
দ্য ওয়াল ব্যুরো, জলপাইগুড়ি: একসময় ডাকাতরা, ডাকাতি করতে যাওয়ার আগে চিঠি পাঠাত। তার পরেরদিন ‘হা রে রে…’ আওয়াজ তুলে হানা দিত গ্রামের কোনও বড়লোকের বাড়িতে! গ্রাম বাংলায় বহুল প্রচলিত রয়েছে এইসব গল্প। সম্প্রতি জলপাইগুড়িতে (Jalpaiguri) ফিরে এল সেই গল্প। তবে আধুনিক চোরেরা চুরি (Theft) করার পর বাড়ির মালিককে হাতে লেখা চিঠি পাঠাচ্ছে। তাতে চাওয়া হয়েছে লাখ-লাখ টাকা দাবি করা হয়েছে। দাবি না মানলে বিপদের হুমকি দেওয়া হয়েছে।
বেশ কয়েকদিন ধরে এমনই এক চোরেদের উপদ্রবে অতিষ্ট হয়ে উঠেছিল জলপাইগুড়ি রাজবাড়ি পাড়া, ওয়াকার গঞ্জ, টোপামারি প্রভৃতি এলাকা। এ চোর যে সে চোর নয়। ঘটি, বাটি, টাকা পয়সা, সোনাদানা চুরির দিকে মন ছিল না তাদের, এদের নজর ছিল বাড়ির দলিল, কিংবা জন্মের শংসাপত্র, ভোটার কার্ড জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ দলিল! ভাবছেন এ আবার কেমন চোর? আসলে চোরেদের উদ্দেশ্য ছিল গুরুত্বপূর্ণ নথির বিনিময়ে ব্ল্যাকমেল করে টাকা তোলা।
সেই চক্রের পর্দা ফাঁস করল জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার সাদা পোশাকের পুলিশ। ইতিমধ্যেই চোরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, গত কয়েকদিন এমন চোরের উপদ্রব বাড়ছিল।
চুরি যাচ্ছিল বাড়ির দলিল থেকে আধার-প্যানের মতো গুরুত্বপূর্ণ নথি। পরের দিন কেউ বা কারা এসে বাড়ির কাছে রেখে যাচ্ছিল হাতে লেখা একটি চিঠি। তাতে, সেই চুরি যাওয়া নথির বিনিময়ে কারওর কাছে ১ লাখ, তো কারওর কাছে ২ লাখ টাকা দাবি করা হত।
এই ঘটনা নজরে আসতেই নড়েচড়ে বসে কোতোয়ালি থানার পুলিশ। দায়িত্ব পেয়ে টিম গঠন করে তদন্তে নামেন জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার টাউন বাবু অরিজিৎ কুণ্ডু। তিনি বলেন, “তদন্তে নেমে আমরা জানতে পারি নির্দিষ্ট একজন টোটো চালকের মাধ্যমে প্রতিটি বাড়িতে চিঠি পাঠানো হয়েছে। প্রথমে আমরা তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে চোরের নাম জানতে পারি। এরপর আমরা অভিযান চালিয়ে সুদীপ রায় নামে যুবককে গ্রেফতার করি। এরপর তাকে জেরা করলে সব স্বীকার করে সুদীপ। খুব প্ল্যান মাফিক ঠান্ডা মাথায় এই কাজ করেছে।”
ঘটনায় জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার আইসি অর্ঘ্য সরকার জানান, “সুদীপ একজন দাগী চোর। তার বিরুদ্ধে প্রচুর অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি এই অভিনব কায়দায় চুরি করা শুরু করেছিল। আমাদের টিম তাকে গ্রেফতার করেছে।”
মানিক প্রাথমিক প্রশিক্ষণেও ২১ কোটি টাকা তুলেছিল, সিজিও থেকে বেরিয়ে বললেন তাপস