
চিনের উহান শহরকেই করোনাভাইরাসের আঁতুরঘর বলে চিহ্নিত করা হয়েছে মহামারী ছড়ানোর পরে। মনে করা হয়েছে, সেখানকার সি ফুড বাজার থেকেই ছড়িয়েছে এই ভাইরাস। করোনাভাইরাসের নভেল টাইপটি পশুপাখির জন্য মৃত্যুভয়ের কারণ না হলেও, তা মানুষের শরীরের জন্য বিপজ্জনক ও সংক্রামক। ঘাতক নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা যেতে শুরু করেছে মানুষ। শুধু চিনেই মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে তিন হাজার। কোনও ভাবেই নির্মূল করা যাচ্ছে না প্রাণঘাতী এই জীবাণুকে। এই অবস্থায় অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটালেন ১০০ বছরের ওই বৃদ্ধ।
চিনের সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, গত মাসেই পরিবারের লোকদের নিয়ে নিজের ১০০ বছরের জন্মদিন পালন করেছিলেন উহানের ওই বাসিন্দা। তার পরেই আচমকা অসুস্থ হয়ে পড়েন। শারীরিক পরিস্থিতির ক্রমশ অবনতি হওয়ায় গত ২৪ ফেব্রুয়ারি পরিবারের লোকেরা তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরীক্ষা করার পর তাঁর শরীরে করোনাভাইরাসের হদিস মেলে।
সঙ্গে সঙ্গে আইসোলেশনে পাঠিয়ে চিকিৎসা শুরু হয় তাঁর। তিনি অ্যালঝাইমার্স, হাইপার টেনশন ও হৃদরোগেও আক্রান্ত ছিলেন আগে থেকেই। ফলে করোনাভাইরাসের মারাত্মক সংক্রমণ থেকে বেঁচে ফেরা খুব একটা সহজ ছিল না। তবু চেষ্টা চালিয়ে যান চিনের চিকিৎসকরা। সংক্রমণরোধী ওষুধ, থেরাপি সব চলতে থাকে। অবশেষে সপ্তাহ দুয়েকের মাথায় সুস্থ হয়ে উঠেছেন ওই বৃদ্ধ। গত শনিবার আরও ৮০ জন মানুষের সঙ্গে তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
পৃথিবীজুড়ে যখন করোনাভাইরাস একের পর এক মৃত্যুর খবর বয়ে আনছে, তখন ১০০ বছরের একজন মানুষের সেই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পরেও সুস্থ হয়ে ফিরে আসার কাহিনি রীতিমতো বিস্ময়জনক। খোদ চিকিৎসকরাও যেন বিশ্বাস করতে পারছেন না এমনটা ঘটার কথা। এর আগে এত বয়স্ক কোনও মানুষ করোনাভাইরাস সংক্রমণের পরেও জীবনে ফেরেননি।
তাই ব্যতিক্রমী এই সুস্থতার উদাহরণ করোনা-আতঙ্কে আচ্ছন্ন এই পরিস্থিতিতে আশার আলো হয়ে উঠেছে সকলের কাছে।