Latest News

অরুণাচলে ঢুকেছিল চিনারা, তাদের তাড়িয়ে দিয়েছে সেনা, জানাল সরকার

দ্য ওয়াল ব্যুরো : এক মাস আগেই শোনা যায়, উত্তরাখণ্ডে ঢুকে পড়েছে চিনা সেনা। শুক্রবার সরকার জানাল, গত সপ্তাহে অরুণাচল প্রদেশেও লাইন অব অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল (LAC) পেরিয়ে ঢুকে পড়েছিল চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মি। এক সপ্তাহ ধরে ওই অঞ্চলে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। অবশেষে ভারতীয় সেনা তাদের তাড়িয়ে দিয়েছে। সরকারি সূত্রে খবর, ঠিক কোনটা লাইন অব অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল, তা নিয়ে ভারত ও চিনের মধ্যে মতভেদ আছে। দুই দেশই নিজেদের ধারণা অনুযায়ী সীমান্তে টহল দেওয়া শুরু করেছে।

একটি সূত্রে খবর, সম্ভবত ভারতীয় সেনা পিএলএ-র সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছিল। সংঘর্ষ স্থায়ী হয়েছিল কয়েক ঘণ্টা। তবে তাতে ভারতীয় সেনার কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।

অরুণাচল প্রদেশের একটি অঞ্চলে বেশ কয়েকবার ঢুকে পড়েছে চিনারা। গত ৩০ অগাস্ট বরাহোতি অঞ্চলে প্রায় ১০০ চিনা সৈনিক সীমান্ত পেরিয়ে পাঁচ কিলোমিটার চলে আসে। ওই অঞ্চলে পাহারা দেয় ইন্দো-টিবেটান বর্ডার পুলিশ। চিনারা অনুপ্রবেশ করার কয়েক ঘণ্টা পরে ফিরে যায়। একটি সূত্রে খবর, বরাহোতি অঞ্চলে কোনটা লাইন অব অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল, তা নিয়ে ভারত ও চিনের মধ্যে মতবিরোধ আছে। ওই অঞ্চলে কিছু পরিকাঠামোও তৈরি করেছে চিন।

ভারত চিন সীমান্তে লাইন অব অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোলের দৈর্ঘ্য ৩৫০০ কিলোমিটার। গতবছর ৫ মে পূর্ব লাদাখে ভারত ও চিনের সেনাবাহিনীর মধ্যে সীমান্ত সংঘর্ষ হয়। প্যাংগং লেক অঞ্চলে ওই সংঘর্ষের পরে দুই দেশই সীমান্তে কয়েক হাজার সেনা মোতায়েন করে।

গত ২ অক্টোবর জানা যায়, লাদাখে চিন সীমান্তে কে নাইন বজ্র সেলফ প্রপেলড হাউইৎজার রেজিমেন্ট পাঠিয়েছে ভারত। একটি ভিডিও ক্লিপে দেখা যায়, লাদাখে পার্বত্য অঞ্চলের ওপর দিয়ে দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে কে নাইন বজ্র। ওই ট্যাঙ্ক ৫০ কিলোমিটার দূরে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করতে পারে। গুজরাতে কেন্দ্রীয় সরকারের ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রকল্পে ওই ট্যাঙ্কগুলি তৈরি করেছে লার্সেন অ্যান্ড টুব্রো।

২০১৭ সালে ১০০ টি কে নাইন বজ্র তৈরির জন্য বরাত পায় লার্সেন অ্যান্ড টুব্রো। ওই বরাতের মূল্য ছিল ৪৫০০ কোটি টাকা। ট্যাঙ্ক নির্মাণের জন্য ওই সংস্থা সুরাট থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে হাজিরা অঞ্চলে কারখানা তৈরি করে। ৪২ দিনের মধ্যে ১০০ টি ট্যাঙ্ক বানিয়ে দেওয়ার কথা ছিল। এছাড়া ১০ টি হাউইৎজার কামানের যন্ত্রাংশ দক্ষিণ কোরিয়ার হানওয়াহা টেকউইন কোম্পানি থেকে কেনা হয়। এদেশে যন্ত্রাংশগুলি অ্যাসেম্বল করে লার্সেন অ্যান্ড টুব্রো।

সম্প্রতি সেনাপ্রধান মুকুন্দ নারভানে অভিযোগ করেন, লাদাখের স্পর্শকাতর এলাকাগুলিতে ফের সেনা মোতায়েন করা হচ্ছে, অস্ত্রশস্ত্রও মজুত করছে পিপলস লিবারেশন আর্মি। এই প্রেক্ষিতে ওই অঞ্চলে হাউইৎজার রেজিমেন্ট পাঠানো বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।

এর আগে সামরিক স্তরে দফায় দফায় বৈঠকের পরেও সীমান্ত সমস্যার সমাধানে এসে পৌঁছতে পারেনি ভারত ও চিন দুই দেশ। বরং সীমান্ত থেকে সেনা সরিয়ে শান্তি বজায় রাখার যে আলোচনা হয়েছিল দুই দেশের মধ্যে তার মর্যাদা ভেঙেছে চিনই। নতুন করে আগ্রাসনের চেষ্টা দেখিয়েছে তারা। যার কারণে রীতিমতো যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে লাদাখ সীমান্তে। জুলাই মাসেই তাজাকিস্তানে সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের বৈঠকে চিনা বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই-এর সঙ্গে বৈঠকে সীমান্তে স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে বলেছিলেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।  তাতে চিন সম্মতিও দিয়েছিল।  সেনাপ্রধান বলছেন, ১৩ বার দুই দেশের মধ্যে সেনা কম্যান্ডার পর্যায়ে বৈঠক হয়েছে। গত ৬ মাস ধরে বড়সড় অশান্তির ঘটনা না ঘটলেও খবর মিলেছে, চিন গোপনে সেনা ও সামরিক সরঞ্জাম মোতায়েন করে চলেছে ইন্টার্ন ও নর্দার্ন ফ্রন্টে।

You might also like