
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ‘আমার ছেলেটাকে মেরে ফেলল’, কেঁদেই চলেছেন মা। গল্ফ গ্রিন থানার (Kolkata) পুলিশের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ তুলেছেন মৃত যুবকের পরিবারের লোকজন। তাঁদের অভিযোগ, পুলিশ তুলে নিয়ে যায় তাঁদের বাড়ির ছেলেকে। পরে গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁকে রাস্তায় ফেলে দিয়ে চলে যায়। এরপরে হাসপাতালে ভর্তি করেও বাঁচানো যায়নি।
এমআর বাঙুর হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে দীপঙ্কর সাহার। তাঁর পরিবারের অভিযোগ, গল্ফ গ্রিন থানার পুলিশের মারেই মৃত্যু হয়েছে যুবকের। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে গল্ফ গ্রিন থানার পুলিশ। মৃত যুবকের পরিবারের লোকজনের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে লালবাজার। ঘটনায় একজন পুলিশ অফিসার, একজন হোমগার্ড ও একজন সিভিক পুলিশকর্মীকে ক্লোজ করা হয়েছে।
দীপঙ্করের বাড়ির লোকজন দাবি করছেন, গত রবিবার দুপুরে দীপঙ্করকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাড়ি থেকে নিয়ে যায় গল্ফগ্রিন থানার পুলিশ। দু’জন উর্দিধারী গল্ফ গ্রিন থানার পুলিশ পরিচয়ে দীপঙ্করকে থানায় নিয়ে যান। কিন্তু যুবককে আটক বা গ্রেফতারির কোনও নথি ওঁরা দেখাননি। অভিযোগ, রাত ৯টার সময় দীপঙ্করকে গুরুতর আহত অবস্থায় আজাদগড় মোড়ে থেকে উদ্ধার করা হয়। বাড়ি ফিরে নাকি দীপঙ্কর জানান তাঁর ওপর অকথ্য অত্যাচার করেছে পুলিশ। প্রচণ্ড মারধর করা হয়েছে। এর পরেই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি।
যুবকের পরিবারের দাবি, ব্যথা কমানোর ওষুধ দিয়েও যন্ত্রণা না কমায় বুধবার তাঁকে শিশুমঙ্গল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা করে ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু রাতে ফের অসুস্থবোধ করেন দীপঙ্কর। এরপর তাঁকে এমআর বাঙুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। শুক্রবার ভোরে মৃত্যু হয় তাঁর। পুলিশের মারের চোটেই দীপঙ্করের মৃত্যু হয়েছে এমনটাই অভিযোগ দায়ের করেছেন তাঁর পরিবারের লোকজন।
পুলিশ জানিয়েছে, দীপঙ্করেরা তিন ভাই, এক বোন। দীপঙ্করের বিবাহ-বিচ্ছেদ হয়েছিল। আগে পুদুচেরিতে কাপড়ের দোকানে কাজ করতেন তিনি। পাঁচ বছর আগে ফিরে এখানে কাপড়ের ব্যবসা শুরু করেন। কিন্তু সেটিও বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমানে পারিবারিক স্টেশনারি দোকানে বসতেন দীপঙ্কর।
পঞ্চায়েত প্রধানকে বাঁশ দিয়ে বেধড়ক মার, ভর সন্ধেবেলা গলসিতে তুমুল উত্তেজনা
লালবাজার সূত্রে খবর, যুবককে রবিবার ২টোর পর থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। পরিবারের দেওয়া অনেক তথ্যই ভুল বলে দাবি করেছেন তদন্তকারীরা। আরও দাবি দীপঙ্কর নাকি মাদকাসক্ত ছিলেন। আধঘণ্টা পরে দীপঙ্কর-সহ ৫ জনকে ছেড়েও দেওয়া হয়। থানার সেই সিসিটিভি ফুটেজও খতিয়ে দেখছে লালবাজার। দীপঙ্করের শরীরে যে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে তাও নাকি পুরনো বলেই দাবি পুলিশের।