
দ্য ওয়াল ব্যুরো : রেললাইনের ধারে পথের পাশে মায়ের সঙ্গে থাকতেন বছর পঁয়তাল্লিশের যুবক। তাঁদের না ছিল কোনও আশ্রয়, না কোনও কাজকর্ম। চেয়েচিন্তে কোনওরকমে দিন গুজরান হত তাঁদের। কিছু দিন যাবৎ অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন যুবক। চিকিৎসা করার মতো সঙ্গতিও ছিল না। শীতের রাতে পথের পাশে দাঁড় করিয়ে রাখা টোটোর মধ্যে মরে পড়ে রইলেন সেই যুবক। জলপাইগুড়ি শহরের দুই নম্বর ঘুমটি সংলগ্ন এলাকার ঘটনা। বিনা চিকিৎসায় ওই যুবকের মৃত্যু হয়েছে বলে অনুমান এলাকাবাসীর। এই অবস্থায় প্রশাসনের তরফে বৃদ্ধা মায়ের পাশে দাঁড়ানো উচিত বলে মনে করছেন সকলে।
মৃত যুবকের নাম হাসমুখ। মঙ্গলবার সকালে একটি টোটোরিকশার মধ্যে হাসমুখকে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সহায়-সম্বলহীন মা-ছেলে এখানে থাকতেন। তাঁদের আত্মীয়স্বজন বলতে সম্ভবত তেমন কেউ নেই। ভাল করে খেতে পেতেন না তাঁরা। তার ওপর অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। চিকিৎসা না হওয়ায় ক্রমে অবস্থার অবনতি হচ্ছিল। অথচ তাঁদের সাহায্যে কেউ এগিয়ে আসেননি। এলাকাবাসীর অনুমান, সম্ভবত শীতের হাত থেকে বাঁচতে রাতের বেলা পথের পাশে দাঁড় করিয়ে রাখা টোটোয় উঠে ঘুমিয়েছিলেন হাসমুখ। সকালে বৃদ্ধা মা দেখেন ছেলে মরে পড়ে আছে।
স্থানীয় বাসিন্দা শ্যামল রায় জানান, মায়ের সঙ্গেই থাকতে দেখেছেন ওই যুবককে। তিনি কয়েক দিন ধরে অসুস্থও ছিলেন। কিন্তু হতদরিদ্র মা চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে পারেননি। সম্ভবত স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে খবর দেওয়া হয়েছিল। তা সত্ত্বেও কেউ তাঁর চিকিৎসার জন্য এগিয়ে আসেননি। তাই একরকম বিনা চিকিৎসায় মারা গেলেন হাসমুখ। অতীন চৌধুরী নামে আর এক বাসিন্দা জানান, জনসমক্ষে একজন মানুষের এভাবে মরে যাওয়া সত্যিই দুঃখজনক। সম্ভবত স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ সঠিকভাবে করা যায়নি। এদিন প্রায় কয়েক ঘণ্টা হাসমুখের মৃতদেহ পড়েছিল টোটোতে। পরে পুলিশ এসে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যায়।