
দ্য ওয়াল ব্যুরো: শেষ মুহূর্তে কোনও অঘটন না ঘটলে রবিবার বিকেলে আনুষ্ঠানিক ভাবে তৃণমূল কংগ্রেসে ফিরতে পারেন ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং (Arjun Singh)। তাঁর সঙ্গে তৃণমূলে যোগ দিতে পারেন তাঁর ছেলে পবন সিংও।
বস্তুত পাটের দাম নিয়ে কেন্দ্রকে চড়া দাগে নিশানা করে এর ভিত অনেক আগে থেকে তৈরি করছিলেন অর্জুন (Arjun Singh)। তবে সব থেকে বড় ইঙ্গিত তিনি দিয়েছিলেন দ্য ওয়ালে তাঁর সাক্ষাৎকারে। সেই সাক্ষাৎকারে অর্জুন পষ্টাপষ্টিই বলেছেন, বাংলায় বিজেপি রয়েছে শুধু ফেসবুকে, বুথে নেই।
আরও পড়ুন: অনলাইন পরীক্ষার দাবিতে সোচ্চার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, ছাত্রবিক্ষোভে উত্তাল কলেজ স্ট্রিট
অর্জুন (Arjun Singh) দ্য ওয়ালকে বলেছেন, “ব্যারাকপুরের প্রধান শিল্প জুটমিল। সেটা ধ্বংস হয়ে যাবে, আর আমি বসে বসে দেখব! এটা কি হতে পারে?” অর্জুনের এই কথার পিঠেই প্রশ্ন করা হয়েছিল, সে তো হল, কিন্তু কাদের নিয়ে আন্দোলন করবেন আপনি? ব্যারাকপুর লোকসভার সাতটির মধ্যে ছয়টি বিধানসভা তৃণমূলের দখলে। আপনার ছায়া প্রচ্ছায়া, বেশিরভাগই তৃণমূলে। উত্তরে ব্যারাকপুরের সাংসদ বলেছেন, “বিধানসভার ফলাফলের দায় আমার নয়। যাঁরা প্রার্থী ঠিক করেছিলেন তাঁদের”।
অর্জুনকে (Arjun Singh) প্রশ্ন করা হয়, আপনি সাংসদ। আপনার মতামত ছাড়াই প্রার্থী ঠিক করা হয়েছিল? এ প্রশ্নের জবাবে সরাসরিই বিজেপি নেতৃত্বের বিরুদ্ধে আঙুল তুলেছেন অর্জুন। বলেছেন, “তাহলে আর বলছি কী! এমন সব লোককে প্রার্থী করেছিল, যাঁদের মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক নেই। মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ থাকলে কেউ হারে”?
রাজ্য বিজেপির একাংশের সঙ্গে অনেক দিন ধরে বনিবনার অভাব হচ্ছিল অর্জুনের। সাক্ষাৎকারে তিনি ঠারেঠোরে বোঝাতে চেয়েছেন, বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের অনেকেরই বাংলার রাজনীতি নিয়ে সম্যক ধারণা নেই। তাই এমন প্রার্থী দিয়েছিলেন, যাঁদের মাটির সঙ্গে বা মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল না।
অর্জুনকে প্রশ্ন করা হয়, বিধানসভা ভোটে প্রার্থী কারা ঠিক করেছিল? জবাবে ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের পোড় খাওয়া রাজনীতিক বলেছেন, “নেতারা। নেতা, প্রার্থী এসব উপর থেকে চাপিয়ে দিলে চলে না”। তা হলে কি দুশো’র জায়গায় ৭৭- এ থমকে যাওয়ার কারণ ভুল প্রার্থী বাছাই? অর্জুনের স্পষ্ট উত্তর, “আসল কারণ সংগঠন নেই। বাংলায় বুথ স্তরে সংগঠন না থাকলে ক্ষমতায় আসার স্বপ্ন দেখা বৃথা”।
অর্জুনের কাছে দ্য ওয়াল জানতে চেয়েছিল, বাংলায় বিজেপির সংগঠন এখন কোন জায়গায় দাঁড়িয়ে?
কটাক্ষের সুরে অর্জুন জবাবে বলেছেন, “ফেসবুকে আছে, বুথে নেই। একটা দৃষ্টান্ত দিচ্ছি, তাহলেই আপনি বুঝে যাবেন সংগঠনের কী হাল। আসানসোলের উপনির্বাচনে আমাকে দু’দিনের জন্য পাঠানো হল প্রচারে। আমি ফিরে এসে দলকে বললাম, কোনও চান্স নেই। ওখানে কোনও সংগঠন নেই। পরে শুনলাম, ৯০০ বুথে এজেন্টই দিতে পারেনি পার্টি। আসলে রাজনীতি আর ভোট, দুটো এক নয়। বিশেষ করে বাংলায় বুথ স্তরে সংগঠন না থাকলে কিচ্ছু হবে না। তবে, আবারও বলছি, বিজেপির বুথে সংগঠন না থাকলেও ফেসবুকে অবশ্যই আছে”।