Latest News

মুক্তির পর থাই ফুটবলারদের নতুন যুদ্ধ ‘খ্যাতির বিড়ম্বনা’

দ্য ওয়াল ব্যুরো: জলমগ্ন অন্ধকার গুহায় ১৮ দিন বন্দি থাকার পর সূর্যের আলো দেখেছে ১৩ জন। আপাতত ভর্তি হাসপাতালে। কিন্তু এর মধ্যেই নতুন যুদ্ধের সামনে ‘ওয়াইল্ড বোরস’ ফুটবল দল। বিশ্ব জুড়ে তৈরি হওয়া খ্যাতিকে মোকাবিলা করার যুদ্ধ। যার ইঙ্গিত দিচ্ছেন হাসপাতালের ডাক্তাররাই।

১১ থেকে ১৬ বছরের মধ্যে থাকা এই খুদে ফুটবলাররা ও তাদের ২৫ বছর বয়সী কোচ এই সময় থাইল্যান্ডের হাসপাতালে বিশেষ তত্ত্বাবধানে রয়েছেন। হাসপাতালের তরফে বলা হয়েছে, তাদের অন্তত এক সপ্তাহ চিকিৎসকদের নজরে থাকতে হবে। তারপর আরও এক মাস বাড়িতে বিশ্রাম নিতে হবে। তবেই তারা পুরোনো স্বাস্থ্য ফিরে পাবে। তবে শুধুমাত্র স্বাস্থ্য ফিরে পাওয়াই নয়, তাদের মানসিক ভাবে পুরোপুরি সুস্থ করে তোলাই এখন চ্যালেঞ্জ ডাক্তারদের।

কিন্তু ইতিমধ্যেই তো তারা পৃথিবী বিখ্যাত। গোটা বিশ্ব খবর রেখেছে তাদের বেরিয়ে আসার। ফিফা প্রেসিডেন্ট ইনফ্যান্টিনো বিশ্বকাপের ফাইনাল দেখতে যাওয়ার নিমন্ত্রণ করেছেন। মেসি-রোনাল্ডো সহ বিশ্বের সমস্ত দেশের ফুটবলারদের কাছে মিলেছে শুভেচ্ছা। এমনকী তাদের এই দুর্ধর্ষ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সিনেমা বানানোর জন্য ইতিমধ্যেই ঝাঁপিয়েছে হলিউড। কিন্তু এই জগতজোড়া খ্যাতি যে তাদের জন্য হিতে বিপরীত হতে পারে, তেমনটাই মনে করছেন চিকিৎসক থেকে শুরু করে মনোবিদরা।

লন্ডনের কিংস কলেজের বিখ্যাত মনোবিদ ডক্টর অ্যান্ড্রিয়া ডেনিস মনে করেন, এই সময় ছেলেরা যত তাড়াতাড়ি স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারবে তত তাদের জন্য মঙ্গল। কারণ গুহার মধ্যে বন্দি অবস্থায় যে অভিজ্ঞতা তাদের হয়েছে তা যদি তাড়াতাড়ি মুছে না যায় তাহলে পরবর্তী কালে তাদের মানসিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। কিন্তু যত বেশি তাদের খ্যাতি হবে, তত বেশি করে সেই ঘটনাগুলো তাদের মনে ফিরে ফিরে আসবে। এতে আখেরে ক্ষতিই হবে তাদের।

তাহলে উপায়? ডক্টর ডেনিসের মতে, এই সময়ে যত তাদের বাইরের লোকের কাছ থেকে দূরে রাখা হবে তত ভালো। কারণ বাইরের লোকের সঙ্গে কথা বললেই উঠবে সেই প্রসঙ্গ। আর তাহলেই সেই স্মৃতি ফিরে ফিরে আসবে। গবেষণা বলছে, এই ফুটবলারদের মধ্যে প্রায় ২০ শতাংশ ছেলেদের পরবর্তীকালে অবসাদ, উদ্বেগের মতো মানসিক সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা আছে। আর তাই তাদের প্রতি অতিরিক্ত যত্ন নেওয়া দরকার।

ইতিমধ্যেই থাইল্যান্ডের হাসপাতালের তরফে সেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। বাইরের লোক, মিডিয়া কাউকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না ভেতরে। পরিবারের লোকেরাও এই মুহূর্তে দেখা করতে পারছেন না। ডাক্তার ও নার্সরা তাদের সঙ্গে হাসি-গল্প করে তাদের স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছেন। সেই একই পরামর্শ তাঁরা দিয়েছেন বাড়ির লোকেদেরও। খ্যাতিকে মোকাবিলা করার যুদ্ধে বাড়ির লোকেরাই যে হতে চলেছেন তাদের প্রধান অস্ত্র।

You might also like