
গোবিন্দর এই আশ্চর্য সাফল্যের ও মমত্বের গল্প সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাগ করে নিয়েছেন আনন্দ মাহিন্দ্রা। তিনি টুইট করে লিখেছেন, “যাঁরা উদীয়মান”– এ কথা বলে গোবিন্দর কথা সকলকে জানিয়েছেন আনন্দ।
মা-বাবাকে হারানোর পরে একটি ঠেলাগাড়ির খাবারের দোকানে কাজ শুরু করতে হয় গোবিন্দকে। ১১ বছরের ছেলে, অভ্যেস নেই ভারী কাজ করার। কচি হাতেই বাসন ধুতো, খাবার দিত, আনাজ কাটত। কাজে ভুল হলে মালিকের কাছে জুটত মারধরও। এ দেশের আর পাঁচটা শিশুশ্রমিকের সঙ্গে যেমনটা হয়, ঠিক তেমনই।
একটি শিশুসুরক্ষা সংস্থার তরফে স্কুলে ভর্তি হয় গোবিন্দ। পড়াশোনা করে। পাশও করে। এর পরেই চণ্ডীগড়ের মাহিন্দ্রা প্রাইড স্কুলে পড়ার সুযোগ পায় সে। এখান থেকেই ঘুরে যায় জীবনের বাঁক। কারণ ২০০৭ সালে স্থাপিত এই স্কুলে শুধু পড়াশোনাই নয়, তার সঙ্গে নানারকম প্রশিক্ষণ দিয়ে চাকরির ব্যবস্থাও করে দেওয়া হয় সমাজে পিছিয়ে থাকা তরুণ সম্প্রদায়ের জন্য।
এরকমই তিন মাস প্রশিক্ষণ নেওয়ার পরে একটি দোকানের কাপড়-জামার বিভাগ সামলানোর দায়িত্ব পান তিনি। মন দিয়ে কাজ করতে শুরু করেন। সেই সঙ্গে একটু একটু করে সাশ্রয়। উদ্দেশ্য একটাই, একটি বড় বাড়ি ভাড়া নেবেন এবং যে ভাইবোনরা অনাথ আশ্রমে রয়েছেন, তাঁদের নিয়ে একসঙ্গে থাকবেন।
গোবিন্দর কাহিনি সামনে আসতেই তাঁকে প্রশংসা ও অভিনন্দনে ভরিয়ে দেন নেটিজেনরা। এই পরিশ্রম ও সততার দাম একদিন মিলবেই, আশীর্বাদ করেন অনেকে। ধন্যবাদ জানান আনন্দ মাহিন্দ্রাকেও, যাঁর জন্য সম্ভব হয়েছে এই রূপকথা।
People who RISE! https://t.co/tyLuirGNZo
— anand mahindra (@anandmahindra) June 15, 2020
মাহিন্দ্রা প্রাইড স্কুলটি ১৮ থেকে ২৫ বছর বয়সি তরুণ-তরুণীদের জন্য। তথ্যপ্রযুক্তি, হসপিটালিটি, গাড়ির কাজ, স্বাধীন ব্যবসা– এরকম নানা বিষয়ে সেখানে প্রশিক্ষণ মেলে পড়ুয়াদের। তাদের বাসে-ট্রেনে চলাফেরার জন্য বিনামূল্য পাসের ব্যবস্থা করে স্কুল। ব্যবস্থা করে পোশাকের এবং পড়াশোনা ও প্রশিক্ষণের সামগ্রীর। তিন মাসের মধ্যেই নিজেদের তৈরি করে কাজে যোগ দেওয়ার সুযোগ পায় তারা।
গোবিন্দ তাদেরই একজন। অনাথ শিশুর শ্রমিক হয়ে ওঠা দিয়ে যার জীবন শুরু হলেও, সে জীবনকে অন্য খাতে বইয়েছে শিক্ষার আলো। মাহিন্দ্রা স্কুলে সুযোগ পাওয়ায় মিলেছে চাকরিও, যার জেরে আজ নিজের বাড়িতে সকলে মিলে থাকার স্বপ্ন দেখেন তিনি।