
নেপাল ও ভারত সীমান্তের তিনটি বিতর্কিত এলাকা লিম্পিয়াধুরা, লিপুলেখ ও কালাপানিকে নিজেদের দেশের অন্তভুর্ক দেখিয়ে গত সপ্তাহেই নতুন মানচিত্র সামনে এনেছে নেপাল। সে দেশের প্রধানমন্ত্রী কে পি ওলি বলেছেন, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার অনুমতি নিয়েই এই নতুন মানচিত্র প্রকাশ করা হয়েছে। তাকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য সংবিধানেও প্রয়োজনীয় সংশোধন করা হবে। কোনওভাবেই ওই তিন এলাকার দখল ছেড়ে দেবে না নেপাল। বরং নিজেদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেই ছাড়বে।
কিছুদিন আগেই কৈলাস-মানস সরোবর সংযোগকারী রাস্তার উদ্বোধন নিয়ে দুই দেশের মধ্যে ঝামেলা শুরু হয়। নেপাল দাবি করে, তাওয়াঘাট থেকে চিন সীমান্তের লিপুলেখ পাস পর্যন্ত ৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়ক তাদের সীমান্তের মধ্যে পড়ে। ওই এলাকায় তীর্থযাত্রী ও ব্যবসায়ীদের জন্য নয়া রাস্তার উদ্বোধন করে ভারত দুই দেশের সীমান্ত-চুক্তি লঙ্ঘন করেছে। অন্যদিকে ভারতের বিদেশমন্ত্রকের তরফেও জানানো হয়, নয়া সড়কের পুরোটাই ভারতের সীমান্তের মধ্যে দিয়ে গেছে। কাজেই সীমান্ত-চুক্তির লঙ্ঘন হয়নি কোনওভাবেই।
আরও পড়ুন: পরীক্ষা ছাড়াই বেআইনিভাবে ভারত থেকে লোক ঢুকছে নেপালে, বয়ে আনছে করোনা সংক্রমণ, ফের তোপ দাগলেন ওলি
এরপরেই দুই দেশের সীমান্তে বিতর্কিত ওই তিন এলাকা লিম্পিয়াধুরা, লিপুলেখ ও কালাপানিকে নিজেদের ভূখণ্ডের অধীনে দেখিয়ে নয়া মানচিত্র সামনে আনে নেপাল। যার কারণে পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়ে ওঠে।
ভারত এবং নেপালের মধ্যে ১৮০০ কিলোমিটার দীর্ঘ মুক্ত সীমান্ত রয়েছে। কাটমাণ্ডুর দাবি, ১৮১৬-র ব্রিটিশ সঙ্গে স্বাক্ষরিত ১৮১৬ সালের সুগৌলি চুক্তি অনুযায়ী, ওই তিন এলাকা-সহ মহাকালী নদীর পূর্ব তীরে অবস্থিত বাকি এলাকাও তাদের। লিপুলেখ ও ঝিংসাং চুলি— এই দু’টি এলাকায় নেপাল চিন এবং ভারতের সীমান্ত মিলেছে। এর মধ্যে পশ্চিম নেপালের লিপুলেখ নিয়ে নেপালের অস্বস্তি রয়েছে। সেখানকার কালাপানি এলাকাকে ভারত ও নেপাল দু’দেশই নিজেদের বলে দাবি করে। নেপালের দাবি, এই এলাকা তাদের দেশের ধারচুলা জেলার মধ্যে পড়ে, অন্যদিকে ভারতের পাল্টা দাবি কালাপানি উত্তরাখণ্ডের পিথোরগড় জেলার অন্তর্গত।
নয়া মানচিত্র নিয়ে নেপালের দাবি খারিজ করেছে ভারত। জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, নেপাল একতরফা ভাবে ইতিহাসের তথ্যপ্রমাণের পরিপন্থী এই মানচিত্র বানিয়েছে, যা দ্বিপাক্ষিক বোঝাপড়ার বিরোধী।