Latest News

জল আনতে রোজ ১৪ কিলোমিটার পথ পাড়ি ১০ বছরের ছেলের, খরার রূপ দেখে শিউরে উঠছেন নেটিজেনরা

দ্য ওয়াল ব্যুরো: সারা দেশে জলের জন্য বিপুল হাহাকার। খুব তাড়াতাড়িই দেশের একাধিক শহর জলশূন্য হয়ে যাবে বলে জানিয়েছে খোদ সুপ্রিম কোর্ট। এ বছরের গ্রীষ্ম শুরুর আগে থেকেই বারবার উঠে এসেছে মহারাষ্ট্রের নাম। সে রাজ্যই এখন সব চেয়ে বেশি ভুগছে জলকষ্টে। সোশ্যাল মিডিয়ায় বারবার ভাইরাল হয়েছে ফুটিফাটা চাষজমির ছবি।

এই অবস্থায় আরও খারাপ পরিস্থিতিতে রয়েছে মহারাষ্ট্রের মারাঠওয়াড়া, মুকুন্দওয়াড়ির মতো প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলি। জল সঙ্কট সেখানে তীব্রতর। সেখানে বাইরে থেকে কোনও জল আসে না। আশপাশের জলের উৎসগুলি যে শুকিয়ে গেছে, তা বলাই বাহুল্য। ফলে ওই গ্রামের লোকেদের দূর–দূরান্ত থেকে জল আনতে হয়। শুধু বড়রাই নয়, ছোটরাও এই কাজে সামিল।

সম্প্রতি তেমনই এক ছোট বয়সের ছেলের কথা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। আর তা দেখার পরেই যেন মহারাষ্ট্রের জলকষ্টের তীব্রতা আরও বেশি করে পৌঁছেছে অনেকের মধ্যে।

জানা গেছে, ১০ বছরের ছেলে সিদ্ধার্থ ধাগে ট্রেনে করে রোজ পাড়ি দেয় ঔরঙ্গাবাদ। সঙ্গে তার জলের দু’টো বড় ক্যান। জলকষ্টে কাতর পরিবারের জন্য জল আনতে, এটাই রোজকার রুটিন তার। পড়াশোনা বা খেলাধুলো শূন্যে উধাও। সিদ্ধার্থ রোজ দুপুরে পায়ে হেঁটে চলে আসে মুকুন্দওয়াড়ি রেল স্টেশনে। সেখান থেকে ট্রেনে করে সোজা ঔরঙ্গাবাদ। স্টেশন থেকে জল নিয়ে বাড়ি ফিরতে ফিরতে সন্ধে ৬টা। যাওয়া–আসা নিয়ে সব মিলিয়ে ১৪ কিলোমিটার।

তার উপরে, প্রায়ই সঠিক সময়ে ট্রেন আসে না। ফলে মুকুন্দওয়াড়ি স্টেশনে গাছের তলায় বসে থেকে অপেক্ষা করতে হয় সিদ্ধার্থকে। অবশ্য সিদ্ধার্থ একা নয়। তার মতোই দেখা যায় ১২ বছরের ছোট্ট মেয়ে আয়েশা কিংবা সিদ্ধার্থর ছোট বোন ৯ বছরের সাক্ষীকেও। তারাও একই কাজ করে চলেছে।


শুধু তা-ই নয়। টিকিট ছাড়াই ট্রেনে উঠে পড়ে তারা। যে কোনও কামরায়। ফলে নিত্যযাত্রীরা বিরক্ত হয় রোজ। রোজ রোজ ভেতরে ঢুকতেও দেওয়া হয় না তাদের। ফলে ট্রেনের দরজার সামনে কোনও মতে বসে থাকে সিদ্ধার্থরা। তার পরে আবার জল নিয়ে ছোট্ট কাঁধে চাপিয়ে, ফের ট্রেনে উঠে পড়ে। মুকুন্দওয়াড়ি পৌঁছে, দীর্ঘ পথ হেঁটে, সন্ধের মুখে বাড়ি ফেরা।

দু’বেলা পেটের ভাত জোটাতে ব্যস্ত মা–বাবারা। ছেলেমেয়েরা ব্যস্ত জল আনতে। জানা গিয়েছে, মুকুন্দওয়াড়িতে সিদ্ধার্থদের গ্রামে ৩০০ পরিবারের বাস। কিন্তু সেখানে জলের কোনও ব্যবস্থাই নেই। গ্রামের আশপাশে যেটুকু ছিল, তা শুকিয়ে গেছে গ্রীষ্মে। তাই বাধ্য হয়েই অত দূর পাড়ি দিতে হয় সে গ্রামের ছোট ছেলে–মেয়েদের।

তবে সিদ্ধার্থের কথা সামনে এলেও, এই জল-যুদ্ধের খুদে সৈনিক কিন্তু সে একা নয়। মহারাষ্ট্রের একাধিক গ্রামের ঘরে-ঘরে এমনই গল্প শুনতে পাওয়া যাবে। জানতে পারা যাবে, শুধু মাটি-পুকুর-গাছই নয়, কী ভাবে শৈশব-কৈশোরের মুহূর্তরাও রোজ শুকিয়ে যাচ্ছে তীব্র জলকষ্টে।

আরও পড়ুন-

https://www.four.suk.1wp.in/news-national-54k-mangroves-to-be-razed-for-bullet-train-in-maharashtra/

You might also like