
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ১৯ শতকের ইতিহাসের একটি বিরল নিদর্শন ছিল পাথরে খোদাই করা শিবমূর্তিটি। আজ থেকে ২২ বছর আগে রাজস্থানের একটি মন্দির থেকে চুরি হয়েছিল সেটি। শুধু চুরি নয়, হাত ঘুরতে ঘুরতে তা পাচার হয়ে গেছিল সুদূর ব্রিটেনে! শেষমেশ আজ এ দেশে ফিরছে মূর্তিটি। দেশের সম্পদ ফিরিয়ে এনে তুলে দেওয়া হবে ‘আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া’র (এএসআই) হাতে।
ইতিহাসবিদরা জানিয়েছেন, পাথরের মূর্তিটি শিবের নটরাজ রূপের মতো করে বানানো। জটামুকুট এবং ত্রিনেত্র সহযোগে ‘চতুর’ ভঙ্গিতে রয়েছেন নটরাজ। মূর্তিটির উচ্চতা চার ফুট। নটরাজের সাধারণত যে যে ভঙ্গিমা দেখা যায়, তার মধ্যে এই চতুর ভঙ্গি একেবারেই বিরল।
জানা গেছে, ১৯৯৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে রাজস্থানের বারোলির ঘাটেশ্বর মন্দির থেকে চুরি যায় মূর্তিটি। অনেক খোঁজ করেও মেলেনি কোনও সূত্র। তদন্তকারীরা জানান, দেশ থেকে বাইরে পাচার করে দেওয়া হয়েছে অমূল্য মূর্তিটি। অবশেষে ২০০৩ সালে সামনে আসে, মূর্তিটি ব্রিটেনে পাচার হয়ে গেছে! কিন্তু সেখানে ঠিক কোথায়, কীভাবে রয়েছে, তা নিয়ে নিশ্চিত কিছু আর জানা যায়নি।
HCI with support of HM Government repatriates to Archeological Survey of India, the 10th Century idol of Lord Shiva – 'Natesh', stolen in 1998 from Ghateshwar Temple, Baroli, Rajasthan. #IndiaUK @TheNehruCentre @DCMS @ASIGoI @authoramish @MEAIndia pic.twitter.com/vr6N770k47
— India in the UK (@HCI_London) July 29, 2020
ব্রিটেনের হাইকমিশনার বলেন, “আমরা একটা পুরনো মূর্তির খবর পেয়েই খতিয়ে অনুসন্ধান করতে শুরু করি। জানতে পারি, মূর্তিটি যার কাছে আছে তিনি লন্ডনের একটি অ্যান্টিকের দোকান থেকে সংগ্রহ করেছেন। তখনও অবশ্য প্রমাণ মেলেনি যে এটিই ভারতের সেই খোয়া যাওয়া মূর্তি। তবে ২০০৫ সালে মূর্তির মালিক নিজেই এসে হাইকমিশনে ফেরত দিয়ে দেন মূর্তিটি। এর পরে ২০১৭ সালের অগস্ট মাসে এএসআই-এর একটি বিশেষজ্ঞ দলের চোখে পড়ে মূর্তিটি। তাঁরা ভাল করে অনুসন্ধান করতে শুরু করেন। পরে নিশ্চিত করেন, ১৯৯৮ সালে রাজস্থানের মন্দির থেকে চুরি যাওয়া মূর্তিটিই এই মূর্তি।”
এর পরে বিস্তর মেল-চালাচালি হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের হস্তক্ষেপে সমস্ত প্রোটোকল মেনে, পর্যাপ্ত তদন্ত অনুসন্ধান শেষ হলে মূর্তিটি দেশে ফেরানোর ব্যবস্থা হয়।
তবে এই প্রথম নয়, এর আগেও ভারত থেকে পাচার হয়ে যাওয়া বহু ঐতিহাসিক নিদর্শন এভাবেই দেশে ফেরানো হয়েছে। ২০১৭ সালেই ফিরেছিল প্রাচীন যুগের ব্রহ্মা-ব্রহ্মানির ভাস্কর্য। ২০১৮ সালে ফিরেছিল ভগবান বুদ্ধের ব্রোঞ্জের মূর্তি, যা দ্বাদশ শতকে তৈরি হয়েছিল। বর্তমানে সবই এএসআই-এর অধীনে সংরক্ষিত। পাথরের শিবমূর্তিটিও আজ হাতে পাওয়ার পরে যথাযথ উপায় সংরক্ষণ করবে তারা।