জন্য আগে একাধিকবার ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করা হয়। কিন্তু তাঁরা নিজেদের সিদ্ধান্তে অনড় ছিলেন। পুলিশের তরফে আগেই জানানো হয়েছিল, নিরাপত্তার স্বার্থে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়ন করা হবে। ছবিটির স্ক্রিনিংয়ের জন্য জমায়েত দেখলেই উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছিল দিল্লি পুলিশ।

দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর রজনী আব্বি জানিয়েছেন, ‘যেহেতু এই বিষয়ে কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমতি চাওয়া হয়নি, তাই আমরা বিবিসির এই তথ্যচিত্রটি প্রদর্শন করতে দিতে পারি না।’

প্রসঙ্গত, বিবিসির তথ্যচিত্র ‘ইন্ডিয়া: দ্য মোদী কোয়েশ্চেন’কে (India: The Modi Question) কেন্দ্র করে ক্রমশই বিতর্কের আঁচ বাড়ছে দেশজুড়ে। ইতিমধ্যেই ২০২১ সালের তথ্যপ্রযুক্তি আইনের আওতায় ছবিটিকে এদেশে নিষিদ্ধ করেছে মোদী সরকার। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবিটির প্রদর্শনও বন্ধ করতে বলা হয়েছে। যদিও কেউ ব্যক্তিগতভাবে ছবিটি দেখলে তা আইনত অপরাধ নয়।

বাংলার ছাত্র সাসপেন্ড আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ে, জাতীয় পতাকার নীচে ধর্মীয় স্লোগানের অভিযোগ

You might also like