
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বুধবার সাধারণ বাজেট ঘোষণার পরে গৌতম আদানি (Adani Groups) তাঁদের ২০ হাজার কোটি টাকার ফলো অন পাবলিক (20k crore FPO) প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছিলেন। বলেছিলেন, বিনিয়োগকারীদের টাকা তাঁরা ফিরিয়ে দেবেন। কিন্তু সেই ঘোষণাও রক্তক্ষরণ বন্ধ করতে পারল না। একদিকে সংসদে আদানি বিতর্ক নিয়ে সরকারকে চেপে ধরে সন্দেহের মেঘ আরও ঘনীভূত করে দিতে চাইলেন। অন্যদিকে বৃহস্পতিবারও আদানি এন্টারপ্রাইজ, আদানি পোর্টসের মতো শেয়ারে বড় পতন (Share crashed) দেখা গেল। সব মিলিয়ে শেয়ার বাজারে আদানির মার্কেট ক্যাপ কমে গিয়েছে ১০০ বিলিয়ন ডলার (100 billion Dollar) তথা প্রায় ৮৩ হাজার কোটি টাকা।
বৃহস্পতিবার বাজার খোলার পরই আদানির ফ্ল্যাগশিপ কোম্পানি আদানি এন্টারপ্রাইজের শেয়ার মূল্য ১০ শতাংশ পড়ে যায়। একই ১০ শতাংশ করে শেয়ারের দাম পড়ে যায় কোম্পানির বাকি সংস্থাগুলির। সেগুলি হল আদানি পোর্টস অ্যান্ড স্পেশাল ইকোনমিক জোন, আদানি গ্রিন এনার্জি, আদানি টোটাল গ্যাস ও আদানি ট্রান্সমিশন। আদানি পাওয়ার এবং আদানি উইলমারের শেয়ারে পতন ঘটেছে ৫ শতাংশ করে।
গৌতম আদানি ছিলেন স্কুলছুট। কিন্তু গুজরাতি পরিবারের অনেকের যেমন রক্তে ব্যবসা থাকে, আদানির যেন ছিল তেমনই। প্রথমে কিছুদিন মুম্বইতে হিরে শিল্পে কাজ করার পর দাদার সঙ্গে টেক্সটাইল ব্যবসায় নেমেছিলেন। তার পর আমদানি ব্যবসা। নয়ের দশকের শেষ থেকে শ্রীবৃদ্ধি শুরু হয়ে গিয়েছিল তাঁর। কিন্তু কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদী জমানায় গত আট বছরে আদানি শিল্পগোষ্ঠীর বৃদ্ধি হয়েছে ধূমকেতুর মতো, এতটাই যে দেশের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি মুকেশ আম্বানিকে ছাড়িয়ে অনেক এগিয়ে গিয়েছিলেন গৌতম আদানি। বিশ্বের তৃতীয় ধনকুবের হয়ে গিয়েছিলেন ৫৭ বছর বয়সি এই শিল্পপতি। কিন্তু শেয়ার বাজারে আদানি গোষ্ঠীর শেয়ার মূল্যে ধস নামার পর এখন ১৬ নম্বর স্থানে চলে গিয়েছেন গৌতম আদানি।
ক’দিন আগে মার্কিন সংস্থা হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ দীর্ঘ রিপোর্ট দিয়ে দাবি করেছে, আদানিদের ব্যবসায় অনেক অনিয়ম ও জালিয়াতি রয়েছে। করের স্বর্গরাজ্য তথা ট্যাক্স হেভেন বলে পরিচিত বিভিন্ন দ্বীপরাষ্ট্র থেকে বিনিয়োগ এনে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে মূল্যায়ন করা হয়েছে। বর্তমান লিস্টেড কোম্পানিগুলো থেকেই সেই টাকা কর ফাঁকি পাঠানো হয়েছিল শেল কোম্পানিগুলোতে। এর পর থেকেই শেয়ার বাজারে আদানি শিল্পগোষ্ঠীর বিভিন্ন শেয়ারে মহাপতন শুরু হয়ে গিয়েছে।
শেয়ার বাজারে আদানির এই বিপর্যয় কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদী সরকার তথা বিজেপিকে বেশ চাপে ফেলে দিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, আদানির উত্থানকে অনেকেই নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে জুড়ে দেখেন। তাঁদের মতে, বিজেপির বর্তমান নেতৃত্বই আদানিকে বাড়বৃদ্ধির সুযোগ করে দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার গৌতম আদানির নাম না নিলেও পরিস্থিতির সুযোগ নিতে ছাড়েননি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, গতকাল তো সরকার পড়েই যাচ্ছিল। কারণ শেয়ার বাজারে ধস নেমেছিল। তার পর একে তাকে ধরে, বিশ-তিরিশ হাজার কোটি টাকা করে শেয়ার কিনিয়ে কোনওভাবে মুখ বাঁচিয়েছে। এঁরা দেশটাকেই এবার বেচে দেবে।
মমতার প্রকল্পে টাকা দিলেন নির্মলা, বাজেটে কলকাতার দুই মেট্রো পেল আড়াই হাজার কোটি