
দ্য ওয়াল ব্যুরো: কোভিড সংক্রমণের মোকাবিলায় অর্থনীতিতে কত বড় ধাক্কা লাগতে পারে, তার স্বরূপই বা কী হতে পারে সবটাই এখনও অনিশ্চিত। সম্ভবত সেই কারণেই আপৎকালীন সংকট মোকাবিলায় উদ্দেশে আগাম বড় টাকার সংস্থান করে রাখতে চাইল বন্ধন ব্যাঙ্ক। তবে তা করতে গিয়ে, সদ্য সমাপ্ত আর্থিক বছরের শেষ ত্রৈমাসিকে মুনাফা কিছুটা কমে গেল।
মঙ্গলবার শেষ ত্রৈমাসিকের (Q4) ফলাফল ঘোষণা করেছে বন্ধন। তাদের বিবৃতিতেই বলা হয়েছে, কোভিডের জন্য ৬৯০ কোটি টাকার সংস্থান রাখা হয়েছে। ফলে নিট মুনাফা এর আগের আর্থিক বছর তথা ২০১৮-১৯ এর শেষ ত্রৈমাসিকের তুলনায় ২০.৫৮ শতাংশ কমে গিয়েছে। সে বার শেষ ত্রৈমাসিকে মুনাফা হয়েছিল, ৬৫১ কোটি টাকা। এ বার তা হয়েছে ৫১৭ কোটি টাকা। তবে সামগ্রিক ভাবে ২০১৮-১৯ আর্থিক বছরের তুলনায় ২০১৯-২০ আর্থিক বছরে মুনাফা এক লাফে ৫৪.৯৬ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৩০২৪ কোটি টাকা।
তাৎপর্যপূর্ণ হল, আপৎকালীন পরিস্থিতির জন্য রিজার্ভ ব্যাঙ্ক বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলিকে ন্যূনতম যে পরিমাণ অর্থের সংস্থান রাখতে বলেছে, তার থেকে অনেক বেশি রেখেছে বন্ধন। তৃতীয় ত্রৈমাসিকে আপৎকালীন পরিস্থিতির জন্য বন্ধন ২৯৪.৮৮ কোটি টাকার সংস্থান রেখেছিল, তা বাড়িয়ে ৮২৭. ৩৬ কোটি টাকা করা হয়েছে।
এদিন বন্ধনের তরফে আরও জানানো হয়েছে, সদ্য সমাপ্ত আর্থিক বছরে তাদের গ্রাহক সংখ্যা আরও ১১ লক্ষ বেড়েছে। ফলে তাদের মোট গ্রাহক সংখ্যা এখন ২.০১ কোটি। তাদের আমানতের বৃদ্ধিও হয়েছে অনেকটাই। ব্যাঙ্ক জানিয়েছে, আগের বছরের তুলনায় (২০১৮-১৯) বন্ধন ব্যাঙ্কের আমানাত বেড়েছে ৩২.০৪ শতাংশ হারে। ব্যাঙ্কের মোট আমানতের বহর এখন ৫৭,০৮২ কোটি টাকা। ব্যাঙ্কের কারেন্ট অ্যাকাউন্ট ও সেভিংস অ্যাকাউন্ট(কাসা) মিলিয়ে আমানত ১৯.৩৬ শতাংশ হারে বেড়েছে। তা ছাড়া পূর্ববর্তী আর্থিক বছরের তুলনায় ব্যাঙ্কের মোট ব্যবসার আয়তন বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ১,২৮, ৯২৮কোটি টাকা।
২০১৫-১৬ আর্থিক বছরে ব্যাঙ্কিং অপারেশন শুরু করেছিল বন্ধন। এ বছর অগস্ট মাসে ব্যাঙ্কের পাঁচ বছর পূর্ণ হবে। মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে বন্ধন আরও জানিয়েছে, তাদের ঋণের খাতাতেও বৃদ্ধি হয়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। গত বছরের তুলনায় ব্যাঙ্কের দেওয়া ঋণের বহর ৬০.৪৬ শতাংশ বেড়েছে। ব্যাঙ্ক-এর মোট ঋণ তথা অগ্রিমের আয়তন এখন ৭১,৮৪৬ টাকা। কিন্তু একই সঙ্গে ব্যাঙ্কের এনপিএ তথা অলাভজনক সম্পত্তি কমে গিয়েছে। তা এখন মাত্র 0.৫৮ শতাংশ।
শেষ ত্রৈমাসিকের ফলাফল প্রসঙ্গে বন্ধন ব্যাঙ্কের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার চন্দ্রশেখর ঘোষ এ দিন বলেন, “অর্থনীতির মন্দোগতির জন্য এ বছরটা খুবই চ্যালেঞ্জের মধ্যে দিয়ে গিয়েছে সমগ্র ব্যাঙ্কিং শিল্প। তা সত্ত্বেও আমরা নিজেদের আরও মজবুত ও দৃঢ় করে তুলতে পেরেছি। গ্রাহকরা আমাদের উপর যে আস্থা ও বিশ্বাস রেখেছেন তার জন্যই এই বৃদ্ধি সম্ভব হয়েছে”। তিনি আরও বলেন,“আর্থিক বছরের শেষ দু’সপ্তাহে বিশ্ব জুড়ে কোভিড-১৯ মহামারীর প্রভাব শুরু হয়ে গিয়েছিল ঠিকই, কিন্তু আমাদের ব্যবসায় তার কোনও উল্লেখযোগ্য প্রভাব পড়েনি”।