
২০১৫ সালে পূর্ব মেদিনীপুরের চণ্ডীপুরে সভা করতে গিয়েছিলেন অভিষেক। বক্তৃতা করার সময়েই এক যুবক মঞ্চে উঠে চড় মেরে দেন তখন সদ্য সাংসদ হওয়া অভিষেককে। ২০২১ সালের কাঁথি সফরের আগে কনিষ্ক পাণ্ডা নামে এক স্থানীয় নেতা সেই যুবক দেবাশিস জানাকে নিয়ে একটি ভিডিও তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন। সেখানে তিনি বলেন, “কী ভাইপো, চেনা যাচ্ছে? শুধরে যাও!”
এদিন তাঁকে নিশানা করতে গিয়ে অভিষেক বলেন, “একজন আবার ফেসবুকে পোস্ট করে আমায় ভয় দেখাতে চাইছে। তোর বাপকে গিয়ে বল, তার বাড়ির পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে দাঁড়িয়ে আছি। কী করবি কর। হিম্মত আছে? চার আনার নকুল দানা তার আবার ক্যাশমেমো!”
সম্প্রতি কুলতলির সভা থেকেও শুভেন্দুর উদ্দেশে তুই তোকারি করে আক্রমণ শানিয়েছিলেন অভিষেক। তারপর তমলুক থেকে শুভেন্দু বলেছিলেন, “আমি ওর থেকে ১৮ বছরের বড়। আমায় তুই-তোকারি করছে! ভাষা শুনেছেন!” সেইসঙ্গে শুভেন্দু এও বলেছিলেন, “ঝাঁড়ে তো একই বাঁশ হবে। ওর আদরনীয়া মোদীজিকে তুই তোকারি করেন।”
এদিন সেই প্রসঙ্গ তুলে অভিষেক বলেন, “আবার বলছে আমার থেকে ১৮ বছরের বড়, আমি কেন তুই-তোকারি করেছি। আমি কাউকে তুই-তোকারি করি না। কিন্তু বেইমানদের তুই তোকারিই করব।”
এদিনও সুদীপ্ত সেনের চিঠির প্রসঙ্গ তোলেন অভিষেক। তাঁর কথায়, সুদীপ্ত সেন চিঠিতে লিখেছেন, শুভেন্দু অধিকারী এক ব্যক্তির সঙ্গে সারদার ভাইস প্রেসিডেন্ট সোমনাথ দত্তর পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন। তিনিই টাকা নিতেন।
যুব তৃণমূল সভাপতি এও বলেন, “যাঁরা সারদায় টাকা রেখে সর্বসান্ত হয়েছেন তাঁরা ইডি-সিবিআইয়ের উপর ভরসা করবেন না। টাকা ফেরত পেতে আগামী দিন এই গদ্দারদের বাড়ি ঘেরাও করতে হবে।”
আবার তাঁর বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগের জবাব দিতে গিয়ে অভিষেক বলেন, এখন বলছে আমার স্ত্রী সোনা চুরি করে আনছিলেন। আরে তোর সিআইএসএফ কি নাকে নস্যি দিয়ে ঘুমোচ্ছিল? সিসিটিভি ফুটেজ দেখাতে পারবি?
শুভেন্দু যেমন মেদিনীপুরের কথা বলতে গিয়ে বারবার দেশপ্রাণ বীরেন্দ্রনাথ শাসমল, সুশীল ধারা, সতীশ সামন্ত, ক্ষুদিরাম বসু, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, মাতঙ্গিনী হাজরার নাম বলেন, এদিন অভিষেকের বক্তৃতাতেও সেই নামগুলি বারবার ঘুরে ফিরে এল। তাঁর কথায়, “যারা বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভেঙেছিল, এই বিশ্বাসঘাতক তাদের পা ধরে প্রণাম করছে।” আগামী দু’মাসে আরও ৫০ বার মেদিনীপুরে সভা করতে যাবেন বলেও হুঁশিয়ারি দিতে চেয়েছেন যুব তৃণমূল সভাপতি।
এমনিতে এসব বক্তৃতা নিয়ে শুভেন্দু অধিকারী সংবাদমাধ্যমে প্রতিক্রিয়া দেন না। পরবর্তী জনসভায় ধরে ধরে জবাব দেন। এখন দেখার কবে শুভেন্দু কাঁথির আক্রমণের পাল্টা কী বলেন।